বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গাজীপুরের কোনাবাড়ীতে হৃদয় মিয়া এবং যাত্রাবাড়ীতে ইমাম হোসেন তাইম হত্যার ঘটনায় করা মামলার প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ২ মাস সময় দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
Advertisement
রোববার (১৫ জুন) ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারিক প্যানেল এ আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের অন্য দুই সদস্য হলেন, বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারপতি মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
ট্রাইব্যুনালে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য প্রসিকিউশনের পক্ষে আরও দুমাস সময়ের আবেদন করা হয়। শুনানি শেষে আগামী ১৭ আগস্ট তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। আদালতে প্রসিকিউশনের পক্ষে ছিলেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, গাজী মোনাওয়ার হুসাইন তামিম, প্রসিকিউটর এস এম মঈনুল করিম। আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী দেলোয়ার হোসেন সোহেল।
গত বছরের ৫ আগস্ট সরকার পতনের দিন কোনাবাড়ী এলাকায় গুলিতে নিহত হন টাঙ্গাইলের হেমনগর ডিগ্রি কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র হৃদয় মিয়া (২০)। লেখাপড়ার পাশাপাশি কোনাবাড়ী এলাকায় অটোরিকশা চালাতেন হৃদয়। এ ঘটনায় নিহতের ফুফাতো ভাই মো. ইব্রাহীম বাদী হয়ে কোনাবাড়ী থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। এছাড়া আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালেও একটি মামলা দায়ের করা হয়।
Advertisement
মামলায় গ্রেফতার কোনাবাড়ী থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কে এম আশরাফ উদ্দিন, গাজীপুর জেলা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম, কনস্টেবল আকরাম হোসেন, ফাহিম হাসান ও মাহমুদুল হাসান সজীবকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।
অন্যদিকে, যাত্রাবাড়ী এলাকায় সংঘটিত অভিযোগে বলা হয়, রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ বন্ধুকে টেনে নিয়ে যাওয়ার সময় কলেজছাত্র ইমাম হাসান তাইমকে গুলি করে হত্যা করা হয়। হত্যার অভিযোগে গ্রেফতার সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) তানজিল আহমেদসহ অন্যান্য আসামিদের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়েছিল।
গত ২০ জুলাই বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে সরকার কারফিউ জারি করে। ওইদিন দুপুর ১২টা থেকে ২টা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল ছিল। ওই সময় তাইম তার দুই বন্ধুর সঙ্গে যাত্রাবাড়ীর কাজলা এলাকায় চা খেতে যান। তখন কিছু ছাত্র-জনতা কোটা সংস্কারের বিক্ষোভ করছিলেন। সে সময় ইকবাল হোসেন, শামীম ও তানজিল আহমেদের নির্দেশে জাকির হোসেন ও তার সঙ্গীরা বিক্ষোভকারীদের ওপর টিয়ারশেল, সাউন্ড গ্রেনেড, রাবার বুলেট ও তাজা গুলি চালায়। প্রাণভয়ে ছাত্র-ছাত্রীরা এলোপাতাড়ি ছোটাছুটি করতে থাকেন। তাইম ও তার দুই বন্ধু লিটন চা স্টোরের ভেতর ঢুকে দোকানের শাটার টেনে দেন। কিন্তু শাটারের নিচের দিকে আধা হাত খোলা ছিল। সেখান থেকে পুলিশ তাদেরকে টেনে বের করে। জাকির হোসেন গুলি থেকে বাঁচতে চাইলে দৌড় দিতে বলে। তখন তাইম সবার আগে দৌড় দেন। এরপর তাদের গুলি করা হয়।
এফএইচ/এসএনআর/জেআইএম
Advertisement