ঈদুল আজহা সামনে রেখে রাজশাহীর বিভিন্ন অঞ্চলে হঠাৎ বেড়েছে খড়ের দাম। গরুর অন্যতম প্রধান খাদ্য এই খড়ের দাম অতীতের যেকোনো সময়ের তুলনায় এখন দ্বিগুণের বেশি। এছাড়া বৃষ্টির অজুহাতে ঘাসের দামও বেড়েছে। এতে বিপাকে পড়েছেন খামারিরা।
Advertisement
রাজশাহীর গোদাগাড়ী, চারঘাট, পুঠিয়াসহ বিভিন্ন হাটে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতি আঁটি খড় বিক্রি হচ্ছে ৬-৭ টাকায়। আর এক বান্ডিল ঘাস বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৮০ টাকা দরে। আগে ঈদের মৌসুমে ঘাস ও খড় বিক্রি হতো এর প্রায় অর্ধেক দামে।
বিক্রেতারা বলছেন, মৌসুমের শুরুতেই অতিবৃষ্টি হওয়ায় ধান সময়মতো ঘরে তোলা যায়নি। ফলে নতুন খড় তৈরি না হওয়ায় পুরোনো সংরক্ষিত খড়ের ওপর চাপ বেড়েছে। এতে করে সংকট তৈরি হয়েছে বাজারে।
আরও পড়ুন-
Advertisement
চরাঞ্চলের কৃষক ফারুক হোসেন জানান, ধান কাটার সময়ই বৃষ্টি শুরু হয়। জমিতে পানি জমে যাওয়ায় খড়ের ব্যবস্থা করা সম্ভব হয়নি। ফলে দ্বিগুণ দামে খড় কিনতে হচ্ছে। একই অবস্থা ঘাসেরও। বেশি দামে কিনতে হচ্ছে ঘাস। খড়ের চাহিদা থাকলেও সরবরাহ কম আর সেই সুযোগে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী বাড়তি মুনাফা নিচ্ছে।
গোদাগাড়ীর খামারি আমিনুল হক বলেন, প্রতিদিন গরুর জন্য যে পরিমাণ খড় দরকার, তা এখনকার দামে কিনে চালানো অসম্ভব। দুশ্চিন্তায় আছি, খাবার সংকট থাকলে মোটাতাজা করবো কীভাবে।
পুঠিয়ার খামারি হাসিবুল হাসান বলেন, বাজারে গেলেই শোনা যায় ঈদের জন্য দাম বেশি। কিন্তু ঈদের নাম করে যদি খাবারের দাম এমন বাড়ে তাহলে আমাদের খামার টিকবে কীভাবে।
কাশিয়াডাঙ্গার গৃহস্থ তৌফিক বললেন, গত বছর ৩ হাজার টাকায় যে খড় কিনেছি, এবার ৬ হাজার টাকা চাওয়া হচ্ছে। এটা অসম্ভব হয়ে যাচ্ছে।
Advertisement
রাজশাহী সিটি হাটের খড় ও ঘাস বিক্রেতা মো. শিবলী বলেন, এবার তেমন নতুন খড় পাওয়া যায়নি। যা আছে সব পুরাতন। আমাদেরই বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। তাই বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। পাইকারি থেকে আমরা প্রতি হাজার আঁটি খড় সাড়ে ৬ হাজার টাকায় কিনে এনেছি। ঈদের সময় ৫০০ টাকা লাভ করে ৭ হাজার টাকা বিক্রি করছি। আর বৃষ্টির কারণে ঘাস পাওয়া যাচ্ছে না। তাই বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।
তবে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, রাজশাহীতে এবারের মৌসুমে প্রায় ৬.৫ থেকে ৭ লাখ আঁটি খড় উৎপাদন হয়েছে, যার ওজন ৪৯১৭২৫ কেজি। যার বাজার মূল্য সাড়ে ৪ টাকা দরে মোট প্রায় ২২ লাখ টাকা।
রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক শারমিন সুলতানা বলেন, কোরবানির ঈদে খড়ের চাহিদা বাড়বেই। শহরেতো গরু পোষা হয় না, গ্রামের গরুগুলো শহরে চলে আসছে। ফলে খড়ের ওপর চাপ থাকবেই। কিছু লোক সেই সুযোগ নিচ্ছে।
এফএ/এমএস