খেলাধুলা

টানা দুই টেস্টে ভালো করতে না পারার পেছনে যে সমস্যা দেখছেন হান্নান

টানা দুই টেস্টে ভালো করতে না পারার পেছনে যে সমস্যা দেখছেন হান্নান

মাঝে গত বছর আগস্টে পাকিস্তানের মাটিতে ২ ম্যাচের সিরিজটাই শুধু ব্যতিক্রম। বাকি সব ২ বা ৩ ম্যাচের সিরিজেই দেখা যায় বাংলাদেশের পারফরম্যান্সে ধারাবাহিকতা খুব কম। এক টেস্ট ভালো খেললে পরের টেস্ট খারাপ। না হয় এক টেস্ট খারাপ খেললে তারপরেরটা হয় ভালো। কিন্তু ধারাবাহিকভাবে ২ টেস্টে ভালো খেলার নজির খুব কম টাইগারদের। মাঝে ব্যতিক্রম ছিল কেবল পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডিতে। গত বছর আগস্ট-সেপ্টেম্বরে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে বাংলাদেশ দুটিতেই জিতেছে। একটি ৬ উইকেটে, অন্যটি ১০ উইকেটের ব্যবধানে।

Advertisement

কিন্তু এর বাইরে টিম বাংলাদেশের পরপর দুই টেস্টে ভালো খেলার রেকর্ড নেই বললেই চলে। এবার শ্রীলঙ্কা সফরেও দেখা গেলো সেই পুরোনো চিত্র।

গলে ভালো ব্যাটিং করে উজ্জ্বল ও দ্যুতিময় পারফরম্যান্সে দাপুটে ড্র। প্রথম ইনিংসে শান্ত-মুশফিকের জোড়া সেঞ্চুরি আর লিটন দাসের ৯০+ রানের ওপর ভর করে প্রায় ৫০০ রান (৪৯৫) রান করেছিল বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ইনিংসে ফের শান্তর শতকে ২৮৫ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করে। শ্রীলঙ্কাই ছিল ওই টেস্টে ব্যাকফুটে।

অথচ এমন দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করা বাংলাদেশ কলম্বোয় এসে মুখ থুবড়ে পড়ে। ব্যাটিং ব্যর্থতায় হেরেছে ইনিংস ও ৭৮ রানের বড় ব্যবধানে। প্রথম ইনিংসে ২৪৭ রানের পর দ্বিতীয় ১৩৩’এ অলআউট।

Advertisement

গলে যে নাজমুল হোসেন শান্ত উভয় ইনিংসে সেঞ্চুরিসহ (১৪৮ ও ১২৫) করেছেন ২৭৩, এবার কলম্বোয় তার ব্যাট থেকে এসেছে মাত্র এসেছে মাত্র ২৭ (৮ এবং ১৯)। যে মুশফিক এক ইনিংসে শতরানসহ করেছেন (১৬৩ এবং ৪৯) ২১২ রান, সেই তারই পরের টেস্টে ২ ইনিংসে রান মোটে ৬১ (৩৫ এবং ২৬)। কেন এই ধারাবাহিকতার অভাব? কী কারণে বাংলাদেশ টানা ২ টেস্টে ধারাবাহিকভাবে ভালো খেলতে পারে না? এ প্রশ্ন এখন সবার।

নিজেকে নির্বাচক থেকে সফল কোচ হিসেবে পরিণত করা হান্নান সরকার এ ধারাহিকতায় ঘাটতির একটা কারণ খুঁজে বের করেছেন। আজ শনিবার জাগো নিউজের সাথে আলাপে হান্নান বলেন, ‘হ্যাঁ, এটা সত্য যে সাধারণত আমরা ২ টেস্ট বা পরপর কয়েকটা ম্যাচ ধারাবাহিকভাবে ভালো খেলি না; কিংবা খেলতে পারি না। নিয়মিত আমাদের পারফরম্যান্সের গ্রাফের লেভেল এক থাকে না। হয় প্রথমটায় ভালো করি। না হয় প্রথমটায় খারাপ করে পরেরটা ভালো করি।’

এর কারণ ব্যাখ্যা করে আবাহনীকে ওয়ানডেতে চ্যাম্পিয়ন করে জাতীয় অনূর্ধ্ব-১৭ দলের মেন্টর হিসেবে যোগ দেওয়া হান্নান বলেন, ‘অন্যতম কারণ হলো দেশে কিংবা বিদেশে আমরা যেখানেই খেলি না কেন, আমাদের খেলা পরে দুটি ভিন্ন শহরে, দুটি ভিন্ন মাঠে। ভিন্ন কন্ডিশনে। বাংলাদেশেও মিরপুরে একরকম উইকেট আর চট্টগ্রাম কিংবা সিলেটে অন্যরকম উইকেটে দুটি ম্যাচ খেলি। তাতে করে উইকেট-কন্ডিশনের জন্য আমাদের খেলার ধরনের মধ্যে কিছু চেঞ্জ আসে। সেই কারণে দুই ধরনের উইকেটে তখনই আমাদের পারফরম্যান্স হয় দুইরকম।’

হান্নান যোগ করেন, ‘ধরেন আমরা যাচ্ছি হয়তো নিউজিল্যান্ডে খেলতে। কিন্তু নিউজিল্যান্ডেও একেক শহরে একেকরকম উইকেট হয়। সেখানে বাতাসের ব্যাপার আছে। উইকেটের ব্যাপার আছে। ন্যাচারাল ব্যাপার আছে। কোনো জায়গায় ওপেন মাঠ, কোনো জায়গায় দুইতলা স্টেডিয়াম, কোনো জায়গায় আবার ৫ তলা গ্যালারি। এই বিভিন্ন বিষয়গুলো জড়িত।’

Advertisement

জাতীয় দলের এই সাবেক ওপেনার মনে করেন, বাংলাদেশ এই জায়গাটায় মানিয়ে নিতে পারে না। তার কথা, ‘আমাদের দেশেও মিরপুর আর চিটাগাংয়ের উইকেট দুইরকম। দুই জায়গায় দুইরকমভাবে খেলতে হয়। কিন্তু আমরা সেই অ্যাডজাস্টমেন্টটা করতে পারি না। তাই আমরা ভালো করতে পারি না। আমরা প্রথম টেস্টের জন্য একটা প্রিপারেশন নিয়ে গেছি। তারপর দ্বিতীয় টেস্টের জন্য যে অন্যরকম প্রস্তুতি নেব, সেটা আর নেওয়া হয় না। দুই ধরনের কন্ডিশনের সঙ্গে দ্রুত মানিয়ে নেওয়ার ক্ষমতা আমাদের তুলনামূলক কম।’

এআরবি/এমএমআর/এমএস