গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের এমসি বাজার সংলগ্ন অংশের ময়লার ভাগাড় যেন বিষ ছড়াচ্ছে চারপাশে। দুর্গন্ধে নাক চেপে চলতে হচ্ছে পথচারী ও যানবাহনের চালকদের। দিনের পর দিন ফেলা ময়লার স্তূপ মহাসড়কের একটি লেন পুরোপুরি দখল করে ফেলেছে। এতে ঘটছে একের পর এক দুর্ঘটনা। দীর্ঘদিনের সমস্যা হলেও কর্তৃপক্ষের কার্যকর উদ্যোগের অভাবে ভুগছেন সাধারণ মানুষ।
Advertisement
জানা যায়, মাওনা গ্রামের এমসি বাজার এলাকায় মহাসড়কের পাশে পাশাপাশি গড়ে উঠেছে কয়েকটি বড় ময়লার ভাগাড়। বাজার, আবাসিক এলাকা ও সামিট পাওয়ার স্টেশন ঘেঁষে যত্রতত্র ফেলা হচ্ছে বর্জ্য। এতে আশপাশের অন্তত ২-৩ কিলোমিটারজুড়ে তীব্র দুর্গন্ধে পরিবেশ বসবাসের অযোগ্য হয়ে উঠেছে।
স্থানীয় বাসিন্দা বিপুল মিয়া বলেন, ‘আপনারা একদিন এখানে থাকলে বুঝতেন আমরা কী যন্ত্রণায় আছি। হেঁটে গেলে বমি আসে, পেটে ভাত যায় না। শিশুরা অসুস্থ হয়ে পড়ে, বৃদ্ধরা শ্বাস নিতে পারে না। মনে হয় এলাকা ছেড়ে পালাতে হবে।’
মনসুর মণ্ডল নামে আরেক বাসিন্দা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘এটা একদিনের সমস্যা নয়। বছরের পর বছর ধরে ময়লা ফেলে ভাগাড় তৈরি হয়েছে। কেউ খোঁজ নেয় না। কেউ শোনে না। কী ভয়ংকর গন্ধ, বলে বোঝানো যাবে না।’
Advertisement
তিনি আরও বলেন, ‘সড়কটির লেন দখল হয়ে যাওয়ায় রিকশা, ভ্যান, মোটরসাইকেলসহ ছোট যানবাহনগুলো চলতে পারছে না। একপাশ বন্ধ, অপর পাশে চলছে দুই লেনের ট্রাফিক। ফলে প্রায়শই দুর্ঘটনা ঘটছে।’
রিকশাচালক আব্দুল কাদির বলেন, ‘ময়লার পাশ দিয়ে যেতে গেলে সিগন্যালে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। কিন্তু গন্ধে দাঁড়িয়ে থাকাও অসম্ভব হয়ে পড়ে। এক লেন পুরোপুরি বন্ধ, ফুটপাত অনেক আগেই শেষ। আমরা কোথায় দিয়ে চলবো?’
পোশাকশ্রমিক সাহেরা খাতুন জানান, ‘ময়লার পাশে হেঁটে যাওয়ার সময় মোটরসাইকেল ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিলে হাতে চোট পেয়েছি। দুর্গন্ধ এমন যে এখনো খাবার মুখে তুলতে পারি না।’
ইমাম পরিবহনের চালক নজরুল ঢালী বলেন, ‘জ্যামে গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকলে যাত্রীরা গন্ধে ছটফট করেন। অথচ এটা প্রতিদিনের দৃশ্য হয়ে গেছে। এই মহাসড়ক দেখার কেউ নেই?’
Advertisement
এ বিষয়ে শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সজীব আহমেদ বলেন, ‘এমন জনদুর্ভোগ কখনোই কাম্য নয়। আমি নিজে বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখছি। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আশা করি, দ্রুত সমাধান হবে।’
আব্দুর রহমান আরমান/এমএন/জেআইএম