ক্যাম্পাস

শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে উসকানিমূলক স্লোগান দিয়ে হামলা করে ছাত্রজোট

শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে উসকানিমূলক স্লোগান দিয়ে হামলা করে ছাত্রজোট

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) শাহবাগ বিরোধী ঐক্য আয়োজিত শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে উসকানিমূলক স্লোগান দিয়ে হামলা চালিয়েছে গণতান্ত্রিক ছাত্রজোটের নেতাকর্মীরা। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য বাম সংগঠনের নেতাকর্মীরাও এ হামলায় অংশ নেন।

Advertisement

বুধবার (২৮ মে) সকাল সাড়ে ১০টায় শাহবাগ বিরোধী ঐক্যের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করা হয়।

শাহবাগ বিরোধী ঐক্যের আহ্বায়ক মো. রাকিবুল ইসলাম সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘তথাকথিত গণতান্ত্রিক ছাত্রজোটের ব্যানারে বাম-শাহবাগী গোষ্ঠী সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় মশাল মিছিল ডাকে। যেকোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা এড়াতে আমাদের পূর্বঘোষিত কর্মসূচি কিছুটা বিলম্ব করি। যখন জানতে পারি তারা কর্মসূচি করছেন না তখন পরিবহন চত্বরের একটি ফাঁকা জায়গায় আমরা সমবেত হই। পরিবহন চত্বরে শাহবাগ বিরোধী ঐক্য’র সংগঠক ও নেতৃবৃন্দ যখন বক্তব্য দিচ্ছিলেন, ঠিক সেই মুহূর্তে বাম সংগঠনের গুটিকয়েকজন মশালধারী আমাদের শিক্ষার্থীদের রাজাকার, জামায়াত-শিবির বলে বুলিং করে। তারা স্লোগান দিয়ে বারবার মশাল নিয়ে আমাদের দিকে তেড়ে আসে। ইচ্ছে করেই একটি অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করে ভিকটিম কার্ড খেলার পুরোনো চেষ্টা চালায়। একপর্যায়ে আমাদেরকে লক্ষ্য করে ইট-পাথর নিক্ষেপ করে। ঢিলের আঘাতে আমাদের সহযোদ্ধা তারেক আহত হয়। এরপরই মূলত ঘটনার সূত্রপাত ঘটে। তাদের পূর্বঘোষিত মিছিল সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় হওয়ার কথা থাকলেও উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তা শুরু করে রাত সাড়ে ৮টায়।’

Advertisement

তিনি আরও বলেন, ‘শাহবাগে মব ক্রিয়েট করে দেশে হাসিনার ফ্যাসিবাদের বীজ রোপণ করেছিলো লাল সন্ত্রাসীরা। ইনসাফ ও ন্যায়ের লড়াইয়ে আঞ্জাম দিতে গতকাল রাবিতে সেই শাহবাগ তন্ত্রের বিরুদ্ধে আমরা শাহবাগ বিরোধী ঐক্য একত্রিত হয়েছিলাম। শাহবাগই মূলত হাসিনাকে স্বৈরাচারী হয়ে উঠতে সহযোগিতা করেছে। পাশাপাশি চব্বিশ পরবর্তী বাংলাদেশে রাজাকার, জামায়াত -শিবির ট্যাগ দিয়ে যারা দেশের নাগরিকদের নাগরিক অধিকার ও মানবিক অধিকারকে ভূলুণ্ঠিত করার চেষ্টা করবে তাদের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই চলতে থাকবে। তবে এ লড়াই হবে আইনি লড়াই, এ লড়াই হবে বিচারিক প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতার ভিত্তিতে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার লড়াই।’

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলও লাল বাহিনীর ফাঁদে পা দিয়ে বিবৃতি ও মিছিল করেছে বলে দাবি করে তিনি বলেন, ‘১৩ সালে শাহবাগে সৃষ্ট মবের পরিপূর্ণ বিরোধিতা করেছিল ছাত্রদল। শাহবাগ বিরোধী ঐক্যের অন্যতম নিয়ামক শক্তি হিসেবে আমরা ছাত্রদলকে পাশে পাবো ভেবেছিলাম। কিন্তু শাহবাগ নিয়ে ছাত্রদলের বর্তমান স্ট্যান্ড চরমভাবে প্রশ্নবিদ্ধ। অথচ এই শাহবাগই বিএনপির সালাহ উদ্দিন কাদের চৌধুরীসহ এর অঙ্গসংগঠনের অসংখ্য নেতাকর্মীদের ডিহিউম্যানাইজ করে কথিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলা সাজিয়ে ফাঁসির সম্মতি উৎপাদন করেছিল।’

এসময় ছাত্র মিশনের সভাপতি জি এ ছাব্বির বলেন, ‘আমরা প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। তারা বলেছে সরেজমিনে ঘটনার পর্যবেক্ষণ করেছে ও এ নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করে বিচারিক কার্যক্রম শুরু করা হবে। তারা (বাম) যখন প্রশাসন ভবনের মধ্যে ছিল তখন আমরা প্রশাসনের কাছে জানাই, আমরা ক্যাম্পাসের শৃঙ্খলা বজায় রাখতে চাই। আপনারা তাদের (বাম) ডাকেন আমরা তাদের সঙ্গে বসে মিউচুয়াল করতে চাই। ছাত্র উপদেষ্টা, প্রক্টর তাদেরকে অনেক অনুরোধ করেছে মিউচুয়াল করতে কিন্তু তারা রাজি হয়নি। আরেকটি খুব হাস্যকর বিষয় হচ্ছে, ছাত্রদল ক্যাম্পাসে এসে প্রক্টরের পদত্যাগের দাবি করে। যেখানে সমস্যা হয়েছে বামদের সঙ্গে আমাদের, সেখানে ছাত্রদলের এ ধরনের দাবি হাস্যকর।’

এসময় বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের আহ্বায়ক মো. মাহফুজার রহমান, সাবেক সমন্বয়ক মো. নুরুল ইসলাম শহিদ, ছাত্র মিশনের সদস্য সচিব জসীম রানা উপস্থিত ছিলেন।

Advertisement

মনির হোসেন মাহিন/এমএন/এএসএম