আন্তর্জাতিক

একদিনে নয়, বহুদিনের প্রস্তুতি শেষেই ইরানে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল

একদিনে নয়, বহুদিনের প্রস্তুতি শেষেই ইরানে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল

দীর্ঘ দিন ধরেই ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিকে ‘গুরুতর হুমকি’ বলে বিবেচনা করে আসছিল ইসরায়েল। আর বহুদিনের প্রস্তুতি শেষে শুক্রবার (১৩ জুন) মধ্যরাতে ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’ নামে ইরানের বিরুদ্ধে পূর্ণমাত্রার সামরিক অভিযান শুরু করেছে দেশটি। এই অভিযানে একযোগে হামলা চালানো হয়েছে ইরানের পরমাণু স্থাপনা, ক্ষেপণাস্ত্র ঘাঁটি, সামরিক ঘাঁটি ও শীর্ষ নেতৃত্বের ওপর।

Advertisement

ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের ভাষায় এই পুরো অপারেশন ছিল, দীর্ঘদিনের ব্যাপক চিন্তাভাবনা, দুঃসাহসিক পরিকল্পনা ও ইরানের কেন্দ্রস্থলে আধুনিক প্রযুক্তি ও এজেন্টদের নিখুঁত সমন্বয়ের ফলাফল।

জেরুজালেম জানিয়েছে, এটি ছিল ‘একটি সুনির্দিষ্ট ও প্রতিরোধমূলক হামলা’, যেটির লক্ষ্য ছিল ইরানের পারমাণবিক হুমকি প্রতিহত করা। এর আগে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ইসরায়েল সরকার সতর্ক করেছিল, ইরানন পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির চূড়ান্ত ধাপে পৌঁছেছে।

৩৩০ বোমা, ২০০ যুদ্ধবিমান, ১০০ লক্ষ্যবস্তু

Advertisement

প্রথম ধাপে শুক্রবার রাত ৩টা থেকে সকাল পর্যন্ত ইরানজুড়ে টানা কয়েক দফায় বোমা বর্ষণ চলে। ২০০টির বেশি ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান একযোগে অংশ নেয় এই অভিযানে। অন্তত ১০০টি লক্ষ্যবস্তুর ওপর নিক্ষেপ করা হয় ৩৩০টির বেশি বোমা ও ক্ষেপণাস্ত্র।

এই হামলার প্রধান লক্ষ্যবস্তু ছিল ইরানের নাতাঞ্জ পরমাণু সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্র। হামলার পরে সেখান থেকে ধোঁয়ার কুণ্ডলী উড়তে দেখা গেছে।

টাইমস অব ইসরায়েলকে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েল বহু বছর ধরে ইরানে হামলার জন্য গোপনে প্রস্তুতি নিচ্ছিল। এ উদ্দেশ্যে তেহরানের নিকটবর্তী অঞ্চলে একটি ড্রোন ঘাঁটি স্থাপন করেছিল ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ। সেখান থেকেই প্রথমে ইসরায়েলমুখী ক্ষেপণাস্ত্র লঞ্চার ধ্বংস করা হয়।

এদিকে, চোরাপথে অস্ত্রবাহী যানবাহন ও সিস্টেম ইরানে প্রবেশ করানো হয়, যা ইরানের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা অকার্যকর করে দেয়। মোসাদের স্পেশাল কমান্ডোরা ইরানের কেন্দ্রীয় অঞ্চলে গোপনে ক্ষেপণাস্ত্র বসিয়ে বিমান প্রতিরক্ষা স্থাপনায় হামলা চালায়।

Advertisement

লড়াই হবে আরও দীর্ঘ?

ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর চিফ অব স্টাফ লেফটেন্যান্ট জেনারেল এয়াল জামির বলেছেন, এই অভিযানের মূল্য হবে ভিন্ন রকম। আমরা চূড়ান্ত সাফল্যের নিশ্চয়তা দিতে পারি না। তবে আমরা বহুদিন ধরে প্রস্তুতি নিচ্ছি।

তিনি জানিয়েছেন, দশ হাজারের বেশি সেনা এখন সক্রিয়ভাবে মোতায়েন হচ্ছে দেশের সব সীমান্তে। সেনাবাহিনীর ধারণা, এই অভিযান কয়েকদিন ধরে চলবে এবং শেষ পর্যন্ত ইরান আর পারমাণবিক হুমকি হয়ে থাকবে না।

সূত্র: দ্য টাইমস অব ইসরায়েল

এসএএইচ