আন্তর্জাতিক

চিপস্ চুরির অপবাদ, চিরকুট লিখে ৭ম শ্রেণীর শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা

চিপস্ চুরির অপবাদ, চিরকুট লিখে ৭ম শ্রেণীর শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা

পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পাঁশকুড়া থানার গোসাইবেড় বাজারে ঘটে গেলো এক হৃদয়বিদারক ঘটনা। চিপস চুরির অপবাদ সহ্য করতে না পেরে ‘আত্মহত্যা’ করেছে সপ্তম শ্রেণীর শিক্ষার্থী কৃষ্ণেন্দু দাস। মৃত্যুর আগে অঙ্ক খাতার এক কোণে মাকে লেখা চিরকুটে সে বলে, মা, আমি বলে যাচ্ছি যে, কুড়কুড়েটি (চিপস) রাস্তার ধারে কুড়িয়ে পেয়েছিলাম। চুরি করিনি।

Advertisement

কৃষ্ণেন্দু দাস, পাঁশকুড়ার স্থানীয় স্কুলের সপ্তম শ্রেণীর ছাত্র। পরিবার সূত্রে জানা গেছে, কৃষ্ণেন্দু বৃহস্পতিবার (২২ মে) দুপুরে বাজারে চিপস কিনতে গিয়েছিল। সে যে দোকানে গিয়েছিল, সেই দোকানটি খোলা রেখে দোকানদার শুভঙ্কর দীক্ষিত বাইরে চলে যান। তখন কৃষ্ণেন্দু দোকানের বাইরে মাটিতে পড়ে থাকা একটি চিপসের প্যাকেট কুড়িয়ে নেয় ও পরে এসে টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।

কিন্তু ফেরার পথে শুভঙ্কর কৃষ্ণেদুকে আটক করে প্রকাশ্যে চুরির অপবাদ দেয়। প্রত্যক্ষদর্শীদের অভিযোগ, কৃষ্ণেন্দুকে কান ধরে উঠবস করানো হয় ও শারীরিকভাবে হেনস্তা করা হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান কৃষ্ণেন্দুর মা ও অপমানিত অবস্থায় ছেলেকে নিয়ে বাড়িতে ফেরেন।

বাড়ি ফিরে আত্মহত্যা করার আগে কৃষ্ণেন্দু তার অঙ্ক খাতায় লিখে যায় ওই হৃদয়বিদারক বার্তা। এরপরই আত্মহত্যার পথ বেছে নেয় সে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তমলুক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও চিকিৎসকরা তাকে বাঁচাতে পারেননি। মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে।

Advertisement

কৃষ্ণেন্দুর মা জানান, আমার ছেলে নির্দোষ। সে দোকানদারকে পরে দাম দিয়েছিল, তাও অপমানিত হতে হলো। বাবা জগন্নাথ দাস বলেন, সামান্য এক অপবাদে আমার ছেলেটা পৃথিবী ছেড়ে চলে গেলো।

ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজে স্পষ্ট দেখা গেছে, কৃষ্ণেন্দু দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে দোকানদারকে খুঁজছে ও পরে মাটিতে পড়ে থাকা প্যাকেটটি কুড়িয়ে নিচ্ছে।

এদিকে, এই ঘটনার পর থেকে এলাকাবাসী দোষীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি তুলেছেন। তবে পাঁশকুড়া থানার পুলিশ জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত কৃষ্ণেন্দুর পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। আপাতত অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে। পুরো ঘটনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

ডিডি/এসএএইচ

Advertisement