দেশজুড়ে

বড় গরুতে লাভের আশায় গুড়েবালি

বড় গরুতে লাভের আশায় গুড়েবালি

কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে বড় গরু পালন করে আশায় গুড়েবালি নীলফামারীর অনেক খামারির। ন্যায্য দাম তো দূরের কথা, লোকসান দিয়ে বিক্রি করতে চেয়েও ক্রেতা পাওয়া যায়নি। এমনকি খরচের টাকাও ওঠেনি অনেকের।

Advertisement

জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, এবার কোরবানি উপলক্ষে জেলায় ৩৪ হাজার ৩৮৩ জন খামারি ও কৃষক দুই লাখ ৮৯ হাজার ১৫৭টি পশু বিক্রির জন্য প্রস্তুত করেন। স্থানীয়ভাবে চাহিদা ছিল দেড় লাখ পশুর। এরমধ্যে জেলায় পশু জবাই হয়েছে মাত্র এক লাখ ১৫ হাজার ৬৫৯টি। প্রাণিসম্পদ বিভাগ আশা করেছিল জেলা থেকে কমপক্ষে ৮০-৯০ হাজার পশু রাজধানীসহ দেশের বড় হাটগুলোতে বিক্রি হবে। কিন্তু তাদের সে লক্ষ্যও পূরণ হয়নি।

‘এবার গতবারের তুলনায় অর্ধেকের চেয়ে কম পশু বিক্রি হয়েছে। অনেকে কোরবানি দিতে পারেননি। গতবছর যারা একাই কোরবানি দিয়েছিলেন, তাদের অনেকেই এবার ভাগে দিয়েছেন। এসব কারণে এবছর কোরবানির পশু বিক্রি কম হয়েছে’

জলঢাকা উপজেলার কৈমারি ইউনিয়নের আনোয়ারী বেগম জানান, ছেলের বিদেশ থেকে পাঠানো আড়াই লাখ টাকা দিয়ে তিনটি এঁড়ে গরু কিনেছিলেন। এরমধ্যে একটি ষাঁড় গরু ছিল। আশা করেছিলেন গরুগুলো বিক্রি করে লাভ হবে। কিন্তু বিক্রি করে যে পরিমাণ টাকা পাওয়া গেছে, তাতে গরু কেনা টাকা ও তাদের পেছনে খরচ দিয়ে সমান সমান। লাভ হয়নি

Advertisement

গরু ব্যবসায়ী, খামারি ও ইজারাদারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঢেলাপীর ও কালীবাড়ি পশুর হাটে বড় গরুর ক্রেতা আসেন ঢাকা, গাজীপুর ও দক্ষিণাঞ্চল থেকে। তবে পদ্মা সেতু হওয়ায় পশুর হাটে বাইরের পাইকারদের আনাগোনা একেবারেই তেমন ছিল না। তাই বড় ও বেশি দামের গরু বিক্রি হয়নি। ফলে খামারিরা এবার বিপাকে পড়েছেন।

আরও পড়ুন: কোরবানির গরু হাত বদল হলেই দাম বেড়ে যায় ১০-১৫ হাজার টাকাপশুর হাড়-শিং ও অণ্ডকোষ থেকে কোটি টাকার ব্যবসা৮ গরুতে শুরু, এখন সফল খামারি জামাই-শ্বশুরলালন-পালনে খরচ বেশি, লাভ নিয়ে শঙ্কা খামারিদের

ঢেলাপীর হাটের ইজারাদার মোতালেব হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, ‘এবার গতবারের তুলনায় অর্ধেকের চেয়ে কম পশু বিক্রি হয়েছে। অনেকে কোরবানি দিতে পারেননি। গতবছর যারা একাই কোরবানি দিয়েছিলেন, তাদের অনেকেই এবার ভাগে দিয়েছেন। এসব কারণে এবছর কোরবানির পশু বিক্রি কম হয়েছে।’

গরু ব্যবসায়ী আখতার হোসেনের ভাষ্য, পদ্মা সেতু হওয়ায় দক্ষিণাঞ্চলের গরু খুব কম খরচে ঢাকায় ঢুকেছে। তাই ঢাকাসহ বাইরের পাইকার নীলফামারীতে আসেনি। আশানুরূপ পাইকার ও ক্রেতার উপস্থিত না হওয়ায় লোকসানে পড়েছেন খামারিরা।

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. সিরাজুল হক জাগো নিউজকে বলেন, চাহিদার দ্বিগুণ পশু খামারিরা প্রস্তুত করেছিলেন। কিন্তু এবার পশু বিক্রি কম হয়েছে। এছাড়া জেলায় বড় গরু কেনার মতো ক্রেতা তেমন ছিল না। তাই যারা বড় গরু পুষেছেন তাদের এবার লাভের চেয়ে ক্ষতি হয়েছে বেশি। খামারিদের ক্ষতির দিক বিবেচনা করে সরকারিভাবে প্রণোদনার ব্যবস্থা করা হবে।

Advertisement

এসআর/জেআইএম