ইরান যদি হরমুজ প্রণালি বন্ধ করে দেয়, তবে তা বৈশ্বিক তেলের বাজারে ব্যাপক প্রভাব ফেলবে বলে সতর্ক করেছেন জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ও যুক্তরাষ্ট্রের হিউস্টন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এড হির্স।
Advertisement
ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম আইআরআইএনএন জানিয়েছে, দেশটির পার্লামেন্টের নিরাপত্তা কমিশনের সদস্য এসমাইল কোসারি বলেন, ইসরায়েলের সামরিক হামলার জবাবে হরমুজ প্রণালি বন্ধের বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে পর্যালোচনা করছে তেহরান।
এ প্রসঙ্গে হির্স আল জাজিরাকে বলেন, এই প্রণালি দিয়ে প্রতিদিন প্রায় ১৮ থেকে ২০ মিলিয়ন ব্যারেল তেল পরিবহন হয়। অর্থাৎ বৈশ্বিক তেল সরবরাহের প্রায় ২০ শতাংশ এখান দিয়ে যায়। সৌদি আরব কিংবা কুয়েতের জন্য এই অঞ্চলের বাইরে তেল রপ্তানির বাস্তবিক বিকল্প রুট নেই।
তিনি আরও বলেন, যদি প্রণালি দিয়ে পরিবহন অর্ধেক পরিমাণেও কমে আসে, তাহলে বিশ্ববাজারে তেলের দাম ১২০ ডলার বা তারও বেশি হয়ে যেতে পারে, যার প্রভাব সারা বিশ্বে খুব দ্রুতই পড়বে।
Advertisement
এই পরিস্থিতিতে প্রণালি বন্ধের মতো পদক্ষেপ নেওয়া হলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানের ওপর সামরিক হামলার ‘অজুহাত’ পেয়ে যেতে পারেন বলেও মত দেন হির্স।
এদিকে ইরানের সঙ্গে চলমান সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্রকে জড়াতে প্রাণান্ত চেষ্টা চালাচ্ছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। চলমান সংঘাতে মার্কিনিদের কাছে অকুণ্ঠ সমর্থন অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
শনিবার (১৪ জুন) ইংরেজিতে দেওয়া এক ভিডিওবার্তায় মার্কিন নাগরিকদের উদ্দেশে নেতানিয়াহু বলেন, ‘আমাদের শত্রু, আপনাদেরও শত্রু।’
ভিডিওর শুরুতেই তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানান এবং ২৫০ বছর ধরে ‘স্বাধীনতা রক্ষায়’ মার্কিন সেনাদের ভূমিকার প্রশংসা করেন।
Advertisement
এরপর নেতানিয়াহু বলেন, ‘ইসরায়েলি সেনাবাহিনীও মধ্যপ্রাচ্যে স্বাধীনতা রক্ষায় লড়ছে,’ যেখানে তিনি ইরানের সরকারকে ‘নির্মম ও দমনমূলক শাসকগোষ্ঠী’ হিসেবে অভিহিত করেন।
তিনি যুক্তরাষ্ট্রের জনগণকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আমাদের শত্রুই আপনাদের শত্রু। ভবিষ্যতে যা আমাদের সবার জন্য হুমকি হয়ে উঠতে পারে, সেটিকে আগেভাগে মোকাবিলা করা- আমরা সেটাই করছি।
নেতানিয়াহু দাবি করেন, ইসরায়েল যদি আগ্রাসন না চালাতো, তবে ইরান তার অনুগত গোষ্ঠী—যেমন হিজবুল্লাহ ও হামাসকে পারমাণবিক অস্ত্র দিয়ে সজ্জিত করতো। তবে এই দাবির পক্ষে তিনি কোনো নির্দিষ্ট প্রমাণ হাজির করেননি।
তিনি আরও বলেন, আমরা যা করছি, তা ‘মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের স্পষ্ট সমর্থন’ এবং মার্কিন জনগণ ও বিশ্বের বহু দেশের সমর্থন নিয়েই করছি।
সূত্র: আল-জাজিরা
এমএসএম