রপ্তানি খরচ কমাতে কমাতে বিমান ভাড়া কমানোর তাগিদ দিয়েছেন কৃষি উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। রপ্তানিকারদের অভিযোগ রপ্তানি পণ্যের বিমান ভাড়া বেশি। এর পরিপ্রেক্ষিতে উপদেষ্টা বলেন, বিমান ভাড়া কমাতে বিমান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার কাছে ডিও লেটার বা আধা সরকারি সুপারিশপত্র পাঠাবেন। এসময় উপদেষ্টা কৃষি সচিবকে রপ্তানিকারকদের সঙ্গে নিয়ে বিমান মন্ত্রণালয়ে কথা বলার পরামর্শ দেন।
Advertisement
বুধবার (২৮ মে) সকালে খামারবাড়ি বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল (বিএআরসি) মিলনায়তনে আম রপ্তানি কার্যক্রম উদ্বোধন অনুষ্ঠানে আম চাষি, ব্যবসায়ী ও রপ্তানিকারকদের সমস্যার কথা শোনেন উপদেষ্টা।
উপস্থিত সরকারি কর্মকর্তাদেরও কৃষকদের ধোকা না দিয়ে সত্যিকার অর্থে কাজ করার কথা বলেন উপদেষ্টা। জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, প্যাচপোচ না দিয়ে কৃষকদের যেভাবে লাভবান করা যায় সে অনুযায়ী কাজ করুন।
কৃষি সচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ছাইফুল আলম ও রপ্তানিযোগ্য আম উৎপাদন প্রকল্পের পরিচালক আরিফুর রহমান।
Advertisement
এ সময় কৃষকরা আম উৎপাদন খরচ বাড়ছে এমনটা জানালে উপদেষ্টা বলেন, আমের বাগানে আদা হলুদ চাষ করুন, যেগুলো ছায়াযুক্তস্থানে হয়।
কৃষি কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে বলেন, নেদারল্যান্ড আম উৎপাদন করছে, আমদানি করছে আবার রপ্তানিও করছে। এখানে খুঁজলে প্রায় ৫০ জন পাওয়া যাবে, যারা নেদারল্যান্ডের মতো বড় বড় দেশ থেকে ডক্টরেট করে এসেছেন। কৃষকরা কীভাবে কম খরচে মানসম্পূর্ণ আম উৎপাদন করবে তা আপনারা শেখান। ডক্টরেট নিয়ে বসে থাকলে লাভ কি?
এ সময় নওগাঁ ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের দুজন কৃষক তাদের বক্তব্যে বলেন, আমাদের আমের ফ্রুটব্যাগ কিনতে প্রচুর খরচ হয়। এ ব্যাগে ১৫ শতাংশ ভ্যাট আছে, যা চীন থেকে আসে। প্রতিটি ব্যাগে চার টাকা খরচ। একটি বাগানে লাখ লাখ পিস ব্যাগ দরকার হয়। এর সমাধান চাই।
এ সময় উপদেষ্টা বলেন, দেশে কেন এ ব্যাগ তৈরি করা যাচ্ছে না। তিনি প্রকল্প পরিচালকসহ অন্যদের দেশে এ ব্যাগ তৈরির সম্ভব্যতা নিয়ে কাজ করতে বলেন।
Advertisement
এছাড়া কৃষিপণ্যের রপ্তানি প্রণোদনা ২০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশে আনা হয়েছে বলে সমস্যা হচ্ছে জানালে উপদেষ্টা বলেন, এ প্রণোদনা আগের অবস্থায় ফিরেয়ে আনতে চেষ্টা করবো।
রপ্তানিকারকরা উপদেষ্টাকে জানান, প্রণোদনা ১০ শতাংশও উঠাতে ৬ শতাংশ নানা খরচ হয়, থাকে ৪ শতাংশ।
এ সময় উপদেষ্টা বলেন, ঘুষের কারণে এটা হয়। আমরা ব্যবস্থা নেবো।
এ সময় এয়ারপোর্টে স্ক্যানার ও কৃষিপণ্যের জন্য আলাদা শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত পণ্য রাখার জায়গা তৈরির তাগিদ দেন রপ্তানিকারকরা।
কৃষি সচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান বলেন, এখন বাংলাদেশের আম বিশ্বের ৩৮টি দেশে যাচ্ছে। আর দুই-তিন বছরের মধ্যে আম রপ্তানিতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে। বিদেশে শুধু এথনিক মার্কেটে নয়, সারা বিশ্বের আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশের আম পৌঁছাতে আমরা কাজ করবো।
চাষিদের আমের দাম নিশ্চিত করতে তাগিদ দিয়ে সচিব বলেন, আমরা একটি পলিসির চিন্তা করছি, যাতে ভরা মৌসুমে বিদেশি ফল আমদানি নিরুৎসাহিত করা যায়। চাষিরা ভালো দাম পায়।
এনএইচ/এসএনআর/জেআইএম