জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামের মুক্তির প্রতিবাদ ও রাজশাহীতে গণতান্ত্রিক ছাত্রজোটের ওপর হামলার নিন্দায় চট্টগ্রামে আয়োজিত মানববন্ধনে হামলার ঘটনা ঘটেছে। সেখানে আহত এক নারীকে লাথি মারার ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দ্রুত ভাইরাল হয়েছে।
Advertisement
অভিযুক্ত ব্যক্তি ছাত্রশিবিরের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ করেছেন যুবদল সভাপতি আব্দুল মোনায়েম মুন্না।
বৃহস্পতিবার (২৯ মে) দুপুরে নয়াপল্টনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই অভিযোগ করেন।
জানা গেছে, হামলার অভিযুক্ত আকাশ চৌধুরী সাতকানিয়া উপজেলার বসিন্দা। যদিও তিনি জামায়াত বা ইসলামী ছাত্রশিবিরের কোনো পদে নেই বলে দলটির নেতারা দাবি করেছেন। তবে আকাশের সঙ্গে চট্টগ্রাম মহানগর জামায়াতের আমির শাহজাহান চৌধুরীর ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এর আগে আকাশের বিরুদ্ধে মুরাদপুরে সুন্নিদের কর্মসূচিতে হামলার অভিযোগ ছিল।
Advertisement
এ ঘটনায় যুবদল সভাপতি আব্দুল মোনায়েম মুন্না বলেন, ‘শিবিরের যে ছেলেটা ওই ভদ্র মহিলাকে লাথি দিয়েছে, তার নাম সম্ভবত আকাশ চৌধুরী। শিবিরের এই দ্বিচারিতা সবাইকে জানানো উচিত।’
তিনি আরও বলেন, ‘গত ১৫ বছর ৭ মাস শিবির আওয়ামী লীগের ফ্যাসিস্ট শাসনের সঙ্গে ছিল, আত্মগোপনে ছিল। তাদের মোনাফেকি রাজনীতিকে দেশ প্রত্যাখ্যান করেছে।’
মুন্না যোগ করেন, ‘তাদের মুরব্বি সংগঠন কোনো নির্বাচন চায় না, কিন্তু নির্বাচন বাধ্যতামূলক। মানুষের অধিকার ফিরিয়ে আনতে আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছি।’
সংবাদ সম্মেলনে যুবদলের সভাপতি মুন্না আরও বলেন, তরুণদের ভোটাধিকার হরণ আজও একটি জাতীয় সংকট। এটি শুধু একটি সাংবিধানিক অধিকার লঙ্ঘনের বিষয় নয়, বরং একটি প্রজন্মকে রাষ্ট্র পরিচালনায় অংশগ্রহণের মৌলিক সুযোগ থেকে বঞ্চিত করার নিষ্ঠুর উদাহরণ।
Advertisement
তিনি বলেন, কর্মসূচির মূল উদ্দেশ্য ছিল তরুণদের সৃজনশীলতা, দক্ষতা ও ভাবনা কাজে লাগিয়ে রাজনীতি ও অর্থনীতির নতুন দিগন্ত উন্মোচন এবং তা জাতীয় উন্নয়ন কৌশলের সঙ্গে সংযুক্ত করা। লাখ-লাখ মানুষের সরব উপস্থিতিতে এবং তরুণদের প্রাণবন্ত অংশগ্রহণে কর্মসূচিগুলো অত্যন্ত সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। তরুণদের রাজনৈতিক অধিকার ও অংশগ্রহণের প্রতি অঙ্গীকার এবং গণতান্ত্রিক ভবিষ্যতের জন্য তাদের দৃঢ় সংকল্প এই আটটি অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে তা দৃঢ়ভাবে প্রতিফলিত হয়েছে। কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ ও সমর্থনের জন্য আমরা দেশের সব শ্রেণি-পেশার মানুষ-বিশেষ করে তরুণ শিক্ষার্থী, শিক্ষক, শ্রমিক, চাকরিজীবী, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, উদ্যোক্তা, পেশাজীবী ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। দল-মত-শ্রেণি ও পেশার পার্থক্য ভুলে যে ঐক্য, সাহস ও সচেতনতা জনগণ দেখিয়েছে তা আমাদের এই উদ্যোগকে সাফল্যমণ্ডিত করেছে এবং ভোটাধিকার পুনরুদ্ধারের মাধ্যমে গণতন্ত্র ও ন্যায়ভিত্তিক রাষ্ট্র গঠনের সংগ্রামে নতুন অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে।
এসময় ঢাকা ও অন্যান্য শহরে তারুণ্যের উত্তাল তরঙ্গে লাখ-লাখ মানুষের উপস্থিতির ফলে নগরবাসীর যে সাময়িক দুর্ভোগ হয়েছে, বিশেষ করে যানজটের কারণে, তার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন যুবদল সভাপতি।
তিনি বলেন, তরুণদের ভোটাধিকার হরণ আজও একটি জাতীয় সংকট। এটি শুধু একটি সাংবিধানিক অধিকার লঙ্ঘনের বিষয় নয়, বরং একটি প্রজন্মকে রাষ্ট্র পরিচালনায় অংশগ্রহণের মৌলিক সুযোগ থেকে বঞ্চিত করার নিষ্ঠুর উদাহরণ।
মুন্না বলেন, দেশজুড়ে কর্মসূচির মাধ্যমে শুধু গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের একটি জাতীয় ঐক্যের ইঙ্গিত পাইনি, বরং স্পষ্টভাবে দেখতে পেয়েছি নতুন প্রজন্মের সেই লড়াইয়ের পুনর্জাগরণ-যেখানে তরুণরা নিজেদের অধিকার রক্ষায় আবারও সংগঠিত হচ্ছে, কথা বলছে, এবং নিজ অবস্থান থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছে। তারা জানে ভোটাধিকার শুধু ভোট দেওয়ার বিষয় নয়-এটি ভবিষ্যৎ নির্মাণের শক্তি। এই জাগরণই একদিন একটি ন্যায়ভিত্তিক, গণতান্ত্রিক এবং উদার রাষ্ট্রব্যবস্থার ভিত্তি রচনা করবে।
কেএইচ/ইএ/এমআইএইচএস/জিকেএস