জাতীয়

পুলিশের মনোবল ফেরানোই এই সরকারের বড় চ্যালেঞ্জ: মাহমুদুর রহমান

পুলিশের মনোবল ফেরানোই এই সরকারের বড় চ্যালেঞ্জ: মাহমুদুর রহমান

দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক ড. মাহমুদুর রহমান বলেছেন, রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে পুলিশের অধঃপতন হয়েছে। আগামী নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে হলে পুলিশের মনোবল ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা নিতে হবে। এটিই অন্তর্বর্তী সরকারের বড় চ্যালেঞ্জ।

Advertisement

শনিবার (৫ জুলাই) জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে বাংলাদেশ অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা কল্যাণ সমিতির আয়োজিত ‘বাংলাদেশ পুলিশ সংস্কার : প্রেক্ষিত নাগরিক ভাবনা’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে মুখ্য আলোচকের বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ড. মাহমুদুর রহমান বলেন, পুলিশ সংস্কার করতে হলে পুলিশকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত করতে হবে, পুলিশ সদস্যদের বেঁচে থাকার মত সুযোগ-সুবিধা দিতে হবে, পুলিশকে দুর্নীতিমুক্ত করতে হবে, পুলিশের প্রশিক্ষণ আধুনিক ও যুগোপযোগী করতে হবে, র‍্যাব থেকে সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তাদের প্রত্যাহার করতে হবে।

তিনি এ সুপারিশসমূহ বাস্তবায়নের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। একই সঙ্গে পুলিশের অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণের জন্য আলাদা কমিটি গঠনেরও সুপারিশ করেন।

Advertisement

মাহমুদুর রহমান বলেন, শেখ হাসিনার সময় পুলিশে ‘চেইন অব কমান্ড’ ছিল না। জুলাই বিপ্লবের আগে পুলিশ ছিল দানবীয়। আজ পুলিশ মনোবলহীন। একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে হলে পুলিশের মনোবল ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা নিতে হবে। এটিই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বড় চ্যালেঞ্জ।

নিজের রিমান্ডকালীন অবস্থার বর্ণনা দিতে গিয়ে তিনি বলেন, পুলিশ আজ যে ভাবমূর্তি সংকটে পড়েছে এজন্য কি পুলিশ দায়ী? তখন যারা ডিবিতে ছিলেন তারা হয় ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় অথবা অন্যান্য পর্যায়ের নেতা। জুলাই বিপ্লব এজন্য অনিবার্য ছিল। এখন আমাদের টার্গেট হলো আরেকটা ফ্যাসিবাদ যেন আবার ফিরে না আসে সে ব্যবস্থা করা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষক প্রফেসর ড. বোরহান উদ্দিন বলেন, পুলিশকে মিলিটারি ইকুপমেন্ট ব্যবহার থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। এছাড়াও পুলিশের পদোন্নতি, পোস্টিংয়ের জন্য আলাদা আইন থাকা প্রয়োজন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ শরীফুল ইসলাম বলেন, শুধু পুলিশ সংস্কার করলেই হবে না, প্রশাসনেও সংস্কার করতে হবে।

Advertisement

পুলিশ সংস্কার কমিশনের সদস্য জারিফ রহমান বলেন, ঐকমত্য কমিশন থেকে পুলিশ সংস্কারকে বাদ দেওয়া জুলাই আন্দোলনের সঙ্গে এক ধরনের বেঈমানি।

এবি পার্টির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, পুলিশের নিয়োগ ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনতে হবে। পুলিশ সদস্যদের সম্মানজনক বেতন-ভাতাদি দিতে হবে। ঐকমত্য কমিশনে পুলিশ সংস্কার বিষয়ে আলোচনা করা হবে বলে তিনি আশ্বাস দেন।

গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অবসরপ্রাপ্ত ডিআইজি ড. মো. মতিয়ার রহমান। এসময় আরও বক্তব্য রাখেন সংগঠনটির সভাপতি সাবেক ডিআইজি ড. এম. আকবর আলী, সহ-সভাপতি মো. আব্দুর রহমান খান, সাবেক আইজিপি মো. আশরাফুল হুদা। অনুষ্ঠানে বিচারপতি, সরকারি চাকরিজীবী, শিক্ষাবিদ ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা উপস্থিত ছিলেন।

টিটি/এমকেআর