রাজনীতি

‘বিতর্কিত’ উপদেষ্টাদের বাদ দেওয়ার দাবি বিএনপির

‘বিতর্কিত’ উপদেষ্টাদের বাদ দেওয়ার দাবি বিএনপির

‘বিতর্কিত’ উপদেষ্টাদের বাদ দিয়ে উপদেষ্টা পরিষদ পুনর্গঠনের দাবি জানিয়েছে বিএনপি। শনিবার (২৪ মে) সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে অনুষ্ঠিত বিএনপি নেতাদের বৈঠকে এ দাবি জানানো হয়।

Advertisement

প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনায় এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে অংশ নেন বিএনপির চার নেতা। তারা হলেন- স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ড. আব্দুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সালাহউদ্দিন আহমেদ।

বৈঠক শেষে উপদেষ্টা পরিষদ পুনর্গঠনের দাবি তুলে ধরে খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অবাধ নির্বাচন অনুষ্ঠানের উদ্দেশ্যে সরকারের নিরপেক্ষতা বজায় রাখার স্বার্থে বিতর্কিত উপদেষ্টাদের বাদ দিয়ে উপদেষ্টা পরিষদ পুনর্গঠনের দাবি জানিয়েছি।’

উপদেষ্টাদের পদত্যাগের বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘নিরাপত্তা উপদেষ্টা ও দুজন ছাত্র উপদেষ্টা, যাদের কারণে এই সরকারের নিরপেক্ষতা ক্ষুণ্ন হচ্ছে, তাদের বাদ দেওয়ার জন্য লিখিত দিয়েছি, মুখেও বলেছি।’

Advertisement

এ বিষয়ে সরকার কোনো আশ্বাস দিয়েছে কি না- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘তারা বলেছেন, তারা দেখবেন। আমরা আমাদেরটা বলেছি।’

এদিকে প্রধান উপদেষ্টার কাছে নির্দিষ্ট নির্বাচনী রোডম্যাপ, বিচার ও সংস্কারের বিষয়ে লিখিত প্রস্তাব তুলে ধরেছে বিএনপির প্রতিনিধিদল।

বৈঠক শেষে খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা আমাদের আমন্ত্রণ করেছিলেন। আমরা চারজন এসেছিলাম। আমাদের আলোচনার বিষয়বস্তু আগে জানানো হয়নি। বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে আমরা যা আন্দাজ করতে পেরেছিলাম, তারওপর ভিত্তি করে আমরা একটা লিখিত বক্তব্য নিয়ে এসেছিলাম। আমরা সেটি প্রধান উপদেষ্টার সমীপে পেশ করেছি। এবং সেই ভিত্তিতে আমরা আলোচনা করেছি। তার একটি সারাংশ তুলে ধরতে চাই।’

আরও পড়ুন

Advertisement

প্রধান উপদেষ্টাকে বিএনপির লিখিত বার্তা ৩০ জুন সুনির্দিষ্ট ডেট, নির্বাচন এর বাইরে যাবে না: প্রেস সচিব প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তিন দলের বৈঠকে যেসব বিষয়ে আলোচনা হলো

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে গণতন্ত্র উত্তরণের লক্ষ্যে বিএনপি প্রথম থেকেই একটি সুস্পষ্ট জাতীয় নির্বাচনী রোডম্যাপ দাবি করে আসছে। আপনারা জানেন আমরা এটি প্রকাশ্যে দাবি করে আসছি।’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘বিএনপির প্রতিটি নেতাকর্মী পারিবারিক, রাজনৈতিক ও ব্যক্তিগতভাবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আওয়ামী লীগের আমলে। সেজন্য আওয়ামী লীগের বিচারের দাবি সবচেয়ে বেশি বিএনপির। এই বিচারপ্রক্রিয়া কোনোভাবে অসম্পন্ন থেকে গেলে বিএনপি সরকারের দায়িত্বে গেলে তা স্বাধীন বিচার বিভাগের মাধ্যমে পরিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করা হবে।’

নির্বাচন দ্রুত আয়োজনের তাগিদ দিয়ে মোশাররফ বলেন, ‘নির্বাচন-সংশ্লিষ্ট সংস্কার কার্যক্রম অবিলম্বে সম্পন্ন করে ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য দ্রুত একটি রোডম্যাপ প্রদানের দাবি জানিয়েছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ বিশ্বাস করে যে অন্তর্বর্তী সরকারের মূল দায়িত্ব হচ্ছে একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশকে গণতন্ত্র উত্তরণের প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন করা। যে কোনো উছিলায় নির্বাচন যত বিলম্ব করা হবে, আমরা মনে করি জাতির কাছে আবার স্বৈরাচার ফিরে আসার ক্ষেত্র প্রস্তুত হবে। এর দায় বর্তমান সরকার এবং তাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের ওপর বর্তাবে।’

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মোশাররফ বলেন, ‘আমাদের আলোচনার মধ্যে আসছে সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন-মূলত এই তিনটি বিষয়। আমরা বলেছি একটার সঙ্গে আরেকটার কোনো সম্পর্ক নেই। কারণ সংস্কার চলমান বিষয়। এটা চলতেই থাকবে। আমরা আশা করেছি এই সরকার সবার সঙ্গে ঐক্যমতের ভিত্তিতে সংস্কার প্রস্তাব দেবে এবং তা বাস্তবায়নে এগিয়ে যাবে। আর ভবিষ্যতে জনগণ যদি আমাদের ক্ষমতায় বসায়, আমরা সেই সংস্কার বাস্তবায়নে উদ্যোগ নেব।

কেএইচ/বিএ/এমএস