নাইজেরিয়ার উত্তর-মধ্যাঞ্চলের মোকওয়া শহরে টানা ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে সৃষ্ট বন্যায় কমপক্ষে ১৫১ জনের মৃত্যু হয়েছে। বন্যার কারণে ঘরছাড়া হয়েছেন তিন হাজারেরও বেশি মানুষ।
Advertisement
শনিবার দেশটির নাইজার অঙ্গরাজ্যের জরুরি ব্যবস্থাপনা সংস্থার মুখপাত্র ইব্রাহিম আওদু হুসেইনি জানান, শুক্রবার ভোররাতে হওয়া প্রবল বৃষ্টিতে অন্তত ৫০০ পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তিনটি এলাকায় ছড়িয়ে পড়া বন্যার পানিতে বাড়িঘরের ছাদ পর্যন্ত তলিয়ে যায়, অনেকে কোমর পর্যন্ত পানির মধ্যে আটকে পড়েন।
আরও পড়ুন>>
নাইজেরিয়ায় ভয়াবহ বন্যায় শতাধিক প্রাণহানি নাইজেরিয়ায় নৌকাডুবি: অর্ধ-শতাধিক মরদেহ উদ্ধার, নিখোঁজ অনেকে নাইজেরিয়ায় দস্যুদের হাতে জিম্মি ২৮৭ শিশু, বিশাল মুক্তিপণ দাবিসিএনএনকে দেওয়া এক বিবৃতিতে হুসেইনি বলেন, নিহতদের মধ্যে বহু শিশু রয়েছে এবং মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। কারণ এখনো উদ্ধারকাজ চলছে।
Advertisement
মোকওয়ার বাসিন্দা হাসান আবদুল্লাহি (২৬) জানান, তিনি তার পরিবারের নয় সদস্যকে হারিয়েছেন। এদের মধ্যে রয়েছেন তার বৃদ্ধা মা এবং ৪ থেকে ৮ বছর বয়সী দুই ভাইপো ও দুই ভাগনি।
আবদুল্লাহি বলেন, আমি খুবই ভেঙে পড়েছি। যদি কোনোভাবে ওদের আবার ফিরিয়ে আনতে পারতাম… কিন্তু কোনো উপায় নেই। আমরা কিছুই রক্ষা করতে পারিনি। একটা জামা-কাপড় বা জুতো পর্যন্ত নেই। ঘুমানোর জায়গাও নেই। আমরা চরম কষ্টে আছি।
দেশটির জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা জানায়, বৃহস্পতিবার রাতের দিকে যখন বাসিন্দারা ঘুমিয়েছিলেন, তখন বন্যার পানি কপেগে এলাকায় ঢুকে পড়ে। নাইজার রাজ্য সরকার একে ‘মর্মান্তিক ও হৃদয়বিদারক বিপর্যয়’ বলে উল্লেখ করেছে।
নাইজেরিয়ার উত্তরাঞ্চল প্রায় প্রতি বছরই বর্ষাকালে ভয়াবহ বন্যার শিকার হয়। ২০২২ সালে দেশটিতে এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা হয়েছিল, যাতে মারা যায় ৬০০’র বেশি মানুষ। এসময় বাস্তুচ্যুত হন ১০ লাখেরও বেশি বাসিন্দা। গত বছরও টানা কয়েক সপ্তাহের বন্যায় ২০০ জনের মৃত্যু এবং ৩ লাখ ৮৬ হাজার মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছিলেন।
Advertisement
সূত্র: এপি, ইউএনবি, সিএনএনকেএএ/