জাতীয়

শখের গরুতে ‘বড় বিপাকে’ ব্যাপারীরা

শখের গরুতে ‘বড় বিপাকে’ ব্যাপারীরা

মানিকগঞ্জ সদর থেকে ৫টি বড় আকারের গরু নিয়ে মিরপুর ১৪ নম্বরে ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড পশুর হাটে এসেছেন আরিফুল আলম ইসলাম জীবন। হাটে গরু নামিয়েছেন বৃহস্পতিবার, এরপর কেটে গেছে প্রায় দুইদিন। তবে শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত মাত্র দুইটি গরু বিক্রি করতে পেরেছেন।

Advertisement

মাঝে আছে মাত্র একটি রাত, এরপর ঈদ। এখনো বিক্রি হয়নি আরিফুল আলমের তিনটি গরু। ক্রেতারা বড় গরুর দাম বলছেন কম, কিনছেন মাঝারি ও ছোট গরু। ফলে বড় গরু নিয়ে অনেক ব্যাপারী পড়েছেন বিপাকে। কেউ কেউ গরু বিক্রি না করে চলে যাচ্ছেন। কেউ আবার ঈদের আগের রাতের অপেক্ষায় আছেন।

শুক্রবার (৬ জুন) বিকেলে কথা হয় জীবনের সঙ্গে। জাগো নিউজকে আক্ষেপের সুরে তিনি বলেন, বড় গরু শখে পালি। ভালো খাবার খাওয়াতে হয়, অনেক যত্ন নিতে হয়। আনুষঙ্গিক অনেক খরচ আছে। এগুলো লোকসানে বিক্রি করা সম্ভব না।

তবে যে দুইটি গরু বিক্রি হয়েছে সেগুলোর ভালো দাম পেয়েছেন বলেও জানান এ বিক্রেতা।

Advertisement

ফ্রিজিয়ান জাতের গরুতে ৬ মণের বেশি মাংস হবে। দাম চেয়েছি ২ লাখ ৬০ হাজার টাকা। ক্রেতা দাম বলছে এক লাখ ৮০ হাজার। দামের এত ব্যবধানে তো গরু বিক্রি করা সম্ভব না, যোগ করেন জীবন।

দুপুরে হাটে গিয়ে দেখা গেছে, ছোট ও মাঝারি গরুর চাহিদা বেশি। ক্রেতারা বড় গরুর দরদাম করছেন কম। হাটে ক্রেতার অভাব নেই। তবে সে তুলনায় কোরবানির পশু কম।

হাটে ছোট ও মাঝারি আকারের গরু বেশি বিক্রি হতে দেখা গেছে। এগুলোর দাম ৬০ হাজার থেকে ২ লাখের মধ্যে বলে বিক্রেতারা জানিয়েছেন।

আরও পড়ুনঅজ্ঞানপার্টির খপ্পরে পড়ে ২৫ লাখ টাকা খোয়ালেন দুই গরু ব্যবসায়ীকালাপাহাড়ের ওজন ১ হাজার ২৪৬ কেজি, দাম ১০ লাখ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল থেকে ৪টা গরু এনেছেন আনসার আলী। যার মধ্যে ৯ মণ ওজনের একটি শাহিওয়াল জাতের গরুর দাম চাইছেন ৩ লাখ ২০ হাজার টাকা। আরেকটি ফ্রিজিয়ান জাতের গরুর দাম চাইছেন ৪ লাখ ২০ হাজার টাকা। সেটির ওজন ১৪ মণ হবে বলে ধারণা তার।

Advertisement

জানতে চাইলে তিনি বলেন, গরু বেচাকেনা হয়েছে বুধ ও বৃহস্পতিবার। আজ ক্রেতা কম। এই দুইটা বড় গরু বিক্রি করতে পারছি না। ছোট গরু ছিল ২টা বিক্রি হয়ে গেছে। এবার বড় গরুর দাম একেবারেই নেই।

এই বিক্রেতা আরও বলেন, শখে বড় গরু লালন পালন করি। বিক্রেতারা গরু প্রতি ৫০ থেকে ৮০ হাজার টাকা দাম কম বলছেন। ভালো দাম না পেলে রাতে চলে যাবো।

মিরপুর ১০ নম্বরের বাসিন্দা আবদুস সালামের সঙ্গে কথা হয় হাটের হাসিল ঘরের সামনে। মাঝারি আকারের দেশি গরু কিনেছেন তিনি। এ বছর হাটে গরুর দরদাম নিয়ে নিজের সন্তুষ্টির কথা জানিয়ে আবদুস সালাম বলেন, এক লাখ ৭০ হাজার টাকা দাম চেয়েছিল। দরদাম করে এক লাখ ৪০ হাজার টাকায় নিয়েছি।

রবিউল নামের আরেক ক্রেতা একটা বড় গরু খুঁজছিলেন। জাগো নিউজকে তিনি বলেন, একটা গরু নিয়েছি। দরদামে পছন্দ হলে শাহিওয়াল জাতের আরেকটা গরু কিনবো।

বড় গরুর ক্রেতা কম কেন- জানতে চাইলে রবিউল বলেন, উচ্চবিত্তরা ফার্ম থেকে বড় গরু আনেন। কারও কারও আবার নিজেদেরই ফার্ম আছে। আর মধ্যবিত্তরা মাঝারি আকারের গরু বেশি কেনেন। ঢাকা শহরে মধ্যবিত্ত মানুষ তুলনামূলক বেশি।

এসএম/কেএসআর/জেআইএম