জাতীয়

রেস্টুরেন্টে স্মোকিং জোন ও ই-সিগারেটের ব্যবহার বাড়ছেই

রেস্টুরেন্টে স্মোকিং জোন ও ই-সিগারেটের ব্যবহার বাড়ছেই

• ৯১ শতাংশ বাসে ধূমপানের তথ্য মিললো জরিপে• ধোঁয়াবিহীন তামাক সয়লাব হচ্ছে দুর্বল নজরদারিতে• পরোক্ষ ধূমপানের শিকার ৩ কোটি ৮৪ লাখ মানুষ • অভিনেত্রী-অভিনেতাকে সিগারেট খেতে দেখে আকৃষ্ট হয় • অস্বাভাবিকভাবে বাড়ছে অসংক্রামক রোগের মাত্রা • প্রতিদিন মারা যাচ্ছে ৪৪২ জন, রোগী ১৫ লাখ

Advertisement

ধূমপান ও ধোঁয়াবিহীন তামাকপণ্য ব্যবহারে অসংক্রামকসহ বিভিন্ন ধরনের রোগব্যাধির প্রকোপ দিনদিন ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। তামাকের এই ভয়াবহতা রোধে আইন ও জরিমানার বিধান থাকলেও নেই তেমন প্রয়োগ। ক্যানসারসহ সব ধরনের মরণব্যাধির কারণ হওয়া সত্ত্বেও পাবলিক প্লেসগুলোতে কিছুতেই ঠেকানো যাচ্ছে না ধূমপান। যে যেখানে পারছে ধূমপান করছে। বিশেষ করে পাবলিক পরিবহন সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ রয়েই গেছে। হাসপাতাল, পার্ক, রেস্টুরেন্ট, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে সর্বত্রই চলছে ধূমপানের মহোৎসব।

ধূমপায়ী ব্যক্তির সঙ্গে সঙ্গে আক্রান্ত হচ্ছে অধূমপায়ীরাও। বিশেষ করে নারী ও শিশুরাও ক্যানসার, হার্ট ও কিডনিজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে নারী ধূমপায়ীদের সংখ্যাও। বিভিন্ন রেস্টুরেন্টে গড়ে উঠছে স্মোকিং জোন। সেই সঙ্গে ই-সিগারেটের ব্যবহারে বাড়ছে দিনকে দিন। এছাড়া বর্তমানে নাটক-সিনেমাতে হরহামেশাই অভিনেতা-অভিনেত্রীকে ধূমপান করতে দেখা যায়। এতে করে মানুষ প্রিয় অভিনেতা-অভিনেত্রীকে দেখে ধূমপান করতে উৎসাহিত হচ্ছেন।

৯১ শতাংশ পাবলিক বাসে সরাসরি ধূমপান করা হয়। ৭৯ শতাংশ বাসে উঠতে বা নামতে সিগারেটের উচ্ছিষ্ট অংশ বা বাট দেখা যায়। শতকরা ৮৯ শতাংশ ধূমপান করেন, যাদের ৬২ শতাংশই দায়িত্ব পালনের সময়

Advertisement

মাথাপিছু আয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে কর আরোপসহ যথাযথ পদক্ষেপ নিয়ে ধূমপানের লাগাম টানা না গেলে জনস্বাস্থ্যের আরও অবনতির শঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। শুধু ধূমপানই নয়, সচেতনতা, নজরদারির অভাবে সারা দেশ সয়লাব ধোঁয়াবিহীন তামাক পণ্যে।

৯১ শতাংশ পাবলিক বাসে সরাসরি ধূমপান

অলাভজনক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ঢাকা আহছানিয়া মিশনের একটি জরিপে শতভাগ বাসেই তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন লঙ্ঘনের চিত্র পাওয়া গেছে। এরমধ্যে ৯১ শতাংশ পাবলিক বাসে সরাসরি ধূমপান করা হয়। ধূমপান করতে দেখা যায়নি মাত্র ৯ শতাংশ বাসে। ৭৯ শতাংশ বাসে উঠতে বা নামতে সিগারেটের উচ্ছিষ্ট অংশ বা বাট দেখা গেছে। জরিপে ৪১৭টি বাস পরিদর্শন করে কোনোটিতেই তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন অনুযায়ী সতর্কতামূলক নোটিশ পাওয়া যায়নি। ৯৯ শতাংশ বাসে কোনো নোটিশই পাওয়া যায়নি। এছাড়াও গণপরিবহনগুলোতে শতকরা ৮৯ শতাংশ ধূমপান করেন বলে তথ্য পাওয়া গেছে। যাদের ৬২ শতাংশ গণপরিবহনে দায়িত্ব পালনের সময়েও ধূমপান করেন।

আরও পড়ুন:

