অস্ত্র জমা না দেওয়ায় যশোরের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদারের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা হয়েছে। লাইসেন্সকৃত আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স বাতিল হওয়ার পর তা থানায় জমা না দিয়ে হেফাজতে রাখার অভিযোগে এ মামলা করা হয়। তবে তার পরিবারের দাবি ৫ আগস্ট ওই অস্ত্র শাহীন চাকলাদারের বাড়ি থেকে লুট হয়েছে। এ বিষয়ে থানায় এজাহারও দাখিল করা আছে।
Advertisement
মঙ্গলবার (২৭ মে) মধ্যরাতে কোতোয়ালি থানার এসআই সাইফুল ইসলাম মামলাটি করেন।
পুলিশ জানিয়েছে, সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ২০২৪ সালের ৪ সেপ্টেম্বর থেকে শাহীন চাকলাদারের লাইসেন্সকৃত আগ্নেয়াস্ত্রের বৈধতা স্থগিত করা হয়। তাকে ৩ সেপ্টেম্বরের মধ্যে আগ্নেয়াস্ত্র ও গুলি সংশ্লিষ্ট থানায় জমা দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তিনি নির্দেশনা অমান্য করে ৫ আগস্ট থেকে অস্ত্রসহ পলাতক রয়েছেন। গত ৩০ সেপ্টেম্বর কোতোয়ালি মডেল থানার এসআই তারেক মোহাম্মদ নাহিয়ান ওই আগ্নেয়াস্ত্র জমা দেওয়া হয়েছে কি না তা যাচাই করতে গেলে স্থানীয় সূত্রে জানতে পারেন, শাহীন চাকলাদার গত বছরের ৫ আগস্ট থেকে ওই অস্ত্র নিজ হেফাজতে রেখে আত্মগোপনে রয়েছেন।
তবে শাহীন চাকলাদারের পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, গত ৫ আগস্ট শাহীন চাকলাদারের বাড়িতে গানপাউডার দিয়ে আগুন ধরিয়ে লুটপাট করা হয়। ওই সময় অস্ত্রটি খোয়া যায়। ওই ঘটনায় ১৮ আগস্ট শাহীন চাকলাদারের চাচাতো ভাই তৌহিদ চাকলাদার ফন্টু যশোর কোতোয়ালি মডেল থানায় এজাহার দাখিল করেন।
Advertisement
এজাহারে তিনি উল্লেখ করেন, ৫ আগস্ট তার চাচাতো ভাই শাহীন চাকলাদারের নামে লাইসেন্স করা এনপিবি পিস্তল যার নং-৬৯৮৮৬ এবং পিস্তলের লাইসেন্স যার নং-০৮/এমএ/২০০৯ সহ ৫০ রাউন্ড গুলি ও ২টি ম্যাগাজিনসহ তার পুরাতন কসবা কাঁঠালতলার বসতবাড়ি থেকে লুট করা হয়েছে। ওইদিন কাঁঠালতলার বাড়ি ও পার্টি অফিসে অজ্ঞাত ১৫০/২০০ সন্ত্রাসী অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে গান পাউডার ও পেট্রোল দিয়ে শাহীন চাকলাদারের বাড়ি ও অফিসে আগুন দেয়। এসময় বাড়িতে থাকা স্বর্ণালংকার নগদ টাকাসহ অন্যান্য মালামাল লুটপাট ও ভাঙচুর করে সন্ত্রাসীরা। বাড়িতে থাকা গাড়ি ও দলিলপত্রসহ দরকারি কাগজপত্র আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
এদিকে পুলিশের দায়েরকৃত মামলায় উল্লেখ করা হয়, সরকারের আদেশ অমান্য করে অস্ত্র হেফাজতে রাখা এবং আত্মগোপনে থাকা শাহীন চাকলাদার রাষ্ট্রের নিরাপত্তার জন্য হুমকি হতে পারেন। তার হেফাজতে থাকা অস্ত্রটি সন্ত্রাসী বা অবৈধ কাজে ব্যবহৃত হতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হয়েছে।
এ বিষয়ে কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসনাত খান জানান, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী মামলা গ্রহণ করা হয়েছে। মামলাটি তদন্তে এসআই অভিজিৎ সিংহ কাজ করছে।
মিলন রহমান/এফএ/এএসএম
Advertisement