সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত বিচারক পদে নিয়োগে আগ্রহী ব্যক্তিদের কাছ থেকে দরখাস্ত আহ্বান করে গণবিজ্ঞপ্তি চ্যালেঞ্জ করে রিট আবেদন দায়ের করা হয়েছে।
Advertisement
বুধবার (২৮ মে) জনস্বার্থে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার এম এ সাঈদ খান হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখার সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. আবু সাইদ খান এই রিট করেন।
বৃহস্পতিবার (২৯ মে) রিটকারী আইনজীবী নিজেই বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগ অধ্যাদেশ, ২০২৫ এবং গণবিজ্ঞপ্তি চ্যালেঞ্জ করে রিট দায়ের করা হয়েছে।
তিনি জানান, সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগ অধ্যাদেশ, ২০২৫ সংবিধানের ২৭, ৩১, ৪৪, ৯৫ ও ১১০ অনুচ্ছেদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। তাই পুরো অধ্যাদেশ চ্যালেঞ্জ করেছি। এছাড়া গত ২৮ মে প্রকাশিত হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত বিচারক পদে নিয়োগের গণবিজ্ঞপ্তির কার্যকারিতাও স্থগিত চেয়েছি।
Advertisement
ব্যারিস্টার এম এ সাঈদ খান বলেন, সুপ্রিম কোর্ট বারের সভাপতি ও বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যানকে আইনজীবীদের প্রতিনিধি হিসেবে সুপ্রিম জুডিসিয়াল অ্যাপয়েন্টমেন্ট কাউন্সিলে রাখার নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।
রিটে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক সচিব, জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সচিব, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব ও রাষ্ট্রপতির সামরিক সচিবকে বিবাদী করা হয়েছে।
এর আগে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন এ সংক্রান্ত গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। গণবিজ্ঞপ্তিতে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত বিচারক পদে নিয়োগে আগ্রহী ব্যক্তিদের কাছ থেকে দরখাস্ত আহ্বান করা হয়েছে।
২০২৫ সালের সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগ অধ্যাদেশের ৭ (ক) ধারা অনুসারে অতিরিক্ত বিচারক পদে নিয়োগের উদ্দেশ্যে এই দরখাস্ত আহ্বান করা হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে বুধবার (২৮ মে) এই গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়।
Advertisement
সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগে বিচারক নিয়োগের লক্ষ্যে উপযুক্ত ব্যক্তি বাছাই করে প্রধান বিচারপতি কর্তৃক রাষ্ট্রপতিকে পরামর্শ দিতে ‘সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগ অধ্যাদেশ-২০২৫’ শিরোনামে অধ্যাদেশ গত ২১ জানুয়ারি গেজেট আকারে জারি করে আইন মন্ত্রণালয়।
অধ্যাদেশের ৩ ধারা অনুসারে, সুপ্রিম কোর্টের বিচারক পদে নিয়োগের নিমিত্ত বা পরামর্শ প্রদান প্রক্রিয়ায় প্রধান বিচারপতিকে সহায়তা করার উদ্দেশ্যে উপযুক্ত ব্যক্তি বাছাইপূর্বক সুপারিশ করার জন্য একটি স্থায়ী কাউন্সিল থাকবে। আর তা ‘সুপ্রিম জুডিশিয়াল অ্যাপয়েন্টমেন্ট কাউন্সিল’ নামে অভিহিত হবে। অধ্যাদেশের বিধান অনুসারে ইতিমধ্যে ‘সুপ্রিম জুডিশিয়াল অ্যাপয়েন্টমেন্ট কাউন্সিল’ গঠিত হয়েছে। প্রধান বিচারপতি এই কাউন্সিলের চেয়ারপারসন।
হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত বিচারক নিয়োগবিষয়ক সুপারিশ সম্পর্কে অধ্যাদেশের ৭ ধারায় বলা রয়েছে। ৭ (ক) ধারা অনুসারে কাউন্সিল উপযুক্ত ব্যক্তিদের প্রয়োজনীয় তথ্য নিজ উদ্যোগে সংগ্রহ করতে পারবে। এ ছাড়া ফরমে প্রার্থীদের কাছ হতে গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে দরখাস্ত আহ্বান করবে।
গণবিজ্ঞপ্তির ভাষ্য, ২০২৫ সালের সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগ অধ্যাদেশের ৭ ধারা অনুযায়ী হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত বিচারক পদে নিয়োগের উদ্দেশ্যে সুপ্রিম জুডিশিয়াল অ্যাপয়েন্টমেন্ট কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত মোতাবেক ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্ট সব পর্যায়ে বিজ্ঞপ্তি বা নোটিশ প্রদান করা হলে অনেক আগ্রহী প্রার্থী নির্ধারিত ফরমে দরখাস্ত দাখিল করেছেন। সুপ্রিম জুডিশিয়াল অ্যাপয়েন্টমেন্ট কাউন্সিল ওই দরখাস্তগুলোর পাশাপাশি হাইকোর্ট বিভাগে অতিরিক্ত বিচারক পদে নিয়োগের উদ্দেশ্যে সর্বসম্মতভাবে গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশের মাধ্যমে নির্ধারিত ফরমে প্রার্থীদের নিকট থেকে দরখাস্ত আহ্বান করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।
হাইকোর্ট বিভাগের রেজিস্ট্রার মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান সিদ্দিকীর সই করা গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এ অবস্থায় সুপ্রিম জুডিশিয়াল অ্যাপয়েন্টমেন্ট কাউন্সিল বিচারক নিয়োগ অধ্যাদেশের ৭ ধারা অনুযায়ী, হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত বিচারক পদে নিয়োগবিষয়ক সুপারিশ প্রণয়নের উদ্দেশ্যে উপযুক্ত ব্যক্তিদের তথ্য সংগ্রহের সুবিধার্থে সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগ অধ্যাদেশ অনুসরণ করে আগ্রহী প্রার্থীদের প্রয়োজনীয় তথ্যাদির সংযুক্তি ও পাসপোর্ট সাইজের এক কপি ছবিসহ নির্ধারিত ফরমে দরখাস্ত আগামী ২২ জুনের মধ্যে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল কার্যালয়ে ডাকযোগে বা সরাসরি পাঠানোর জন্য গণবিজ্ঞপ্তি জারি করা হলো।
এর আগে নির্ধারিত ফরমে দরখাস্ত দাখিল করেছেন, তাদের পুনরায় দরখাস্ত দাখিলের আবশ্যকতা নেই বলে গণবিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
এফএইচ/জেএইচ/জিকেএস