সাহিত্য

অদ্ভুত এক ভালোবাসার নাম

অদ্ভুত এক ভালোবাসার নাম

মুঠোফোনে খবরের কাগজ পড়ছে বিপু। আজ বাবা দিবস। শিরোনাম দেখে চোখ আটকে গেলো। অশ্রু ঝরছে। ভাবছে, বাবার জন্য এ বছর কিছুই করতে পারবো না।

Advertisement

বাবা দিবসের সকালটা বিপুর কাছে অন্যরকম। প্রতি বছর এই দিনে বাবাকে বিশেষ কিছু উপহার দিতো। এবার হাতে কোনো টাকা নেই। তাই মন খারাপ।

একটি গার্মেন্টস কোম্পানিতে কাজ করতো বিপু। হঠাৎ বন্ধ হয়ে যায়। যে কারণে চাকরি চলে যায়। গত কয়েক মাস ধরে রাজমিস্ত্রির কাজ করে যে টাকা জমিয়েছিল; সব টাকা বাবার চিকিৎসার পেছনে খরচ করে ফেলেছে। বাবা এখন অনেকটা সুস্থ। এটাই সবচেয়ে বড় পাওয়া।

বাবার জন্য আজ কিছু করতে না পারার কষ্ট তাকে কুরে কুরে খাচ্ছে। বন্ধুর কাছ থেকে এক হাজার টাকা ধার নিয়ে বাবার জন্য একটি পাঞ্জাবি কিনলো বিপু।

Advertisement

আরও পড়ুনসন্ধ্যামালতির আত্মকাহিনিসাঁঝের আলোয় রং বদলের ভালোবাসা

বাড়িতে এসে দেখে বাবা বিছানায় শুয়ে আছেন। মুখে ক্লান্তির ছাপ কিন্তু চোখে এক অদ্ভুত শান্তি। বিপু বাবার পাশে গিয়ে বসে। বাবার হাতে দেয় পাঞ্জাবিটা। বাবা বলে উঠলেন, ‘এটা কী?’ বিপু বলল, ‘আজ বাবা দিবস। তা-ও বুঝি ভুলে গেছো বাবা?’ বাবা মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন, ‘আরে না।’

বাবা-ছেলের চোখ ভিজে গেল। বাবা বললেন, ‘টাকা-পয়সা দিয়ে সব ভালোবাসা মাপা যায় না, বিপু। তুমি সুস্থ থাকো, ভালো থাকো, তুমি পাশে থাকো—এটাই সবচেয়ে বড় উপহার।’

বাবাকে জড়িয়ে ধরল বিপু। বাবার বুকে মাথা রেখে অনুভব করল অদ্ভুত শান্তি। মনে হলো, পৃথিবীতে এর চেয়ে বড় উপহার আর কিছু হতে পারে না। বাবা বললেন, ‘বাবার কাছে ছেলে শুধু সন্তান নয়, ছেলে তার পৃথিবী। বাবা-ছেলের রসায়ন অদ্ভুত এক ভালোবাসার নাম।’

এসইউ/জেআইএম

Advertisement