রাজনীতি

‘অন্তর্কোন্দল প্রকাশের ভয়ে বিএনপি স্থানীয় সরকার নির্বাচন চায় না’

‘অন্তর্কোন্দল প্রকাশের ভয়ে বিএনপি স্থানীয় সরকার নির্বাচন চায় না’

দেশের রাজনৈতিক অঙ্গন কদিন ধরে বেশ উত্তপ্ত। বিএনপি, জামায়াত, নতুন গঠিত দল এনসিপি মাঠে সক্রিয়। দলগুলোর নেতাদের মধ্যে ক্রমাগত চলছে বাগযুদ্ধ। রাজনীতিতে যা ছড়াচ্ছে উত্তাপ।

Advertisement

এসব নিয়ে জাগো নিউজের সঙ্গে কথা বলেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন জাগো নিউজের নিজস্ব প্রতিবেদক মো. নাহিদ হাসান।

জাগো নিউজ: আপনারা স্থানীয় সরকার নির্বাচনের দাবি তুলছেন, বিএনপিসহ অন্যরা জাতীয় নির্বাচনে দাবি জানিয়েছে। ভবিষ্যৎ কোন পথে?

সারোয়ার তুষার: অবৈধ নির্বাচন বৈধতা দেওয়ার চেয়ে বিএনপির উচিত গণতন্ত্রের স্বার্থে স্থানীয় সরকার নির্বাচন মেনে নেওয়া। সব স্থানীয় সরকার না হলেও অন্তত ঢাকা দক্ষিণের নির্বাচন দাবি করতে পারে। আমরা স্থানীয় সরকার নির্বাচনের কথা এজন্যই বলেছি যে, স্থানীয় পর্যায়ে একটা চরম নৈরাজ্য চলছে।

Advertisement

আরও পড়ুন

বিএনপি ক্ষমতা কুক্ষিগত করার প্রচেষ্টার দিকে এগোচ্ছে এনসিপির মৌলিক সংস্কার রূপরেখায় যা আছে দলীয় নেতাদের ফেসবুক পোস্ট ঘিরে এনসিপিতে ‘অস্বস্তি’

মানুষের নাগরিক সুবিধা নেই, জনদুর্ভোগ চরমে উঠেছে। প্রশাসনিক অফিসগুলো বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের দখলে চলে গেছে। এজন্য জনপ্রতিনিধি দরকার। আমরা বলেছি পাইলট প্রজেক্টের ভিত্তিতে ধাপে ধাপে কিছু জায়গায় নির্বাচন করা যায়।

আমরা একটা নতুন দল, আমরা কি সব জায়গায় প্রার্থী দিতে পারবো? আমাদের প্রার্থী খুঁজতে হবে। তারা ভয় পাচ্ছে এই কারণে যে স্থানীয় সরকার নির্বাচন আগে দিলে তাদের দলের অন্তর্কোন্দল প্রকাশ পাবে। এ কারণে তারা স্থানীয় সরকার নির্বাচন চাচ্ছে না।

আমরা বৃহত্তর গণতন্ত্রের স্বার্থে বলেছি। আমরা একটা নতুন দল, আমরা কি সব জায়গায় প্রার্থী দিতে পারবো? আমাদের প্রার্থী খুঁজতে হবে। তারা ভয় পাচ্ছে এই কারণে যে স্থানীয় সরকার নির্বাচন আগে দিলে তাদের দলের অন্তর্কোন্দল প্রকাশ পাবে। এ কারণে তারা স্থানীয় সরকার নির্বাচন চাচ্ছে না।

Advertisement

জাগো নিউজ: জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেছেন। সংস্কারের অগ্রগতি কতটুকু, কী মনে হচ্ছে?

সারোয়ার তুষার: প্রথম দফার বৈঠকে কী কী বিষয়ে দ্বিমত ও কী কী বিষয়ে সবগুলো দল একমত সে বিষয়গুলো নির্ধারিত হয়েছে। এখন দ্বিমতগুলো কীভাবে নিরসন করা যায়, সেগুলো দ্বিতীয় পর্যায়ে আলোচনা হবে।

জাগো নিউজ: সাম্প্রতিক রাজনীতিতে মন্তব্য-পাল্টা মন্তব্য চলছে। অন্য রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে এনসিপির দূরত্ব তৈরি হয়েছে কি না?

সারোয়ার তুষার: রাজনৈতিক দূরত্ব না। রাজনীতিতে সব সময় সমালোচনা-পাল্টা সমালোচনা থাকবে। আগে আওয়ামী লীগ অন্য কোনো দলকে স্পেস দিতো না। এখন একটা গণতান্ত্রিক পরিবেশের উন্নতি হয়েছে। সবাই রাজনীতি করছে, সবাই সবার পক্ষে-বিপক্ষে সমালোচনা করছে, প্রতিযোগিতাও আছে। এটা ভালো, কিন্তু এটাকে সংঘাতের দিকে নিয়ে যাওয়া যাবে না।

এখন একটা গণতান্ত্রিক পরিবেশের উন্নতি হয়েছে। সবাই রাজনীতি করছে, সবাই সবার পক্ষে-বিপক্ষে সমালোচনা করছে, প্রতিযোগিতাও আছে। এটা ভালো, কিন্তু এটাকে সংঘাতের দিকে নিয়ে যাওয়া যাবে না।

জাগো নিউজ: বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ই নির্বাচন কমিশন গঠন হয়েছে। তাহলে এই কমিশনকে আপনারা কেন পক্ষপাতদুষ্ট বলছেন?

সারোয়ার তুষার: বর্তমান নির্বাচন কমিশন গঠন হওয়ার পরই আমরা জাতীয় নাগরিক কমিটির পক্ষ থেকে উদ্বেগ জানিয়ে বলেছিলাম, এটা ২০২২ সালের আইন। তখন বিএনপিও বলেছিল, এটা একটি ফ্যাসিবাদী আইন। ওই আইনে ইসি গঠন করা একটি নজিরবিহীন ব্যাপার হয়েছে। এখন তাদের বিভিন্ন প্রশ্নবিদ্ধ ভূমিকা।

তারা সংস্কারে একমত না, তাদের গঠনতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মধ্যে গন্ডগোল আছে, তারা রাজনৈতিক একপেশে আচরণ করছে। এজন্য আমরা নির্বাচন কমিশনকে পুনর্গঠনের কথা বলেছি। সংস্কার কমিশন নির্বাচন কমিশন সংস্কারে প্রস্তাব দিয়েছে। এগুলোর মধ্যে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন এবং আরপিও সংশোধনী জরুরিভিত্তিতে করা দরকার। এটা করা সম্ভব। এর মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনকে একটি নিরপেক্ষ সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলা দরকার।

এনএস/এএসএ/ এমএফএ/এমএস