দেশজুড়ে

হাঁটু পানিতে বসে ভর্তি পরীক্ষা দিলো শিক্ষার্থীরা

হাঁটু পানিতে বসে ভর্তি পরীক্ষা দিলো শিক্ষার্থীরা

সাগারে নিম্নচাপের প্রভাবে টানা দুই দিনের বৃষ্টিতে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ ক্যাম্পাস ও ছাত্রাবাস পানিতে তলিয়ে গেছে। জলমগ্ন হয়ে পড়েছে ক্লাস রুম। ফলে পানিতে বসেই জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক প্রথমবর্ষের ভর্তি পরীক্ষা দিয়েছেন প্রায় চার হাজার শিক্ষার্থী। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন পরীক্ষার্থী ও তাদের সঙ্গে আসা অভিভাবকরা।

Advertisement

শনিবার (৩১ মে) সরজমিন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ ধর্মপুর ক্যাম্পাসে গিয়ে এ চিত্র দেখা গেছে।

ক্যাম্পাস ঘুরে দেখা যায়, কলা ভবন, বিজ্ঞান ভবন-১, বিজ্ঞান ভবন-২, মিলিনিয়াম ভবন ও অর্থনীতি ভবনের নিচতলায় ১৫টিরও বেশি কক্ষে হাঁটু পানিতে থৈ থৈ করছে। এর মাঝেই বসে পরীক্ষা দিচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। এছাড়াও কলেজের প্রধান ফটক, অশোকতলা রেলগেট এলাকা ও ধর্মপুরের তিনটি ফটকেই হাঁটু পানি মাড়িয়ে শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে দেখা গেছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছে ভর্তি-ইচ্ছুক পরীক্ষার্থী ও তাদের সঙ্গে আসা অভিভাবকরা।

এছাড়া ক্যাম্পাসের বাহিরে বিভিন্ন কেন্দ্রে প্রায় ১০ হাজারেও বেশি শিক্ষার্থী ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন।

Advertisement

নাম প্রকাশা না করার শর্তে কলেরজ একাধিক শিক্ষক বলেন, ভিক্টোরিয়া কলেজের জলাবদ্ধতা দীর্ঘ দিনের। অধ্যক্ষসহ দায়িত্বে থাকা কর্তা ব্যক্তিদের অবহেলার কারণে গত দুই দিনের বৃষ্টিতে পুরো ক্যাম্পাস পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ক্যাম্পাসের পানি নিষ্কাশনের জন্য তিনটি মোটর থাকলেও সেগুলি ব্যবহার করা হয়নি। আজ স্নাতক ভর্তি পরীক্ষায় হাজার হাজার শিক্ষার্থী, অভিভাবক এবং কলেজের শিক্ষাকরা জলাবদ্ধতার কারণে সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েন।

লাকসাম থেকে আসা আছমা আক্তার নামের এক পরীক্ষার্থী জানান, স্বপ্ন নিয়ে ভিক্টোরিয়া কলেজে ভর্তি পরীক্ষা দিতে এসেছি। কিন্তু স্বপ্নের ক্যাম্পাসে প্রথম এসেই জলাবদ্ধতার চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। কলা ভবনের নিচ তলায় একটি কক্ষে আমার সিট পড়েছে। দুর্ভাগ্যের বিষয় হলো রুমের মধ্যে হাঁটু পানি। সেই পানিতে বসেই পরীক্ষা দিতে হয়েছে।

চৌদ্দগ্রামের মাসকরা থেকে পরীক্ষার্থী দিতে খাদিজা আক্তার বলেন, দেশের প্রাচীন কয়েকটি সরকারি কলেজের মধ্যে ভিক্টোরিয়া অন্যতম। আজ প্রথম এসেই যে দুরাবস্থা দেখেছি পুরো ক্যাম্পাস পানিতে থৈ থৈ করছে। প্রথম দেখেই যে কেউ মনে করবে এটি মুক্ত জলাশয়। এছাড়া পানি শরীরের যে অংশেই লাগে এলার্জি বেড়ে যায়।

ভর্তি পরীক্ষার্থী মেয়েকে নিয়ে আসা জেলার নাঙ্গলকোটের হাসানপুর এলাকার কলেজ শিক্ষক আব্দুল জব্বার বলেন, মেয়েকে ভর্তি পরীক্ষার জন্য নিয়ে এসেছি। পরীক্ষা কক্ষে হাঁটু সমান পানি ছিলো, এ পানিতে বসে পরীক্ষা দেওয়ায় মেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে। যাওয়ার পথে তাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে হবে।

Advertisement

কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. আবুল বাশার ভূঁঞা বলেন, কলেজের জলাবদ্ধতা সমস্যা দীর্ঘ ২০ বছরের। আমি অধ্যক্ষ হিসেবে যোগ দিয়েছি মাত্র কয়েক মাস হলো। এ সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে একাধিক পরিকল্পনা শিক্ষা প্রকৌশল অফিসে জমা দেওয়া হয়েছে। প্ল্যান পাস হলে সমস্যার সমাধান হবে।

জাহিদ পাটোয়ারী/এএইচ/জেআইএম