আর মাত্র কয়েকদিন পর পবিত্র ঈদুল আজহা। কোরবানির ঈদ সামনে রেখে বড় সাইজের গরু প্রস্তুত করেছেন চুয়াডাঙ্গার অনেক খামারি। বিদেশি জাতের গরু লালনপালনে খরচ যেমন বেড়েছে, তেমনি নেই ক্রেতার আগ্রহ। হাট-বাজারে এখনও জমে ওঠেনি বেচা-কেনা। খামারে দেখা নেই ব্যাপারীরও। সব মিলিয়ে বড় গরু নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছেন জেলার খামারিরা।
Advertisement
জেলার সদর, আলমডাঙ্গা, দামুড়হুদা ও জীবননগর উপজেলার বিভিন্ন খামারে গিয়ে দেখা গেছে, প্রতিটি খামারে রয়েছে বড় গরু। তবে খামারিদের চোখে-মুখে নেই আনন্দ। উল্টো হতাশা আর শঙ্কা। কেউ বলছেন, গরু বিক্রি না হলে বড় লোকসানে পড়তে হবে তাদের।
খামারিরা বলছেন, প্রতিদিন প্রতিটি গরুর পেছনে প্রায় ১০০০ টাকা খরচ হচ্ছে। তার ওপর চিকিৎসা ও পরিচর্যার খরচ আলাদা। এসব খরচ পুষিয়ে নিতে হলে গরু বিক্রি করতেই হবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো আশার আলো দেখছেন না তারা। অনেকেই শেষ মুহূর্তের অপেক্ষা করছেন, হয়ত হাট জমবে, ব্যাপারীরা আসবে, দামও উঠবে।
আরও পড়ুন অনুমোদন ছাড়া রেললাইন সংলগ্ন এলাকায় পশুর হাট না বসানোর অনুরোধ কোরবানির পশু পরিবহনে এবারও বিশেষ ট্রেন স্কুলের মাঠ দখল করে পশুর হাট, নষ্ট হচ্ছে শিক্ষার পরিবেশচুয়াডাঙ্গা সদরের নিয়াজ উদ্দিন নামের এক খামারি জানান, এ বছর তিনি দেশি, সিন্ধি ও ফ্রিজিয়ান জাতের ১১টি গরু প্রস্তুত করেছেন। গত কয়েক বছর ধরে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে অক্লান্ত পরিশ্রম করে দেশি প্রযুক্তিতে গরুগুলো মোটাতাজা করেছেন। তবে বাজারে পশুর দাম নিম্নমুখী হওয়ায় ৩০-৩৫ লাখ টাকা মূল্যের গরুগুলো নিয়ে চিন্তিত তিনি।
Advertisement
আলমডাঙ্গা উপজেলার খামারি মুনছুর আলী জানান, গত কয়েক বছর ভারতীয় গরুর সরবরাহ কমায় জেলায় দেশি গরুর চাহিদা বেড়েছে। বেশ কয়েক বছর যাবত যত্ন করে ৮টি গরু বড় করেছেন তিনি। এখন ক্রেতা নেই। প্রতিটি গরু আনুমানিক ১৫-২০ মণ ওজনের। একটি গরুর দাম ৫-৭ লাখ টাকা হলেও অনেকে ২-৪ লাখ বলছেন।
চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এ বছর জেলায় গরু, ছাগল, ভেড়া ও মহিষ মিলিয়ে প্রায় ২ লাখ কোরবানির পশু প্রস্তুত হয়েছে। এর মধ্যে সাড়ে ৭৪ হাজার পশু উদ্বৃত্ত থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. সাহাবুদ্দিন বলেন, বাজারে এবার ছোট গরুর চাহিদা বেশি। মানুষের সাধ্যের মধ্যে থাকা পশু বেশি বিক্রি হচ্ছে। তাই খামারিদেরও ছোট আকারের গরু লালনে উৎসাহিত করছি।
এফএ/জিকেএস
Advertisement