শরিয়ত আবশ্যক করেনি এমন নফল কোনো আমল নিজের ওপর আবশ্যক করে নেওয়াকে ‘নজর’ বা মানত বলে। মানত শর্তযুক্ত ও শর্তমুক্ত হতে পারে। কেউ যদি কোনো বৈধ উদ্দেশ্য পূরণের শর্তে কোনো আমল করার প্রতিজ্ঞা করে, তাহলে তা শর্তযুক্ত মানত। যেমন কেউ যদি বলে, ‘আমি চাকরি পেলে দশ রাকাত নফল নামাজ পড়বো বা এক হাজার টাকা দান করবো’ এটি একটি শর্তযুক্ত মানত। এ ছাড়া শর্ত ছাড়া কোনো আমল নিজের ওপর আবশ্যক করে নিলে তাও মানত হিসেবে গণ্য হয়।
Advertisement
ثُمَّ لۡیَقۡضُوۡا تَفَثَهُمۡ وَ لۡیُوۡفُوۡا نُذُوۡرَهُمۡ وَ لۡیَطَّوَّفُوۡا بِالۡبَیۡتِ الۡعَتِیۡقِতারপর তারা যেন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন হয়, তাদের মানতসমূহ পূরণ করে এবং প্রাচীন ঘরের তাওয়াফ করে। (সুরা হজ: ২৯)
আরেক আয়াতে আল্লাহ তার প্রিয় বান্দাদের বর্ণনায় বলেছেন,یُوۡفُوۡنَ بِالنَّذۡرِ وَ یَخَافُوۡنَ یَوۡمًا کَانَ شَرُّهٗ مُسۡتَطِیۡرًا
তারা মানত পূর্ণ করে এবং সেদিনকে ভয় করে যার অকল্যাণ হবে ব্যাপক। (সুরা দাহর: ৭)
Advertisement
মানত পূরণ করা ওয়াবিজ হওয়া বা মানতটি গ্রহণযোগ্য হওয়ার অন্যতম শর্ত হলো, কোনো নেক কাজের মানত করতে হবে, মানতকৃত কাজটি কোনো গুনাহ বা গুনাহের কারণ হতে পারবে না।
তাই কেউ যদি কোনো মাজারে পীরের নামে ছাগল, ভেড়া বা ষাঁড় ইত্যাদি উৎসর্গ করার মানত করে অথবা এমন কোনো মাজারে টাকা দান করার মানত করে যেখানে প্রকাশ্যে কবরে সিজদা, পীরের নামে পশু জবাইসহ শিরকি কাজকর্ম হয়, তাহলে এটি গুনাহের কাজের মানত হওয়ায় তা পূরণ করা ওয়াজিব নয়, বরং ওই মানত পূরণ না করা জরুরি।
মানত একটি ইবাদত যা একমাত্র আল্লাহর নামেই করা যায়। আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো নামে- যেমন পীরের নামে, মাজারের নামে মানত করা শিরকের অন্তর্ভুক্ত। রাসুল (সা.) বলেছেন,مَنْ نَذَرَ أَنْ يُطِيعَ اللهَ فَلْيُطِعْهُ، وَمَنْ نَذَرَ أَنْ يَعْصِيَهُ فَلاَ يَعْصِهِ.
কেউ ভালো কাজের মানত করলে সে যেন তা পূর্ণ করে। আর কেউ গুনাহের মানত করলে সে যেন তা পূর্ণ না করে। (সহিহ বুখারি: ৬৬৯৬)
Advertisement
সুতরাং শিরকি কাজকর্ম হয় এমন কোনো মাজারে টাকা দান করার মানত করলে তা পূরণ করা জরুরি নয়, বরং এ রকম মানত পূরণ করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
ওএফএফ/জেআইএম