কুয়ালালামপুর বিমান বন্দর কর্তৃপক্ষ গত ৪ মাসে ৩ হাজার ৬৭৩ জন বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠিয়েছে। সিন্ডিকেট চক্রের তৎপরতা বেড়ে যাওয়ায় কুয়ালালামপুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে কড়া নজরদারি বৃদ্ধি করেছে বর্ডার কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রোটেকশন এজেন্সি (এমসিবিএ)।
Advertisement
এমসিবিএ জানিয়েছে, সিন্ডিকেটগুলো বিভিন্ন কৌশল ব্যবহার করছে, এমনকি কিছু অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজশেও এ কাজ চলছে। বিদেশিরা দলে দলে অথবা অন্যান্য বিদেশি যাত্রীদের মাঝে মিশে বিমানবন্দরের আগমন হলে ঘোরাফেরা করে।
সিন্ডিকেট এজেন্টদের কাছ থেকে ‘নিরাপদ পথ’ ব্যবহার করে ইমিগ্রেশন চেক পেরোনোর জন্য ‘সবুজ সংকেত’ পাওয়ার অপেক্ষায় তারা দীর্ঘ সময় ধরে বিমানবন্দরে অবস্থান করতে রাজি থাকে। এই প্রক্রিয়াকে বলা হয় ‘কাউন্টার-সেটিং’।
চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এপ্রিল মাস পর্যন্ত কুয়ালালামপুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর টার্মিনাল ১ এবং ২-এ মোট ৮ হাজার ৭৯৬টি প্রবেশ প্রত্যাখ্যানের নোটিশ জারি করা হয়েছে।
Advertisement
এদের মধ্যে বাংলাদেশের নাগরিক রয়েছে ৩ হাজার ৬৭৩ জন, পাকিস্তানের এক হাজার ৭৪৯ জন, ভারতের এক হাজার ৫৯৮ জন, ইন্দোনেশিয়ার ৭১৭ জন এবং ভিয়েতনামের ১৯৭ জন। প্রবেশ প্রত্যাখ্যান হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ৮৭.২৩ শতাংশ পুরুষ এবং বাকি ১২.৮১ শতাংশ নারী।
আরও পড়ুন মালয়েশিয়ার কেলানতানে ১৩ বাংলাদেশি আটক দূতাবাস কর্মকর্তাদের সঙ্গে খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সদস্যদের সভা কুয়ালালামপুরে বাংলাদেশিসহ ১৭৮৯ অবৈধ অভিবাসী আটকএমসিবিএ-এর একটি নজরদারি অভিযানে দেখা গেছে, কিছু বিদেশি প্রায় দুই দিন ধরে আগমন হলেই অবস্থান করছিল। বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর, এই বিদেশি দল পর্যটক সেজে বিভিন্ন এলাকায় ঘোরাফেরা করে, বিশেষ করে যেখানে বসার জায়গা, ফোন চার্জ করার সুবিধা এবং টয়লেট আছে, যেন তারা প্রতিদিনের নজরদারি চালানো আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তাদের চোখে ধুলো দিতে পারে। যখন তাদের কাছে যাওয়া হয়, তখন কেউ কেউ পালানোর চেষ্টা করে অথবা চিৎকার করে এবং পাসপোর্ট দেখাতে অস্বীকার করে গোলমালের সৃষ্টি করে। এই ঘটনাগুলো মালয়েশিয়ায় অবৈধ অভিবাসন এবং সীমান্ত সুরক্ষায় নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে।
এমসিবিএ-এর কমান্ডার ইব্রাহিম মোহাম্মদ ইউসুফ জানিয়েছেন, বৈধ প্রবেশ শর্তাবলি মেনে না চলা বিদেশিদের দেশে আনার প্রচেষ্টা ক্রমাগত ঘটছে। সিন্ডিকেটগুলো বিভিন্ন পদ্ধতি ব্যবহার করছে এবং দুর্বলতার সুযোগ নিচ্ছে, যার মধ্যে অসৎ কর্মকর্তাদের যোগসাজশও রয়েছে।
ইব্রাহিম আরও বলেন, ‘এই বিদেশিদের অনুমোদিত সময়ের বেশি আগমন হলে ঘোরাফেরা করতে দেখা গেছে, ইমিগ্রেশন কাউন্টারে রিপোর্ট না করেই। তারা পরিদর্শনের হাত থেকে বাঁচতে বা এজেন্ট বা মধ্যস্থতাকারীদের জন্য অপেক্ষা করতে নির্দিষ্ট স্থানে জড়ো হয়, যেন তাদের অবৈধ প্রবেশের ব্যবস্থা করা যায়।
Advertisement
ইব্রাহিম আরও যোগ করেন, কিছু বিদেশি দক্ষতা প্রশিক্ষণ, ক্রীড়া ইভেন্ট বা পর্যটন প্যাকেজের মতো বৈধ কার্যকলাপের আড়ালে মালয়েশিয়ার তৃতীয় পক্ষের আমন্ত্রণ বা সহযোগিতার মাধ্যমে দেশে প্রবেশের চেষ্টা করছে। সিন্ডিকেট বা দেশের প্রবেশ পথগুলোর যে কোনো ধরনের অপব্যবহার সংক্রান্ত গোয়েন্দা তথ্যে দ্রুত সাড়া দেওয়ার জন্য আন্তঃএজেন্সি সহযোগিতা আরও জোরদার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
এমআরএম/জিকেএস