বরগুনার পাথরঘাটায় দুটি ট্রলার জব্দকে কেন্দ্র করে কোস্টগার্ড সদস্যদের সঙ্গে স্থানীয় জেলেদের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। এতে ১২ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
Advertisement
মঙ্গলবার (১৮ জুন) রাত ১০টার দিকে পাথরঘাটা কোস্টগার্ড জেটি সংলগ্ন ক্যাম্পে এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, সংঘর্ষ চলাকালে কোস্টগার্ডের স্টেশন ঘেরাওয়ের চেষ্টা করেন স্থানীয় জেলেরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোঁড়ে ও লাঠিচার্জ করেন কোস্টগার্ড সদস্যরা। এসময় জেলেরা কোস্টগার্ডের একটি গাড়ি ও একটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করেন। পরে পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) নেতৃত্বে পুলিশ ও নৌবাহিনীর সদস্যরা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
স্থানীয় সূত্র জানায়, মঙ্গলবার বিকেলে সাগর থেকে মাছ ধরে পাথরঘাটায় ফেরার পথে অবৈধ দুটি ট্রলার জব্দ করে কোস্টগার্ড। এর প্রতিবাদে ৫ শতাধিক জেলে সন্ধ্যার পর থেকে কোস্টগার্ড স্টেশনের সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন। এসময় জেলেরা ট্রলার দিয়ে কোস্টগার্ডের নৌযান ও ঘাট আটকে দেয়। রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিক্ষোভ আরও তীব্র হয়ে ওঠে। পরে জেলেদের সঙ্গে মৎস্য ব্যবসায়ীরা অংশ নিলে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠে। একপর্যায়ে রাত ৯টার দিকে জেলেরা কোস্টগার্ড ক্যাম্প ঘেরাওয়ের চেষ্টা করলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এসময় কোস্টগার্ডের দুটি যানবাহন ভাঙচুর করা হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কোস্টগার্ড সদস্যরা ফাঁকা গুলি ও লাঠিচার্জ করেন। এতে ১২ জন আহত হন।
Advertisement
এ বিষয়ে পাথরঘাটা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাসুম আকন জাগো নিউজকে বলেন, গতকাল আমার একটি ট্রলারের ত্রুটি থাকায় ডগে ওঠানো হয় এবং আরেকটি ট্রলার সাগর থেকে সেইব ভেঙে আসে। কোস্টগার্ড ওই ট্রলার দুটিকে জব্দ করেন। হাইকোর্টে চলমান রিট অনুযায়ী ছয় মাস সময় ও কাগজপত্র থাকলেও তা তারা মানেননি। পরে গ্যাস কাটার দিয়ে ট্রলারের নেট কাটা শুরু করলে উৎসুক মানুষ পাশের একটি ব্রিজের ওপর ভিড় করেন। এসময় কোস্ট গার্ড অতর্কিতভাবে গুলি বর্ষণ করে। পরে অতীতেও কোস্টগার্ডের বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে বিক্ষুব্ধ জনতা একত্রিত হয়ে তাদের অবরুদ্ধ করেন।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পাথরঘাটা সার্কেল) শাহেদ আহমেদ চৌধুরী জাগো নিউজকে বলেন, গতকালকের ঘটনায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল। এছাড়াও কোস্টগার্ড ক্যাম্পেও পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল। পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক রয়েছে।
পাথরঘাটার ইউএনও মিজানুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, কোস্টগার্ড দুটি ট্রলিং বোট জব্দ করে কাটিং ওয়েল্ডিংয়ের তার কাটার সময় জনগণ বাধা দেয় ও কোস্টগার্ডকে উদ্দেশ্য করে ঢিল নিক্ষেপ করে। এসময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্যে কোস্টগার্ড ফাঁকা গুলি ছোঁড়ে। আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশ ও নৌবাহিনীর সহায়তায় মধ্য রাতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি। তবে উভয় পক্ষের মধ্যে কিছু ভুল বোঝবুঝি রয়েছে, তাদের সঙ্গে আলাপ আলোচনার জন্য দুপুরে আমরা বসবো।
নুরুল আহাদ অনিক/এমএন/এমএস
Advertisement