বেশি দামে সিগারেট বেচে রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছে তামাক কোম্পানিগুলো তামাকে রাজস্বের চেয়ে রোগের চিকিৎসা ব্যয় বেশি ৮ হাজার কোটি তামাকপণ্যে কার্যকর করারোপ-মূল্যবৃদ্ধিতে কমবে মৃত্যু, বাড়বে রাজস্ব ‘পুরুষরা এখন ঘরে লুকিয়ে কিংবা বাথরুমে সিগারেট খান’

অথচ আইন অনুযায়ী, পাবলিক প্লেসে ও পরিবহনে ধূমপানে ৩০০ টাকা জরিমানা, ধূমপানমুক্ত রাখতে না পারলে মালিককে ৫০০ টাকা জরিমানা ও ধূমপানমুক্ত সাইনবোর্ড না দেওয়ার অপরাধে এক হাজার টাকা জরিমানার বিধান রয়েছে।

Advertisement

তামাক ব্যবহারে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রতিদিন মৃত্যু ৪৪২ জনের

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশে প্রতি বছর মোট মৃত্যুর ৬৭ শতাংশ হয় অসংক্রামক রোগের কারণে। এসব রোগে আক্রান্ত হওয়ার মূল কারণগুলোর মধ্যে আছে তামাক ও তামাকজাত দ্রব্যের যথেচ্ছ ব্যবহার। বাংলাদেশে বছরে অসংক্রামক রোগে আক্রান্ত হয়ে মোট মৃত্যুর সংখ্যা ৫ লাখ ৭২ হাজার, যার মধ্যে ১ লাখ ৬১ হাজার মৃত্যু হয় সরাসরি তামাকজনিত রোগের কারণে। অর্থাৎ তামাক ব্যবহার করে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রতিদিন মারা যাচ্ছে ৪৪২ জন।

পরোক্ষ ধূমপানের শিকার ৩ কোটি ৮৪ লাখ মানুষ

বিভিন্ন জরিপ বলছে, দেশের ৩৫ শতাংশ অর্থাৎ প্রায় ৩ কোটি ৭৮ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ তামাক ব্যবহার করেন। ধোঁয়াবিহীন তামাক ব্যবহারকারী ২ কোটি ২০ লাখ (২০ দশমিক ৬ শতাংশ) এবং ধূমপায়ী ১ কোটি ৯২ লাখ (১৮ শতাংশ)। পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হচ্ছে ৩ কোটি ৮৪ লাখ মানুষ। তামাক ব্যবহারে পঙ্গুত্ব বরণ করছে ৩ লাখ ৮২ হাজার মানুষ। ১৩ থেকে ১৫ বছর বয়সি শিক্ষার্থীদের মধ্যে তামাক ব্যবহারের হার ৯ দশমিক ২ শতাংশ। বাংলাদেশে ৩১ শতাংশ বন উজাড়ের জন্য দায়ী তামাক চাষ। অর্থনৈতিক ক্ষতি হচ্ছে ৩০ হাজার ৫৭০ কোটি টাকা।

বাংলাদেশে অসংক্রামক রোগে মৃত্যুর সংখ্যা ৫ লাখ ৭২ হাজার, যার মধ্যে ১ লাখ ৬১ হাজার মৃত্যু সরাসরি তামাকজনিত রোগে। অর্থাৎ তামাকজনিত রোগে প্রতিদিন মারা যাচ্ছে ৪৪২ জন: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা

গ্লোবাল অ্যাডাল্ট টোব্যাকো সার্ভের তথ্যমতে, প্রায় ২৪ শতাংশ (২ কোটি ৫০ লাখ) প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ গণপরিবহনে যাতায়াতের সময় পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হন।

অধূমপায়ীদের হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ছে ৮৫ শতাংশ

গবেষণা বলছে, ধূমপায়ীদের কারণে অধূমপায়ীদেরও হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ছে ৮৫ শতাংশ। আর যারা কখনোই তামাক ব্যবহার করেননি তাদের তুলনায় তামাক ব্যবহারকারীদের হৃদরোগ, স্ট্রোক ও ফুসফুসে ক্যানসার হওয়ার ঝুঁকি ৫৭ শতাংশ বেশি এবং অন্যান্য তামাকজনিত ক্যানসার হওয়ার ঝুঁকি ১০৯ শতাংশ বেশি।

আরও পড়ুন:

তামাক বর্জনে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে আসন্ন বাজেটে তামাক পণ্যে কার্যকর করারোপের দাবি তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের প্রস্তাবিত সংশোধনী দ্রুত পাসের দাবি

