বাংলাদেশ কি কারণে আরব আমিরাতের কাছে হারলো? তা নিয়ে চলছে রাজ্যের কথা-বার্তা। নানা ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ। খোদ টিম ক্যাপ্টেন লিটন দাস পরপর দুই ম্যাচে হেরে শিশিরকে দায়ী করেছেন। শিশিরের কারণে বোলিং ভাল হয়নি এমন দাবি লিটনের।
Advertisement
কিন্তু লিটন দাসের পূর্বসুরি সাবেক টাইগার ক্যাপ্টেন হাবিবুল বাশার সুমন কোন অজুহাত শুনতে ও দাঁড় করাতে নারাজ। জাতীয় দলের এ সাবেক অধিনায়ক ও সাবেক সিলেক্টর হাবিবুল বাশারের কথা শুনে মনে হচ্ছে, তিনি কিছুতেই আরব আমিরাতে কাছে সিরিজ হারটা মেনে নিতে পারছেন না। এ সিরিজ হারের পর কোনোরকম অজুহাত দাঁড় করানোর কঠোর বিরোধী বাশারের সোজা সাপটা কথা, ‘আমি আর অন্য কিছুতে যেতে চাই না। আপনি আরব আমিরাতের কাছে হারতে পারেন না।’
হাবিবুল বাশারের সবচেয়ে বেশি মনে হয়েছে, ‘বাংলাদেশ দলের মধ্যে ভাল খেলার ইচ্ছে, নিজের সামর্থ্যের সবটুকু উজাড় করে দিয়ে জেতার অদম্য বাসনা, দৃঢ় সংকল্প কম ছিল। তাই সুমনের কন্ঠে একথা, ‘হার-জিততো থাকেই। টি-টোয়েন্টি এমন এক ফরম্যাট যেখানে আপনি একদিন হারতেই পারেন; কিন্তু ওই হেরে যাওয়ার পর ভেতরে যে একটা দুঃখবোধ তৈরি হওয়া যে, আমরা জিততে পারিনি, পরের ম্যাচগুলোয় সামর্থ্যের সবটুকু উজাড় করে দিয়ে জিতবো, জেতার প্রাণপন চেষ্টা করবো, বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের শরীরি ভাষায় সেই তীব্র আকাঙ্খা খুব একটা পাইনি।’ সুমন যোগ করেন, ‘আমার মনে হয়েছে আমরা প্রথম ম্যাচটাও হারতে পারতাম। পরে জিতে গেছি। সেকেন্ড ম্যাচটা হারার পর পরের ম্যাচ জয়ের যে তীব্র আকাঙ্খা থাকা উচিৎ ছিল, তা দেখিনি। সেটা মিসিং ছিল।’
নিজের দীর্ঘ খেলোয়াড়ী জীবনের একটা উদাহরণ টেনে জাতীয় দলের এ সাবেক তারকা বলেন, ‘আমার খেলোয়াড়ী জীবনে আমরা যখন বড় দলগুলোকে হারাতাম, তারপর যখন আমরা সেই দলের সাথে আবার পরেরবার খেলতে যেতাম, তখন দেখতাম তাদের কি সিরিয়াসনেস! জয়ের কি উদগ্র বাসনা! কি বাড়তি তাড়না! তাদের চোখ মুখ আর শরীরি ভাষা দেখে মনে হতো আমাদের চিবিয়ে খেয়ে ফেলবে। অ্যাটিচ্যুড এমন থাকতো যে, একটা সিঙ্গেল বের করতেও কষ্ট হতো।’
Advertisement
সেই অ্যাটিচ্যুডটা আমাদের মধ্যে কম ছিল। টিভিতে দেখে যেটা মনে হয়েছে, সেটা আমাদের মধ্যে মিসিং ছিল। কোনরকম অজুহাত না দেয়ার কথা বলে দেশ বরেণ্য এ ক্রিকেট ব্যক্তিত্ব বলে ওঠেন, ‘আমি কোন যুক্তি খোঁজার চেষ্টা করছি না। আমার মনে হয় কোন অজুহাত খোঁজার চেষ্টা করা উচিৎও হবে না। নন টেস্ট প্লেয়িং কান্ট্রির কাছে যে কোনো ফরম্যাটে আপনি সিরিজ হারবেন, তখন আসলে কোন অজুহাত থাকতে পারে না।’
‘কাজেই এখানে আরব আমিরাতের কাছে টি-টোয়েন্টি সিরিজ হারের পর আমাদেরও কোন অজুহাত দেয়া উচিৎ না। খুব খারাপ খেলেছে, তাই হেরেছে। এখানে কন্ডিশনের কোন ব্যাপার নেই। এখানে র্যাংকিংয়ের ওপরের দিকের দল হলে বলতে পারতাম কন্ডিশন আমাদের ফেবার করেনি; কিন্তু আরব আমিরাতের মত দলের কাছে সিরিজ হারের পর কোন যুক্তিই আমার কাছে গ্রহণযোগ্য নয়।’ সুমনের অনুভব, শেষ ম্যাচেই বাংলাদেশ খুব বেশি খারাপ ব্যাটিং করেছে। ‘আমরা ব্যাটিংটা থার্ড ম্যাচে খুব বেশি খারাপ করে ফেলেছি। ৯৭ ফর ৮ হওয়ার মত উইকেট ছিল না। এমন আহামরি কোন বোলিংও হয়নি; কিন্তু আমি বোলিং আর ফিল্ডিং নিয়ে কনসার্ন। আমরা সব সময় সিঙ্গেলস অ্যালাও করেছি। ওরাতো বাউন্ডারি আর ওভার বাউন্ডারি মেরেছেই আমরা তাদের অকাতরে সিঙ্গেলস নিতে দিয়েছি।’
বোলারদের পারফরমেন্সে চরম হতাশ বাশারের মূল্যায়ন, ‘বোলিং ছিল প্যাথেটিক। আমরা ৩ ম্যাচেই লাইন, লেন্থ ও প্ল্যানিং আপটু দ্য মার্ক ছিল না। আমরা লেন্থ বল আর শর্ট বল আর অকেশনাল স্লোয়ার ছাড়া আর কিছু দেখি নাই। ইয়র্কার ছোড়া বা অন্য কোনো বিকল্প কিছু করতে দেখিনি।’
এআরবি/আইএইচএস/
Advertisement