নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলা বিএনপির সমাবেশে দলের বহিষ্কৃত নেতারা বক্তব্য রাখায় নেতাকর্মীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
Advertisement
ঘটনাটি ঘটে রোববার (৬ জুলাই) বিকেলে সেনবাগ থানার মোড়ে উপজেলা ও পৌর বিএনপি আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে। এসময় মঞ্চে বক্তব্য রাখেন চাঁদাবাজির অভিযোগে বহিষ্কৃত উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব সাহেব উদ্দিন রাসেল এবং উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মোহাম্মদ সানাউল্যাহ।
পরদিন সোমবার (৭ জুলাই) বিকেলে সেনবাগ পৌর এলাকায় গেলে এ নিয়ে নেতাকর্মীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যায়।
২০১১ সালের ৬ জুলাই সংসদ ভবন এলাকায় দলীয় কর্মসূচির সময় তৎকালীন বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ ও সেনবাগের সাবেক এমপি জয়নুল আবদিন ফারুকের ওপর হামলা করা হয়। এর প্রতিবাদে সেনবাগে ওই সমাবেশ করা হয়। এতে ডিএমপির সাবেক অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) হারুন অর রশীদ ও সাবেক যুগ্ম কমিশনার (অপারেশন) বিপ্লব কুমার সরকারের গ্রেফতার দাবি করেন নেতাকর্মীরা।
Advertisement
সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক। আর বিশেষ অতিথি ছিলেন, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মাহবুব আলমগীর আলো, যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট এবিএম জাকারিয়া, সদস্য সচিব হারুনুর রশিদ আজাদ। এছাড়া স্থানীয় নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
সেনবাগ বাজারে কথা হয় উপজেলা বিএনপির সিনিয়র এক নেতার সঙ্গে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি জাগো নিউজকে বলেন, সেনবাগে বিএনপি তিনভাগে বিভক্ত। এখানে সাবেক এমপি জয়নুল আবদিন ফারুক, কেন্দ্রীয় নেতা কাজী মফিজ উদ্দিন ও সৌদি আরব প্রবাসী বিএনপি নেতা আবদুল মান্নান আলাদা গ্রুপে নেতাকর্মীদের বিভক্ত করে রেখেছেন। ৫ আগস্টের পর কিছু নেতা চাঁদাবাজি, দখলবাজিতে জড়িয়ে দলের ক্ষতি করছেন।
সেনবাগ উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক মো. ওবায়দুল হক চেয়ারম্যান জাগো নিউজকে বলেন, বহিষ্কৃত নেতাদের দলের কোনো কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করতে কেন্দ্র থেকে নিষেধ করা হয়েছে। কিন্তু সেনবাগে মনে হয় আলাদা বিএনপি। এখানে কেন্দ্রের কোনো নির্দেশনা মানা হয় না। মানলে চাঁদাবাজির দায়ে বহিষ্কৃত নেতারা কীভাবে মঞ্চে বক্তব্য দেন আমার বুঝে আসে না। বিষয়টি আমরা কেন্দ্রকে জানিয়েছি।
এর আগে ৫ জানুয়ারি সেনবাগ উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব সাহেব উদ্দিন রাসেলকে চাঁদাবাজির অডিও কলের ভিত্তিতে দলের সব পর্যায়ের পদ-পদবী থেকে বহিষ্কার করা হয়। এছাড়া শৃঙ্খলা পরিপন্থি কাজে জড়িত থাকার অভিযোগে ২৭ জুন উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মোহাম্মদ সানাউল্যাহকে বহিষ্কার করা হয়। তাদের সঙ্গে দলের কাউকে যোগাযোগ না রাখতে নির্দেশনা দেওয়া হয়।
Advertisement
জানতে চাইলে অভিযুক্ত সাহেব উদ্দিন রাসেল জাগো নিউজকে বলেন, আমার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগের তদন্ত হয়েছে। তবে এখনো বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার হয়নি। দলের কর্মসূচিতে বক্তব্য রেখেছি। বিষয়টি লিখে আমাদের নেতা জয়নুল আবদিন ফারুককে বিব্রত না করার অনুরোধ রইলো।
অন্যদিকে অপর অভিযুক্ত ছাত্রদলের বহিষ্কৃত নেতা মোহাম্মদ সানাউল্যাহকে বার বার ফোন দিয়েও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। মেসেজ দিলেও উত্তর দেননি তিনি।
এছাড়া নোয়াখালী-২ (সেনবাগ-সোনাইমুড়ী) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুককে বার বার কল দিলেও তিনি কোনো সাড়া দেননি।
এ বিষয়ে জেলা বিএনপির সদস্য সচিব হারুনুর রশিদ আজাদ জাগো নিউজকে বলেন, বিষয়টি আমরা আগে থেকে জানতে পারিনি। অনুষ্ঠান শেষে নেতারা আমাদের জানিয়েছেন। দলের কেন্দ্রীয় দপ্তরের নির্দেশনা এভাবে অমান্য করা অনুষ্ঠানের আয়োজকদের উচিত হয়নি। ভবিষ্যতে এসব বিষয়ে আমরা আরও বেশি সতর্ক থাকবো।
ইকবাল হোসেন মজনু/জেডএইচ/এএসএম