আসিফ-মাহফুজের পদত্যাগ ও ডিএনসিসির এজাজের অপসারণ চান ফারুক হাসান

অন্তর্বর্তী সরকারের দুই উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও মাহফুজ আলমের পদত্যাগ এবং ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজকে অপসারণের পর গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন গণঅধিকার পরিষদের (জিওপি) মুখপাত্র ফারুক হাসান।

শুক্রবার (২৩ মে) বিকেলে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয় বিজয়নগর পানির ট্যাংকের পাশে আল রাজি কমপ্লেক্সের সামনে যুব অধিকার পরিষদ আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে এ কথা বলেন তিনি।

ফারুক হাসান বলেন, ‘সরকারে থাকা আসিফ এবং মাহফুজ আলম এরই মধ্যে নৈতিক জায়গা হারিয়েছেন। তারা পদে পদে দলীয়করণ, পদ বাণিজ্য, টেন্ডারবাজি এবং নানা দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত। তাদের অনতিবিলম্বে পদত্যাগ করতে হবে। ডিএনসিসির প্রশাসক হিসেবে মোহাম্মদ এজাজকে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে পদায়ন হয়েছে। স্বাধীন বাংলাদেশে কোনো জঙ্গিবাদের স্থান থাকতে পারে না। কোনো জঙ্গিবাদের নেতাকে রাষ্ট্রীয় কিংবা সাংবিধানিক পদে দেখতে চাই না। এজাজকে পদ থেকে অপসারণ করে অনতিবিলম্বে গ্রেফতার করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি আমাদের বিন্দুমাত্র নেতিবাচকতা নেই। তার প্রতি আমাদের আস্থা আছে, বিশ্বাস আছে। কিন্তু তার চতুর্দিকে যারা আছেন বিশেষ করে আসিফ এবং মাহফুজ, এ দুইজনকে আর এক মিনিটের জন্য চেয়ারে দেখতে চায় না। তাদের পদত্যাগ করতে হবে এজাজকে অপসারণ করতে হবে। এ বিষয়ে গণঅধিকার পরিষদ বিন্দুমাত্র ছাড় দেবে না।’

তিনি বলেন, ‘গতকাল রাতে হঠাৎ করে দেখলাম ড. মুহাম্মদ ইউনূস নাকি ক্ষমতায় থাকতে চান না। আমরা যমুনায় ফোন দিলাম। তারা বললো, স্যার তো ঘুমাচ্ছে। এদিকে নব্য বিপ্লবীরা ফেসবুক গরম করে দিয়েছে যে, ইউনূস সাহেব নাকি আর ক্ষমতায় থাকতে চান না। এটা তাদের স্ট্যান্ডবাজি, এর মাধ্যমে তারা যে নব্য ধান্দার দোকান খুলেছে সেই দোকান তারা টিকিয়ে রাখতে চায়। জনগণের সহানুভূতি আদায় করতে চায়।’

জিওপির এ নেতা বলেন, ‘গত ৫ আগস্টের পরে আমরা গণঅধিকার পরিষদের পক্ষ থেকে বলেছিলাম ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে অন্তত দুই বছর ক্ষমতায় থাকতে হবে। কারো দুই বছর ক্ষমতায় না থাকলে জনগণের আকাঙ্ক্ষা, সংস্কার, বিচার করা সম্ভব নয়। কিন্তু দুঃখের বিষয় অধ্যাপক ইউনূস ক্ষমতার চেয়ারে বসার পর তার চতুর্দিকে আওয়ামী কতিপয় দালালরা তাকে ব্যর্থ করার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে।’

ড. মুহাম্মদ ইউনূস আন্তর্জাতিক মানের খেলোয়াড় এটা নিয়ে কারো কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু তার সঙ্গে যারা রয়েছেন তারা আনফিট খেলোয়াড়। এ আনফিট খেলোয়াড় দিয়ে তিনি ম্যাচ জেতাতে পারবেন না। তাই আমরা ড. ইউনূসকে বলেছি, আপনার এ টিমকে পুনর্গঠন করতে হবে। অন্তর্বর্তী সরকারকে পুনর্গঠন করে জাতীয় সরকারের রূপান্তর করতে হবে। যদি জাতীয় সরকার গঠন করা না হয় তাহলে ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকার কোনোভাবেই জনগণের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন করতে পারবে না।’

ফারুক হাসান এসময় বলেন, ‘অনেকেই বলেন আমরা নাকি বিএনপিপন্থি। আমাদের ন্যায্য এবং হক কথা বিএনপির সঙ্গে মিলে গেলে কেউ যদি বলতে চায় আমরা বিএনপি হয়ে গেছি, তাহলে আমি বলবো তারা বোকার স্বর্গে বাস করছেন। আমরা কোনো রাজনৈতিক দলের মন যুগিয়ে নয়, আগামীর বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য রাজনীতির মাঠে নেমেছি। আমরা ঘোষণা দিয়েছি আগামী নির্বাচনে গণঅধিকার পরিষদ এককভাবে নির্বাচন করবে। তার জন্য প্রস্তুতি চলছে। আমাদের প্রার্থীরা সারাদেশে প্রস্তুতি শুরু করেছে।’

এনএস/এমএএইচ/এএসএম