দীপ্ত টিভির প্রতিভা অন্বেষণ প্রতিযোগিতা ‘স্টার হান্ট’-এ চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন সাকিব হোসেন। দীপ্ত টেলিভিশনে বিভিন্ন রকম কাজের সুযোগ পাবেন তিনি। নিজের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা, নিয়ে জাগো নিউজের সঙ্গে কথা বলেছেন এই তরুণ। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন মিজানুর রহমান মিথুন। জাগো নিউজ: কয়েক স্তরের কঠিন প্রতিযোগিতার মাধ্যমে ‘স্টার হান্ট’-এ চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন। কেমন লাগছে?সাকিব হোসেন: মিডিয়াতে কাজ করার স্বপ্ন দীর্ঘদিনের। সেই স্বপ্ন পূরণের একটা ধাপে উত্তীর্ণ হয়েছি বলে ভীষণ ভালো লাগছে। এর মাধ্যমে আমার সামনের পথচলার গতি আরও বেগবান হবে বলে আশা করছি। ‘স্টার হান্ট’ প্রতিযোগিতাটি আমার জন্য অনেক বড় অনুপ্রেরণার। জাগো নিউজ: ‘স্টার হান্ট’-এ চ্যাম্পিয়ন হবেন। এমনটা কি প্রত্যাশা করেছিলেন?সাকিব হোসেন: ভালো কিছু একটা করবো, এমনটা প্রতিযোগিতার শুরু থেকে সবসময় প্রত্যাশা করে আসছিলাম। কিন্তু নিজেকে চ্যাম্পিয়ন ভাবা অনেক বড় বিষয়। প্রতিযোগিতার শুরু থেকে আমার পরিকল্পনা ছিল, আমি আমার সর্বোচ্চটা দিয়ে নিজেকে প্রমাণের চেষ্টা করবো। নিজের চেষ্টা ও ভাগ্য, সব মিলিয়ে বিজয়ী হয়েছি। জাগো নিউজ: ‘স্টার হান্ট’ প্রতিযোগিতায় আসার গল্পটা ছোট করে বলুন।সাকিব হোসেন: আমি ব্যক্তিজীবনে ভীষণ কনফিডেন্ট মানুষ। সেই অবস্থান থেকেই ফেসবুকে ‘স্টার হান্ট’-এর বিজ্ঞপ্তি দেখে রেজিস্ট্রেশন করি। এরপর চিন্তা করি, দেখি ওখানে গিয়ে কতদূর করতে পারি। নিজের নতুন একটা জার্নি হবে। আমি যেহেতু ক্যামেরার পেছনের মানুষ, ক্যামেরার সামনে খুব একটা কাজ করিনি। পড়াশোনা করছি ফিল্ম অ্যান্ড মিডিয়া নিয়ে। ক্যামেরার সামনে কাজ করতে পারার এই প্ল্যাটফর্মটির কথা জানতে পেরে সঙ্গে সঙ্গে অংশগ্রহণ করি। জাগো নিউজ: প্রতিযোগিতার শুরুর দিনগুলোর কথা জানতে চাই।সাকিব হোসেন: ‘স্টার হান্ট’ থেকে ডাক পাওয়ার পর সেখানে যাই। তিন ধাপে অডিশন দিই। সবগুলো ধাপেই পাশ করে যাই। এরপর আমার কনফিডেন্স লেভেলটা আরও বেড়ে যায়। আমি তো ভালোই করছি, ভালোই হচ্ছে। তো এভাবেই আমি প্রতিটা ধাপ পার করি।
Advertisement
জাগো নিউজ: প্রতিযোগিতায় কোনো চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছেন?সাকিব হোসেন: হ্যাঁ, কিছুটা চ্যালেঞ্জের মুখে তো পড়তে হয়েছে। প্রত্যেকটি গ্রুমিং ক্লাস অনেক গুরুত্বপূর্ণ ছিল। যেহেতু আমার আগের কোনো অভিজ্ঞতা নেই, সেকারণে গ্রুমিং ক্লাসগুলোই আমার শেখার জায়গা ছিল। ওখানে যা শিখতে পেরেছি সেই শিক্ষাটা কাজে লাগিয়ে প্রত্যেকটি পারফরমেন্স করেছি। পাশাপাশি নিজের সর্বোচ্চটা দিয়ে ভালো করার চেষ্টা করেছি। জাগো নিউজ: সেই সময়ের মনে রাখার মতো কোনো ঘটনা কি বলতে পারেন?