খেলাধুলা

পরিসংখ্যানে আশা, এবারের চক্রে কেমন করবে বাংলাদেশ?

পরিসংখ্যানে আশা, এবারের চক্রে কেমন করবে বাংলাদেশ?

টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের তৃতীয় চক্র শেষ হলো মাত্র। এই তো ৭২ ঘণ্টা আগে ক্রিকেট তীর্থ লর্ডসে অস্ট্রেলিয়াকে ৫ উইকেটে হারিয়ে প্রথমবার আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জিতেছে দক্ষিণ আফ্রিকা।

Advertisement

তৃতীয় চক্র শেষ না হতেই শুরু হতে যাচ্ছে যাচ্ছে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের চতুর্থ চক্র। আগামীকাল ১৭ জুন গলে বাংলাদেশ আর শ্রীলঙ্কা টেস্ট দিয়েই মাঠে গড়াচ্ছে আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশীপের নতুন চক্র। এবার আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে কেমন করবে বাংলাদেশ? সর্বশেষ বা তৃতীয় চক্রে নয় দলের মধ্যে টাইগারদের অবস্থান ছিল সপ্তম। নাজমুল হোসেন শান্ত, মুমিনুল হক, মুশফিকুর রহিম আর তাইজুল ইসলামরা এবার কি এক ধাপ ওপরে যেতে পারবেন? নাকি আগেরবারের জায়গায় আটকে থাকবে টিম বাংলাদেশ? এসব প্রশ্ন নিয়েই শুরু হচ্ছে আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশের যাত্রা। ইতিহাস জানাচ্ছে, আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের প্রথম আসরে একটি ম্যাচও জেতেনি বাংলাদেশ। দ্বিতীয়বার টাইগারদের জয় ছিল একটি। আর সর্বশেষ চক্রে তিন-তিনটি ম্যাচ জিতেছিল নাজমুল হোসেন শান্তর দল।

পরিসংখ্যানের গ্রাফ ওপরের দিকেই। এবার কি তবে চতুর্থ চক্রে বাংলাদেশ আর এক বা দুটি ম্যাচ বেশি জিততে পারবে? সে সামর্থ্য কি আছে বর্তমান দলটির?

কঠিন সত্য হলো, সাম্প্রতিক সময়ে তিন ফরম্যাটেই বাংলাদেশ খুব একটা ভালো অবস্থায় নেই। সবচেয়ে বড় কথা, সব ফরম্যাটেই কোয়ালিটি ক্রিকেটার কমে গেছে বাংলাদেশের। তামিম ইকবালের মত একজন দক্ষ, অভিজ্ঞ, পরিণত বিশ্বমানের ওপেনার নেই। জাকির হাসান, সাদমান ইসলাম, এনামুল হক বিজয় কিংবা মাহমুদুল হাসান জয়রা কেউই তামিমের ধারেকাছে যেতে পারেননি। সেই জায়গায় একটা বড় শূন্যতা ও ঘাটতি রয়ে গেছে।

Advertisement

মুমিনুল হকও সম্ভবত তার ক্যারিয়ারের স্বর্ণ সময় পেছনে ফেলে এসেছেন। বয়স খুব হয়নি। ৩৩। তারপরও মুমিনুলের ব্যাটের ধার খানিক কমেছে।

মুশফিকুর রহিম সাধ্যমত চেষ্টা করেন। অনুশীলনে সবার আগে আসেন। সবার পরে বের হন মাঠ থেকে। প্রচুর ঘাম ঝড়ান এখনো। কিন্তু ব্যাটের ধার কমে গেছে। এক সময় মাঠে নামলেই বড়সড় ইনিংস খেলে ফেলতেন মুশফিক। এই শ্রীলঙ্কার মাটিতে তার ডাবল সেঞ্চুরি আছে। এখন মুশফিক সেই হারানো দিনকে ফিরে পাবেন কিনা, সন্দেহ। সবচেয়ে বড় কথা, মুশফিক-মুমিনুলের বিকল্প কেউ সেভাবে উঠেও আসেনি। তাই তারা দুজন এখনো বড় নির্ভরতা। মুশফিক আর মুমিনুলের দিকেই তাকিয়ে পুরো দল।

অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত আর লিটন দাসের কাছ থেকে যা আশা করা হয়েছিল, তারা তা দিতে পারেননি এখনো। লিটন, শান্ত ও জাকের আলী অনিকদের বেশিরভাগ ইনিংস ২০ থেকে ৪০-এর ঘরে থেমে থাকছে। তাতে করে বড় জুটি তৈরি হয় না। স্কোরলাইনও বড় হচ্ছে না।

দলে সাকিব আল হাসানের অভাব আছে সুস্পষ্ট। ব্যাট ও বলে সাকিব যে ভূমিকা পালন করতেন, সে ভূমিকা পালনের মত কেউ নেই। সব মিলে ব্যাটিং ও বোলিং দুই শক্তিই গেছে কমে। পেস বোলাররা মাঝে একটু বারুদে বোলিং করেছেন। তাসকিন আহমেদের ইনজুরি, এবাদত হোসেন দীর্ঘ সময় বাইরে থাকায় হাসান মাহমুদ, খালেদ আর নাহিদ রানার ওপরই চাপ পড়েছে। তাদের চেষ্টায় কমতি নেই। তবে এখনো পরিপক্কতায় ঘাটতি আছে।

Advertisement

ওদিকে তাইজুল ইসলামের সঙ্গে কোয়ালিটি স্পিনার বলতে মেহেদী হাসান মিরাজ। তারও জ্বরের কারণে গল টেস্টে খেলা অনিশ্চিত। বাকি স্পিনাররা সে মানের নন।

সবমিলিয়ে টিম বাংলাদেশের শক্তি ও সামর্থ্য আগের তুলনায় এখন অনেকটাই কম। এ ক্ষয়িষ্ণু শক্তির বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কার মাটিতে এবার ২ টেস্টের সিরিজে কী করে, সেটাই দেখার।

এআরবি/এমএমআর/এমএস