আইন-আদালত

রিমান্ডে নামাজের ব্যবস্থা রাখার আকুতি সুব্রত বাইনের

রিমান্ডে নামাজের ব্যবস্থা রাখার আকুতি সুব্রত বাইনের

হাতিরঝিল থানার অস্ত্র আইনের মামলায় শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন ওরফে মো. ফাতেহ আলীর (৬১) আটদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

Advertisement

বুধবার (২৮ মে) বিকেলে ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাকির হোসাইনের আদালত এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এছাড়াও ছয়দিনের রিমান্ডে যাওয়া তিন আসামি হলেন- আবু রাসেল মাসুদ ওরফে মোল্লা মাসুদ (৫৩), এম এ এস শরিফ (২৫) ও মো. আরাফাত ইবনে মাসুদ (৪৩)।

এদিন বিকেল ৩টা ৪৭ মিনিটে তাদের আদালতের এজলাসে হাজির করা হয়। এরপর কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। তখন কাঠগড়ার রডের সঙ্গে তার হাত হ্যান্ডকাফ দিয়ে বাঁধা ছিল। পরে বিকেল ৪টা ১০ মিনিটের দিকে তার রিমান্ড মঞ্জুর করে আদেশ দেন বিচারক।

এ সময় বিচারক উচ্চ আদালতের নির্দেশনা মোতাবেক সতর্কতার সঙ্গে আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশনা দেন। সুব্রত বাইন বিচারকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, স্যার, রিমান্ডে যেন আমার নামাজ পড়ার ব্যবস্থা রাখা হয়। এ সময় বিচারক বলেন, হ্যাঁ, নামাজের ব্যবস্থা করবে।

Advertisement

এদিন কাঠগড়ায় সাংবাদিকদের উদ্দেশ্য করে সুব্রত বাইন বলেন, এখন বলে আমি চাঁদাবাজি করি, ছিনতাই করি। আরে ভাই তদন্ত করে দেখেন কে আমার নাম ভাঙিয়ে চাঁদাবাজি করলো। এই আধুনিক যুগে যদি চাঁদাবাজ না ধরতে পারেন, তাহলে কী লাভ সাংবাদিকতা করে। আমার টাকা থাকলে আমি নিজেই একটা পত্রিকা খুলে নিতাম, টিভি খুলে নিতাম। কিন্তু আমার এত পাওয়ারের দরকার নেই।

এ সময় তিনি বলেন, আমি বাঁচার জন্য অস্ত্র রাখি। আমি যদি বলি অস্ত্র রাখি না, তাহলে এটা মিথ্যা হবে। লিয়াকত, মুরগি মিলন এরা আমার শত্রু ছিল। এদের সাথে যুদ্ধ করে আমি এই জায়গায় এসেছি।

তিনি বলেন, ২০২২ সালের রমজান মাসের ২৬ তারিখ ভারত থেকে আমাকে বাংলাদেশে ঢোকানো হয়। এরপর আমাকে আড়াই বছর আয়না ঘরে রাখা হয়েছে। আয়না ঘরে হাত-পা বেঁধে রাখা হয়েছে। পরে ৫ আগস্ট রাত ৩টার সময় আমাকে চোখ বেঁধে হাতে হ্যান্ডকাফ লাগিয়ে ছেড়ে দেয়।

আরও পড়ুন টাকা থাকলে আমি পত্রিকা-টিভি খুলতাম: সুব্রত বাইন আমি বাঁচার জন্য অস্ত্র রাখি: সুব্রত বাইন

তিনি উপস্থিত সাংবাদিকদের উদ্দেশ্য করে বলেন, সাংবাদিকরা যেন তদন্ত করে সত্যিটা লেখে। আমি যা সেটাই যেন লেখে। সত্যি কথা লিখবেন। হলুদ সাংবাদিক হবেন না। ৮৯ সাল থেকে আমার বিরুদ্ধে লিখছে। আপনারা কারো দ্বারা প্রভাবিত হয়ে কিছু লিখবেন না। সাংবাদিকদের বোঝা উচিত, তারা কী লিখছে, তার প্রভাবে কী হতে পারে। আমার ৬১ বছর বয়স হয়ে গেছে, পরিবার আছে।

Advertisement

পরে এজলাসে বিচারক আসলে কথা বলা বন্ধ করেন সুব্রত বাইন। এরপর শুনানি শেষে হাতিরঝিল থানার অস্ত্র মামলায় তার আটদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন বিচারক।

এর আগে গতকাল ২৭ মে সকালে সুব্রত বাইন ও মোল্লা মাসুদকে গ্রেফতার করে সেনাবাহিনী। পরে তার আরও দুই সহযোগী এম এ এস শরিফ (২৫) ও মো. আরাফাত ইবনে মাসুদকে (৪৩) গ্রেফতার করা হয়।

অভিযানের সময় তাদের কাছ থেকে পাঁচটি বিদেশি পিস্তল, ১০টি ম্যাগাজিন, ৫৩ রাউন্ড গুলি এবং একটি স্যাটেলাইট ফোন উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে হাতিরঝিল থানায় অস্ত্র আইনে মামলা দায়ের করা হয়।

এমআইএন/এমআরএম/এএসএম