প্রবাস

মিয়ানমার ইস্যুতে সমাধানের পথে হাঁটতে চায় মালয়েশিয়া

মিয়ানমার ইস্যুতে সমাধানের পথে হাঁটতে চায় মালয়েশিয়া

২০২৫ সালের আসিয়ান চেয়ার হিসেবে মালয়েশিয়ার নেতৃত্বে ‘ইনফর্মাল অ্যাডভাইজরি গ্রুপ’ গঠনের মাধ্যমে মিয়ানমার সংকট মোকাবিলায় নতুন ও ইতিবাচক পদক্ষেপ নিয়েছে আসিয়ান।

Advertisement

আজ কুয়ালালামপুরে শুরু হওয়া ৪৬তম আসিয়ান শীর্ষ সম্মেলনে উদ্বোধনী ভাষণে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, মিয়ানমারে চলমান সংকট নিয়ে আমরা নীরব দর্শক হয়ে থাকতে পারি না। এটি শুধু ওই দেশের অভ্যন্তরীণ সমস্যা নয় বরং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা, মানবাধিকার ও উদ্বাস্তু পরিস্থিতির সঙ্গে সরাসরি জড়িত। মালয়েশিয়া চেয়ার হিসেবে দায়িত্ব নিয়ে এই ইস্যুতে বাস্তবভিত্তিক ও অর্থবহ সমাধানের পথে হাঁটতে চায়।

সম্মেলনে এখন পর্যন্ত আসিয়ানের ১০ সদস্য রাষ্ট্র ছাড়াও কয়েকটি কৌশলগত অংশীদার রাষ্ট্রের রাষ্ট্রপ্রধান ও প্রতিনিধিরা উপস্থিত হয়েছেন। দিনব্যাপী চলবে বিভিন্ন উচ্চপর্যায়ের বৈঠক—যার মধ্যে রয়েছে পূর্ণাঙ্গ সম্মেলন, রিট্রিট সেশন এবং আসিয়ান নেতাদের সঙ্গে পার্লামেন্ট সদস্য, যুব প্রতিনিধি ও ব্যবসায়িক নেতাদের আলাদা আলাদা বৈঠক।

Advertisement

আসিয়ান নেতারা আজ স্বাক্ষর করবেন ‘কুয়ালালামপুর ঘোষণা: আসিয়ান ২০৪৫—আমাদের অভিন্ন ভবিষ্যৎ’ নামের এক কৌশলগত দলিলে, যা ভবিষ্যতের ২০ বছরকে ঘিরে আসিয়ান সম্প্রদায় গঠনের রূপরেখা নির্ধারণ করবে। এই ঘোষণায় অন্তর্ভুক্তি, স্থায়িত্ব এবং প্রযুক্তিনির্ভর উন্নয়নের দিকনির্দেশনা তুলে ধরা হবে।

সম্মেলনের আরেকটি আলোচ্য বিষয় হলো মিয়ানমারের সামরিক জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে আসিয়ানের পাঁচ দফা ঐকমত্য বাস্তবায়নের ধীরগতি।

আনোয়ার ইব্রাহিম বলেন, এই প্রক্রিয়া নতুন গতি পেতে পারে যদি আমরা অভ্যন্তরীণভাবে একটি সক্রিয় পরামর্শক দল গঠন করি, যারা বাস্তবতাকে সামনে রেখে কূটনৈতিক উদ্যোগ নেবে।

আজ রাতেই প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ও তার স্ত্রী ড. ওয়ান আজিজাহ অতিথিদের জন্য এক গালা ডিনারের আয়োজন করেছেন, যেখানে পরিবেশিত হবে মালয়েশিয়ার ঐতিহ্যবাহী খাবার এবং সাংস্কৃতিক পরিবেশনা।

Advertisement

এবারের সম্মেলনের প্রতিপাদ্য—‘অন্তর্ভুক্তি ও স্থায়িত্ব’—এই অঞ্চলের উন্নয়নকে আরও মানবিক ও টেকসই পথে নিয়ে যেতে চায় বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা।

সম্মেলনের পাশাপাশি চলবে দ্বিতীয় আসিয়ান-জিসিসি শীর্ষ বৈঠক ও প্রথম আসিয়ান-জিসিসি-চীন শীর্ষ বৈঠক, যেখানে অর্থনৈতিক, নিরাপত্তা ও অভিবাসন ইস্যুতে পারস্পরিক সহযোগিতার নতুন রূপরেখা নির্ধারিত হবে।

আসিয়ান ইতিহাসে এটি মালয়েশিয়ার পঞ্চমবারের মতো চেয়ারম্যানশিপ। এর আগে ১৯৭৭, ১৯৯৭, ২০০৫ এবং ২০১৫ সালে এই দায়িত্ব পালন করে আসিয়ান অঞ্চলে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছিল দেশটি।

সম্মেলনের শেষ দিন প্রকাশ পাবে একটি যৌথ বিবৃতি, যা ৪৬তম আসিয়ান সম্মেলনের মূল অর্জন, ঐক্যমত্য ও ভবিষ্যতের অগ্রাধিকারকে তুলে ধরবে।

এমআরএম/জিকেএস