এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় বসছে সাড়ে ১২ লাখ পরীক্ষার্থী। কিছুক্ষণের মধ্যেই শুরু হবে এ পরীক্ষা। এতে অংশ নেওয়ার কথা ছিল ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজের ছাত্র ফারহান ফাইয়াজেরও। কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে গত ১৮ জুলাই ধানমন্ডিতে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি চলাকালে পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারান তিনি।
Advertisement
ভাই হারানোর বেদনায় নীল ফারহান ফাইয়াজের বড় বোন সাইমা ফারহান। এইচএসসি পরীক্ষায় আসায় তা আরও বেশি পোড়াচ্ছে তাকে। বুধবার (২৫ জুন) রাতে ফারহান ফাইয়াজকে নিয়ে ফেসবুকে আবেগঘন পোস্ট লিখেছেন তিনি।
ফাইয়াজের বোন সাইমা ফারহান লেখেন, ‘আগামীকাল থেকে শুরু হচ্ছে এইচএসসি পরীক্ষা। যেখানে অনেকেই অংশ নেবে, কিন্তু আমার ভাই আর দিতে পারবে না। ভাইয়া না থাকায় যেন এই পরীক্ষাও একটা শূন্যতা বয়ে আনছে।’
তিনি বলেন, ‘আমার ভাই এইচএসসি শেষে হায়ার এডুকেশনের জন্য যুক্তরাজ্যে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিল। ওর এ দেশে চাকরির জন্য আন্দোলনে যাওয়ার দরকার ছিল না। ও রাজপথে নেমেছিল শুধু তার ভাইবোনদের রক্তক্ষরণ বন্ধ করার জন্য। কিন্তু সেখান থেকেই সে আর ফেরেনি। প্রতিবার মনে পড়লে মনে হয়, কীভাবে একটা কোমল প্রাণকে এভাবে নির্মমভাবে হত্যা করা হলো। বিশ্বাস করতে কষ্ট হয়।’
Advertisement
নিজের ভাইয়ের যত্নবান ও সংবেদনশীল স্বভাবের কথা উল্লেখ করে সাইমা লিখেছেন, ‘ভাইয়া ত্বকের যত্নে খুব সচেতন ছিল। সামান্য রোদেও ছাতা ছাড়া বের হতো না। স্কিনকেয়ার, খাওয়া-দাওয়ার প্রতিটি বিষয়ে ছিল ভীষণ যত্নবান। সেই ভাই, জুলাই বিপ্লবে সবার সামনে থেকে আন্দোলন করছিল। অথচ সেই সাহসী কণ্ঠকে গুলি করে স্তব্ধ করে দিলো স্বৈরাচারী বাহিনী!’
জুলাই বিপ্লবের পরও বৈষম্য-দুর্নীতি দূর না হওয়ায় আক্ষেপ সাইমা ফারহানের। তিনি লেখেন, ‘আজ যখন দেখি, জুলাই বিপ্লবের এ আত্মত্যাগের পরও দেশে বৈষম্য, দুর্নীতি কিংবা অনিয়ম দূর হয়নি, তখন হৃদয় ভেঙে যায়। ভাইয়ের স্বপ্ন ছিল একটি ন্যায়ভিত্তিক রাষ্ট্রের। কিন্তু আজও সেই স্বপ্ন অধরাই রয়ে গেছে।’
এএএইচ/এমআরএম/এএসএম
Advertisement