রাজনীতি

নির্বাচন নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার ওপর আস্থা আছে জামায়াতের

নির্বাচন নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার ওপর আস্থা আছে জামায়াতের

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, সরকার পরিবর্তনের ৯ মাস পার হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, জাতীয় নির্বাচন ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে দিতে চান। আমরা তার কথায় বিশ্বাস রাখতে চাই।

Advertisement

শনিবার (২৪ মে) সকাল সাড়ে ৯টায় জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমানের সভাপতিত্বে মগবাজারে ফালাহ মিলনায়তনে কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার অধিবেশন হয়। সেখানে তিনি আরও বলেন, আমরাই তাকে এই দায়িত্ব দিয়েছি। তিনি তো জোর করে এই দায়িত্ব নেননি। আমাদের দায়িত্ব তাকে সহযোগিতা করা। সংঘাত-কাদা ছোড়াছুড়ির মধ্য দিয়ে জাতিকে আর অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দেওয়া সমীচীন হবে না। এর জন্য প্রয়োজন অর্থবহ ডায়ালগ। এটার দায়িত্ব সরকারকেই নিতে হবে।

তিনি বলেন, আমরা যতটুকু সম্ভব তাকে সহযোহিতা করেছি। অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, এই সরকার যেহেতু আমাদের সবার সরকার। আসুন আমরা এই সরকারকে সহযোগিতা করি। সরকার যদি এই সহযোগিতা গ্রহণ করে তাহলে সমস্যা সমাধান সুন্দরভাবে হবে।

জামায়াত আমির বলেন, বর্তমানে দেশে চলমান পরিস্থিতির কিছু ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে। আমরা মনে করি অর্থবহ আলাপ-আলোচনার মাধ্যমেই বর্তমান সমস্যার সন্তোষজনক সমাধানে পৌঁছানো সম্ভব।

Advertisement

আমরা এখন জাতির একটি গুরুত্বপূর্ণ বাঁকে অবস্থান করছি উল্লেখ করে তিনি বলেন, সাম্প্রতিক সময়ের ঘটনা দেশবাসীকে বিচলিত করেছে। আমরা বিচলিত না হলেও সতর্ক দৃষ্টি রাখছি।

তিনি আরও বলেন, জামায়াতে ইসলাম কয়েকটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমরা অন্তর্বর্তী সরকারকে আহ্বান জানাই সর্বদলীয় বৈঠক আহ্বানের জন্য। জাতীয় স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে আশা করি সেই বৈঠকে ভালো কিছু বের হয়ে আসবে।

আওয়ামী লীগের নানা ধরনের অন্যায়ের উদাহরণ টানার পর তিনি বলেন, ৭১ থেকে এই পর্যন্ত অনেক কিছু অর্জন করার ছিল। হয়ত অনেক প্রত্যাশা পূরণও হয়েছে। কিন্তু স্বাধীন দেশে জনগণের মূল জায়গায়গুলো ফাঁকা থেকে গেছে। দেশে অনেক কিছুই হয়নি। ২৪ এ নির্মম কায়দায় যা করা হয়েছে তার সাক্ষী বাংলাদেশসহ গোটা বিশ্ব। আগে যারা ক্ষমতায় ছিলেন তারা টানা ১৫ বছর দুঃশাসন উপহার দিয়েছেন।

একটি ভালো নির্বচানের প্রত্যাশা রেখে তিনি বলেন, আমরা দুটা রোডম্যাপ চেয়েছিলাম। একটা সংস্কারের ও আরেকটি নির্বাচনের। কিন্তু কোনো রোডম্যাপ আসেনি। আমরা দাবি জানাই, রোডম্যাপ প্রকাশ করা হোক। তাহলে জনগণের আস্থা ফিরে আসবে। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য দুটি রোডম্যাপ জরুরি।

Advertisement

আওয়ামী লীগের বিচার প্রক্রিয়া স্বচ্ছ করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, বিচারের কোনো প্রক্রিয়া দেখছি না। বিচার না হলে অপরাধ বৃদ্ধি পাবে। বিচারের নামে অবিচার আমরা চাই না। মানবিক করিডোরের বিষয়ে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, আমরা বলেছি এর সঙ্গে জাতীয় স্বার্থ জড়িত। এটা তাড়াহুড়ো করে করা যাবে না। এখন দেশে পার্লামেন্ট নেই। সব পক্ষের সঙ্গে না বসে এই ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া ঠিক হবে না। রাজনৈতিক দল, সিকিউরিটি এক্সপার্টের সঙ্গে আলোচনা করা উচিত। সব থেকে ভালো হয় নির্বাচিত সরকারের ওপর ছেড়ে দেওয়া।

চট্টগ্রাম পোর্টের বিষয়ে তিনি বলেন, আমাদের দেশের লাইফলাইন এই বন্দর। দেশের বাণিজ্যের প্রাণকেন্দ্র। হঠাৎ করে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া ঠিক হবে না। সবার সঙ্গে আলোচনা করেই সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।

সেনাবাহিনীর নানা কাজের প্রশংসা করে জামায়াত আমির বলেন, কোনো কার্যক্রমের মাধ্যমে এই প্রতিষ্ঠানের মর্যাদা ক্ষুণ্ন হোক তা চাই না। সেনাবাহিনীকে নিয়ে যেকোনো ধরনের মন্তব্য করা থেকেও বিরত থাকা উচিত।

এএএম/এসএনআর/এএসএম