এছাড়া শুধু চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে প্রতিবছর ভূমিহীন হওয়া ০.০৩ শতাংশ মানুষের বেশিরভাগই তামাক সেবনে অসুস্থ হন বলে গবেষণায় উঠে এসেছে। বাংলাদেশ তামাকবিরোধী জোটের এক জরিপে, দেশের ৪৫টি জেলায় ৯৪৪টি স্থানে ৮ হাজার ১৯টি বিক্রয়কেন্দ্র থেকে ৩২ হাজার তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন লঙ্ঘনের তথ্য পাওয়া গেছে। আইন লঙ্ঘনে দুটি বিদেশি সিগারেট কোম্পানি ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ (বিএটি) (৯৬ শতাংশ) ও জাপান টোব্যাকো ইন্টারন্যাশনালের (জেটিআই) (৮৭ শতাংশ) সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে।

বর্তমান প্রেক্ষাপটে আইন ভঙ্গকারী বেপরোয়া কোম্পানিগুলোকেও নিয়ন্ত্রণে অনতিবিলম্বে ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইনটি শক্তিশালী করা জরুরি বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।

কর ব্যবস্থা সংস্কার করলে ২৪ লাখ মানুষ ধূমপান থেকে বিরত থাকতে উৎসাহিত হবে

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, আসন্ন ২০২৫-২৬ অর্থবছরে তামাকপণ্যের বিদ্যমান কর ব্যবস্থা সংস্কার করলে সিগারেটের ব্যবহার ১৫.১ শতাংশ থেকে হ্রাস পেয়ে ১৩.০৩ শতাংশ হবে। প্রায় ২৪ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক ধূমপান থেকে বিরত থাকতে উৎসাহিত হবে এবং প্রায় ১৭ লাখ তরুণ ধূমপান শুরু করতে নিরুৎসাহিত হবে। দীর্ঘমেয়াদে ৮ লাখ ৬৪ হাজার ৭৫৮ প্রাপ্তবয়স্ক এবং ৮ লাখ ৬৯ হাজার তরুণ জনগোষ্ঠীর অকাল মৃত্যু রোধ করা সম্ভব হবে। এছাড়াও প্রায় ৬৮ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আয় হবে অর্থাৎ ২০ হাজার কোটি টাকা, যা আগের বছরের তুলনায় ৪৩ শতাংশ বেশি। তামাকপণ্য বিক্রি থেকে যে রাজস্ব আসে, তা তামাকজনিত স্বাস্থ্য ব্যয়ের মাত্র ৭৫ শতাংশ। এমনকি, কার্যকর করারোপের মাধ্যমে সিগারেট বিক্রি থেকে সরকারের রাজস্ব আয় ১১ থেকে ২৮ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানো সম্ভব।

১৩ থেকে ১৫ বছর বয়সী শিক্ষার্থীদের মধ্যে তামাক ব্যবহারের হার ৯ দশমিক ২ শতাংশ

অভিনেত্রী-অভিনেতাকে সিগারেট খেতে দেখেও অনেকে আকৃষ্ট হচ্ছে

মাদকদ্রব্য ও নেশা নিরোধ সংস্থার (মানস) সভাপতি অধ্যাপক ডা. অরূপ রতন চৌধুরী বলেন, এসডিজি-৩ বাস্তবায়নে ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত হওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে বাংলাদেশের। এরই মধ্যে ২০০৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত তামাকের ব্যবহারের পরিমাণ ৫৪ শতাংশ থেকে নেমে এসেছে ৪৭ শতাংশে। তবে এই গতিতে এগোলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) নির্ধারিত ২০৩০ সালের মধ্যে ৩০ শতাংশে তামাক ব্যবহারের হার হ্রাসের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ সম্ভব নয়।

তিনি বলেন, তামাকপণ্যের প্রচারের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও কোম্পানিগুলো বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে তাদের কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। নাটক, সিনেমা ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সিগারেটের ব্যবহার বেড়েছে। পছন্দের অভিনেত্রী ও অভিনেতাকে সিগারেট খেতে দেখে মানুষ আকৃষ্ট হচ্ছে। বর্তমানে মেয়েরাও ধূমপায়ী হয়ে উঠছে। বিভিন্ন রেস্টুরেন্টে তামাক কোম্পানিগুলো স্মোকিং কর্নার করে দিচ্ছে। বিক্রেতাদের বিভিন্ন সুবিধা দিয়ে কৌশলে সিগারেটের প্রচার চালাচ্ছে। এর থেকে পরিত্রাণ পেতে তামাক কোম্পানিগুলোর এসব অপকৌশল বন্ধ করা ও কঠোরভাবে তামাকবিরোধী আইন প্রয়োগের ব্যবস্থা করতে হবে।

ডা. অরূপ রতন চৌধুরী আরও বলেন, ভেজালবিরোধী অভিযান মিডিয়াতে প্রচার পেলেও তামাক পণ্যের বিরুদ্ধে অভিযান সেভাবে প্রচার পাচ্ছে না। মিডিয়াতে তামাকবিরোধী প্রচারণা বাড়াতে হবে।

