শিক্ষা

বৈরি আবহাওয়ায়ও ভর্তি পরীক্ষা, উৎকণ্ঠায় সাড়ে ৫ লাখ ভর্তিচ্ছু

বৈরি আবহাওয়ায়ও ভর্তি পরীক্ষা, উৎকণ্ঠায় সাড়ে ৫ লাখ ভর্তিচ্ছু

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক প্রথমবর্ষের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে আগামীকাল শনিবার (৩১ মে)। দেশের ৬৪টি জেলা শহরে ১৩৭টি কেন্দ্রে এ ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হবে। এদিন বেলা ১১টা থেকে ১২টা পর্যন্ত এক ঘণ্টার পরীক্ষা হবে। এতে অংশ নেবেন সাড়ে ৫ লাখেরও বেশি শিক্ষার্থী।

Advertisement

তবে বৈরি আবহাওয়া ও ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কার মধ্যে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্তে কর্তৃপক্ষ অনড় থাকায় ক্ষোভ জানিয়েছেন ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা। বিশেষ করে উপকূলীয় এলাকার শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা পরীক্ষার তারিখ পরিবর্তনের দাবি জানিয়েছেন।

এদিকে, ভর্তি পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে আয়োজনের লক্ষ্যে বৃহস্পতিবার (২৯ মে) রাতে এক ভার্চুয়াল সভা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সভায় উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম আমানুল্লাহ বলেন, প্রায় এক যুগ পর শনিবার জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এ পরীক্ষায় সাড়ে ৫ লাখের বেশি পরীক্ষার্থী অংশ নেবে। আমরা সুষ্ঠুভাবে এ পরীক্ষা শেষ করতে চাই।

উপকূলের শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ, তারিখ পরিবর্তনের দাবিএদিকে, সারাদেশে বৈরি আবহাওয়া বিরাজমান। উপকূলীয় অঞ্চলে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত বলবৎ রেখেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। সাগরদ্বীপ ও খেপুপাড়ার মধ্যদিয়ে পশ্চিমবঙ্গ-বাংলাদেশ উপকূল অতিক্রম করছে গভীর নিম্নচাপ।

Advertisement

বর্তমানে এটি সাতক্ষীরা ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এমন পরিস্থিতি চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরগুলোকে সর্তক অবস্থায় রাখা হয়েছে।

আবহাওয়ার এমন পরিস্থিতিতে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিচ্ছু পরীক্ষার্থীরা। বিশেষ করে উপকূলীয় এলাকার প্রার্থীরা বেশি শঙ্কা জানিয়েছেন। তাদের অনেকে ঘরছাড়া। তাছাড়া দিনভর থেমে থেমে বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়ায় বিপাকে খোদ রাজধানী ঢাকার পরীক্ষার্থীরা।

নোয়াখালীর হাতিয়ার অবস্থা খুবই খারাপ। সেখানকার পরীক্ষার্থী হাবিবুর রহমান বলেন, শুক্রবার সকাল থেকে প্রচুর বৃষ্টি হচ্ছে। আমরা বাড়ি থেকে বের হতে পারছি না। চারদিকে পানি। শনিবারও পরিস্থিতির খুব বেশি উন্নতি হবে বলে খবর পাচ্ছি না। তাহলে বাড়ি থেকে বেরিয়ে জেলা শহরে পরীক্ষা দিতে যাবো কীভাবে? আমরা চাই, পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়া হোক।

প্রবল বৃষ্টির কারণে ঢাকার পরীক্ষার্থীরাও ভর্তি পরীক্ষা পেছানোর দাবি তুলেছেন। ঢাকায় আসন পড়া সাব্বির আহমেদ জাগো নিউজকে বলেন, যেভাবে বৃষ্টি হচ্ছে, তাতে কেন্দ্রে পৌঁছানো কষ্টসাধ্য হবে। ঢাকার রাস্তায় পানি জমে গেছে। যানবাহন চলাচলও কম। ঢাকাতেই যদি এ অবস্থা হয়, তাহলে উপকূলীয় এলাকার অবস্থা আরও খারাপ। সার্বিক দিক বিবেচনায় এক সপ্তাহের জন্য হলেও পরীক্ষা পেছানো উচিত।

Advertisement

খুলনার কয়রার একজন শিক্ষক নাম প্রকাশ না করে জাগো নিউজকে বলেন, ‘সব বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা শেষ। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় এখন শিক্ষার্থীদের শেষ ভরসা। যাদের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার মতো আর্থিক সক্ষমতা নেই, তারা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য মুখিয়ে আছে। এমন পরিস্থিতিতে একজন শিক্ষার্থীও যদি বৈরী আবহাওয়ার কারণে পরীক্ষায় অংশ নিতে না পারে, তাহলে তা দুঃখজনক হবে। এর দায় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে নিতে হবে।

জানতে চাইলে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন ড. মো. আশেক কবির চৌধুরী শুক্রবার সকালে জাগো নিউজকে বলেন, আমরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। এখন পর্যন্ত আমাদের সিদ্ধান্ত অপরিবর্তিত রয়েছে। উপাচার্যের নির্দেশনা পেলে তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

এএএইচ/এমকেআর/এমএস