সাকিব হোসেন: পুরো জার্নিটাই আমার খুব ভালো কেটেছে। এখানে আমি অনেকগুলো মানুষের সঙ্গে পরিচিতি হয়েছি। সবাই আমাকে অনেক আপন করে নিয়েছেন। আমার চেয়ে বয়সে অনেক বড়, তাদের সঙ্গে বন্ধু হয়ে গেছে। এখানে সবাই ভীষণ কো-অপারেটিভ ছিল। তাদের সবার কাছ থেকে আমি সবকিছু শিখতে পেরেছি। অন্যদিকে, যখন একেকটা ধাপ থেকে যখন একেকজন প্রতিযোগী বাদ পড়েছিল, তখন ভীষণ খারাপ লেগেছে। কারণ সবার সঙ্গে ভীষণ বন্ধুত্ব হয়ে গেছে। যখনই পছন্দের একজন বাদ হয়ে যাচ্ছে, তখন এমন হয়েছে যে, আমি স্টেজে দাঁড়িয়ে কেঁদেছি।
জাগো নিউজ: সামনের দিনগুলো নিয়ে পরিকল্পনা কী?সাকিব হোসেন: আমি আসলে কখনই পরিকল্পনা করে আগানোর মানুষ না। আমি ছোট ছোট মাইলস্টোন তৈরি করি। এবং যে মাইলস্টোনগুলো আমার মনে হয় এই মুহূর্তে পূরণ করা দরকার, সেইগুলো করে থাকি। আমি ফিল্ম অ্যান্ড মিডিয়াতে লেখাপড়ার জন্য নিজের প্যাশন থেকেই ভর্তি হই। আমার পরিবারের পক্ষ থেকেও এ ব্যাপারে খুব সাপোর্ট পাই। পরিবারের সবাই বলেছে, ‘তুমি যখন এ বিষয়ে পড়তে ক্যারিয়ার গড়তে চাইছো তাহলে তোমার সিদ্ধান্ত মতো এগিয়ে যাও।’ আমি মনে করেছি হুট করেই মিডিয়াতে কাজ করতে আসা উচিত নয়। যিনি যে ধরনের কাজই করুন না কেন, তাতে তার একটা একাডেমিক শিক্ষা থাকা উচিত বলে আমি মনে করি। এজন্যই আমার এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া। আমার পছন্দের বিষয় হচ্ছে সিনেমাটোগ্রাফি। আমি দীর্ঘ ছয় বছর ধরে সিনেমাটোগ্রাফি করেছি। সিনেমাটোগ্রাফি ও নির্মাণের দিকে আমার আগানোর ইচ্ছে ছিল। কিন্তু এখন এই দীপ্ত স্টার হান্টে একজন অভিনেতা হিসেবে বিজয়ী হওয়ায় আমার ক্যারিয়ার বোধ হয় ভিন্ন দিকে মোড় নিচ্ছে। তবে আমি চাইবো নির্মাণ ও কামেরার সামনে কাজ চালিয়ে যেতে। এটাই আমার এখনকার পরিকল্পনা।
জাগো নিউজ: স্টার হান্ট প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার পর এখন পর্যন্ত কোনো কাজের জন্য প্রস্তাব পেয়েছেন?সাকিব হোসেন: আমি আপতত বাইরে কোনো কাজ করার চিন্তা করছি না। কারণ দীপ্ত টেলিভিশন থেকে আমাদের সঙ্গে যে চুক্তি হয়েছে, তাদের সঙ্গে দুই বছর বিভিন্ন ধরনের কাজ করতে হবে। যেমন মেগা সিরিয়াল, সিঙ্গেল নাটক। এবং সামনে সিনেমাতেও কাজ করব। আপতত দীপ্তর সঙ্গেই কাজ করছি। এরপরে বাইরে কাজ করব। আরও পড়ুন:
Advertisement
জাগো নিউজ: এখন কী করছেন?সাকিব হোসেন: পড়াশোনা নিয়ে ব্যস্ত। আমার পরীক্ষা চলছে। ফোর্থ ইয়ার সেমিস্টার ফাইনাল চলছে। আমি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিল্ম এবং টেলিভিশন বিভাগের ছাত্র। জাগো নিউজ: অভিনন্দন। সময় দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ।সাকিব হোসেন: আপনাকেও ধন্যবাদ। এমএমএফ/আরএমডি/এমএস