চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ১০ মাস (জুলাই-এপ্রিল) শেষে রাজস্ব ঘাটতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭১ হাজার ৪৭৬ কোটি টাকা। তবে রাজস্ব আদায়ে ঘাটতি দেখা দিলেও গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩ দশমিক ২৪ শতাংশ।
Advertisement
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ১০ মাসের শুল্ক-কর আদায়ের হালনাগাদ তথ্য থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
চলতি অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩ লাখ ৫৮ হাজার ৭৩২ কোটি টাকা। আদায় হয়েছে ২ লাখ ৮৭ হাজার ২৫৬ কোটি টাকা। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে পিছিয়ে আছে ১৯ দশমিক ৯২ শতাংশ।
গত অর্থবছরের একই সময়ে (১০ মাসে) রাজস্ব আদায় হয়েছিল ২ লাখ ৭৮ হাজার ২৪২ কোটি টাকা। সে হিসাবে চলতি অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে রাজস্ব আদায়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে।
Advertisement
এনবিআরকে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য ৪ লাখ ৬৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকার সংশোধিত রাজস্ব আহরণ লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়। চলতি মে মাস শেষে রাজস্ব আহরণ পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যাবে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। কারণ হিসেবে তারা বলছেন, এনবিআর বিলুপ্ত করে জারি করা অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে চলমান আন্দোলনে স্থবির হয়ে পড়েছে সংস্থাটির কার্যক্রম। এনবিআর অধ্যাদেশ বিলুপ্তির বিরুদ্ধে গত ১৪ মে থেকে আন্দোলন শুরু করেন সংস্থাটির কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।
আরও পড়ুনবেসরকারি খাত, বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে সরকারের ঋণ বেড়েছে ৬০ শতাংশশেয়ারবাজারে পতন অব্যাহত, সর্বনিম্ন লেনদেনহালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, এপ্রিল পর্যন্ত এক লাখ ২৭ হাজার ৬৮০ কোটি ৫ লাখ টাকা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে এনবিআর আহরণ করতে পেরেছে ৯৪ হাজার ৯৩৮ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৪ দশমিক ৪৫ শতাংশ। গত অর্থবছরের আলোচ্য সময়ে রাজস্ব আদায় হয়েছিল ৯০ হাজার ৮৯৪ কোটি টাকা।
স্থানীয় পর্যায়ে মূসক (ভ্যাট) আদায়ে লক্ষ্যমাত্রা ছিল এক লাখ ২৯ হাজার ৪২২ কোটি টাকা। লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে এক লাখ ১১ হাজার ২০২ কোটি টাকা আহরণ করতে পেরেছে এনবিআর। আলোচ্য সময়ে এ খাতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৫ দশমিক ৭৯ শতাংশ। গত অর্থবছরের ১০ মাসে ভ্যাট আদায় হয়েছিল এক লাখ ১১ হাজার ২০২ কোটি টাকা।
আমদানি ও রপ্তানি পর্যায়ে রাজস্ব আহরণেও বড় ঘাটতি দেখা যাচ্ছে। এপ্রিল পর্যন্ত এক লাখ এক হাজার ৬৩০ কোটি ৪৭ লাখ টাকা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ৮১ হাজার ১১৬ কোটি টাকা আহরণ করতে পেরেছে এনবিআর। এ খাতে নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি এক দশমিক ৩৬ শতাংশ। গত অর্থবছরে ১০ মাসে শুল্ক খাত থেকে আদায় হয়েছিল ৮২ হাজার ২৩৬ কোটি টাকার রাজস্ব।
Advertisement
একক মাস হিসেবে শুধু এপ্রিলে রাজস্ব আহরণের সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩৬ হাজার ৫৮০ কোটি ৫২ লাখ টাকা। আহরণ হয়েছে ৩০ হাজার ৭৭০ কোটি টাকা। অর্থাৎ গত মাসে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম রাজস্ব আহরণ হয়েছে। এসময়ে ঘাটতি রয়েছে ৫ হাজার ৮১০ কোটি ৫২ লাখ টাকা। গত অর্থবছরে এ মাসে আহরণ হয়েছিল ২৮ হাজার ৬৫০ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। সে হিসাবে আহরণের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৭ দশমিক ৪০ শতাংশ। তবে এপ্রিলের আহরণ সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে পিছিয়ে আছে ১৫ দশমিক ৮৮ শতাংশ।
আগামী ২ জুন ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জাতীয় বাজেট ঘোষণা করা হবে। এমন সময়ে কলমবিরতি শেষে এনবিআরের কর অঞ্চল, ভ্যাট কমিশনারেট ও কাস্টমস হাউসগুলোয় এখন চলছে পূর্ণাঙ্গ কর্মবিরতি। এনবিআর বিলুপ্ত করে জারি করা অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে গত ১৪ মে থেকে শুরু হওয়া আন্দোলন এখনো চলমান রয়েছে।
এসএম/কেএসআর/জেআইএম