আরও পড়ুন:

লাভের আশায় তামাক চাষ, বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি জামালপুরে তামাক চাষ কমলেও ছাড়তে পারেননি অনেকে তামাকজনিত রোগে মৃত্যু সাধারণ নয় বরং হত্যা: মৎস্য উপদেষ্টা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. রুমানা হক বলেন, মাথাপিছু আয় যেভাবে বাড়ছে তার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে তামাক কর বাড়াতে হবে। জর্দা ও গুলের মতো অধূমপায়ী পণ্যে নজরদারির অভাব রয়েছে। করও সংগ্রহ করা হচ্ছে কম। তামাকপণ্য থেকে যে কর আহরণ করা হয়, জর্দা ও গুল থেকে আসে মাত্র ০.১৪ শতাংশ। এটি দেখেই বোঝা যায় এমন সব পণ্য প্রাধান্য পাচ্ছে না। ফলে বাসা বাড়িতে এগুলো উৎপাদন হচ্ছে। সেই সঙ্গে ১০ গ্রাম জর্দা ৪৮ টাকায় ও গুল ২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এতো কম টাকায় এসব পণ্য মানা যায় না। এক্ষেত্রে কম্প্রিহেনসিভ ট্যাক্স পলিসি প্রয়োজন। কারণ এসব পণ্যের কর বাড়লে, মানুষ কম কিনবে। এতে কর আহরণ বৃদ্ধির পাশাপাশি জনস্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটবে।

বছরে ১৪-১৫ লাখ মানুষ চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে যায়

স্বাস্থ্য সংস্কার কমিশনের সদস্য ও স্কয়ার হাসপাতালের ক্যানসার সেন্টারের কো-অর্ডিনেটর অধ্যাপক ডা. সৈয়দ আকরাম হোসেন বলেন, কর প্রস্তাবনা তামাক পণ্যেও ক্ষতি থামাতে যথেষ্ট নয়। এটি একটি অংশ মাত্র। জনস্বাস্থ্যের জন্য এরকম মারাত্মক জিনিস পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া উচিত। কারণ তামাক পণ্যে উপকারের চেয়ে অপকার বেশি।

নিষেধাজ্ঞা থাকলেও কোম্পানিগুলো বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে। তামাক পণ্যের বিরুদ্ধে অভিযান সেভাবে প্রচার পাচ্ছে না। মিডিয়াতে তামাকবিরোধী প্রচারণা বাড়াতে হবে। -মানস সভাপতি অধ্যাপক ডা. অরূপ রতন চৌধুরী

তিনি বলেন, তামাক পণ্যের কারণে ঘুরেফিরে মানুষ ক্যানসার, কিডনিজনিত, হার্টেরসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। প্রতিবছর ১৪-১৫ লাখ মানুষ চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে যাচ্ছে। শুধু চিকিৎসার জন্য প্রতিবছর ৬ বিলিয়ন ডলার অর্থ দেশের বাইরে চলে যাচ্ছে। তামাক নিয়ন্ত্রণে জোর দিলে এটি কমে আসবে।

তিনি আরও বলেন, শুধু চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে প্রতিবছর ০.০৩ শতাংশ মানুষ ভূমিহীন হয়ে পড়ছে। তামাকের কারণে দারিদ্রসীমার নিচে চলে যাচ্ছে অসংখ্য মানুষ।

কম্প্রিহেনসিভ ট্যাক্স পলিসি প্রয়োজন, কেননা এসব পণ্যের কর বাড়লে, মানুষ কম কিনবে। -অধ্যাপক ড. রুমানা হক

বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস

‘তামাক কোম্পানির কূটকৌশল উন্মোচন করি, তামাক ও নিকোটিনমুক্ত বাংলাদেশ গড়ি’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে উদযাপিত হচ্ছে বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস-২০২৫। আজ শনিবার (৩১ মে) দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য বিভাগের আওতাধীন জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেল (এনটিসিসি) বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এছাড়াও তামাক প্রতিরোধে কাজ করা বিভিন্ন সংস্থা দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছে।

প্রতি বছর ৩১ মে বিশ্বজুড়ে এই দিনটি পালন করা হয়। বিশ্বজুড়ে ২৪ ঘণ্টা সময়সীমা ধরে তামাক সেবনের সব প্রক্রিয়া থেকে বিরত থাকাকে উৎসাহিত করার উদ্দেশ্যে দিবসটি প্রচলিত। এছাড়াও দিবসটির উদ্দেশ্য হচ্ছে, তামাক ব্যবহারের ব্যাপক প্রাদুর্ভাব এবং স্বাস্থ্যের ওপর এর নেতিবাচক প্রভাবের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ।

টিটি/এসএনআর/এমএস