জাতীয়

সংকট সমাধানে অবসরপ্রাপ্ত বিসিএস অফিসার্স ফোরামের ১০ প্রস্তাব

সংকট সমাধানে অবসরপ্রাপ্ত বিসিএস অফিসার্স ফোরামের ১০ প্রস্তাব

দেশে চলমান সাম্প্রতিক সংকট সমাধানে ১০ দফা প্রস্তাব দিয়েছে সাবেক সরকারি কর্মকর্তাদের সংগঠন অবসরপ্রাপ্ত বিসিএস অফিসার্স ফোরাম।

Advertisement

গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এসব প্রস্তাব জানায় সংগঠনটি।

বিবৃতিতে বলা হয়, ছাত্র-জনতার সম্মিলিত সংগ্রাম ও ত্যাগে ২০২৪ সালের সফল জুলাই বিপ্লব সংঘটিত হবার অব্যাবহিত পর থেকে দেশের বিবদমান রাজনৈতিক শক্তিগুলোর ঐক্য সংহত হবার পরিবর্তে নানা কারণে দুর্বল হয়েছে এবং দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। আরব বসন্তের অভিজ্ঞতা আমাদের এ ধারণা দেয় যে বিপ্লোত্তর সময়ে জাতীয় ঐক্য বিনষ্ট হলে গণতন্ত্রায়ণের পরিবর্তে অগণতান্ত্রিক বা একনায়কতান্ত্রিক শাসন আরোপিত হতে পারে।

এ পরিপ্রেক্ষিতে অবসরপ্রাপ্ত বিসিএস অফিসার্স ফোরাম জাতীয় ঐক্য দৃঢ় করাসহ সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে দেশের সব রাজনৈতিক শক্তিসহ আপামর জনগণের প্রতি নিম্নোক্ত আহ্বান জানাচ্ছে-

Advertisement

১। জুলাই বিপ্লবের মৌলিক লক্ষ্য তথা ইনসাফ, ন্যায্যতা ও সুশাসন নিশ্চিত করে নতুন বাংলাদেশ গড়তে জাতি-ধর্ম-বর্ণ-রাজনৈতিক মতাদর্শ নির্বিশেষ সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। ২। বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের চ্যালেঞ্জ, তথা যে কোনো ধরনের আঞ্চলিক-আন্তর্জাতিক আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতাকে দৃঢ়ভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। বেসামরিক-সামরিক প্রশাসনের সব সদস্যকে জাতীয় স্থিতিশীলতা নিশ্চিতে জোরালো ভূমিকা রাখতে হবে। ৩। দ্রুততম সময়ে জনতার ঐক্য দৃঢ় করার ভিত্তি সৃষ্টির জন্য 'জুলাই সনদ ২০২৪' ঘোষণা করতে হবে। এ লক্ষ্যে সব রাজনৈতিক দলকে কার্যকর ভূমিকা পালন করতে হবে। ৪। বেসামরিক প্রশাসন ও সামরিক বাহিনীর সব সদস্যকে ঐক্যবদ্ধভাবে জাতীয় স্বার্থকে ঊর্ধ্বে তুলে ধরতে হবে এবং এ লক্ষ্য হাসিলে আধিপত্যবাদীসহ কোনো স্বার্থান্বেষী মহলের উস্কানিতে পা দেওয়া যাবে না। জাতীয় স্বার্থে দেশের বিদ্যমান প্রশাসনিক রীতি-নীতি ও শৃঙ্খলাকে শ্রদ্ধার সঙ্গে মেনে চলতে হবে। ৫। আইনশৃঙ্খলা উন্নয়নে বাংলাদেশ পুলিশবাহিনী-অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ বেসামরিক প্রশাসনকে দৃঢ় ভূমিকা পালন করতে হবে। ৬। প্রশাসনে বিদ্যমান বিগত দুঃশাসন রেজিমের পদলেহী ও হঠকারীতায় লিপ্ত কর্মকর্তাদের অবিলম্বে প্রশাসনিক শৃঙ্খলার আওতায় আনতে হবে এবং দেশপ্রেমিক ও সৎ কর্মচারীদের শীর্ষ পদসমূহে পদায়ন করতে হবে।৭। অন্তর্বর্তী সরকারকে মৌলিক সংস্কার শেষ করে যত দ্রুত সম্ভব সময়ে সবার নিকট গ্রহণযোগ্য জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করতে হবে এবং এ লক্ষ্যে সব গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানের ন্যূনতম সংস্কার নিশ্চিত করতে হবে। ৮। আগামী দিনের রাজনৈতিক প্রক্রিয়াকে সংস্কার অভিমুখী করার জন্য দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলসমূহকে দ্রুত রাজনৈতিক সংলাপের ব্যবস্থা করতে হবে। ৯। অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টামন্ডলীকে রাজনৈতিক বিভেদ সৃষ্টিকারী কার্যক্রম থেকে সচেতনভাবে মুক্ত থাকতে হবে। ১০। আধিপত্যবাদী শক্তি কোনো অবস্থায় একটি গণতান্ত্রিক ও সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ চায় না। তাই আমাদের সর্বাবস্থায় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে যে কোনো সংগ্রামে জাতীয় সংহতি, দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে হবে।

বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন সংগঠনটির সভাপতি সাবেক সচিব মোহাম্মদ আবদুল কাইয়ুম, সংগঠনের সহ-সভাপতি ও সাবেক অতিরিক্ত সচিব ড. খন্দকার রাশেদুল হক এবং মহাসচিব ও সরকারের সাবেক সচিব ড. মো. শরিফুল আলম।

এমএইচআর/জেআইএম

Advertisement