খবর: টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে বাংলাদেশ আরব আমিরাতের মত অবাছাই, আইসিসির সহযোগি সদস্য দেশের কাছেও ৩ ম্যাচের সিরিজ হার। প্রিয় জাতীয় দলের শ্রী-হীন ও যাচ্ছেতাই পারফরমেন্স এবং করুন পরিণতি দেখে হতাশ পুরো দেশ।
Advertisement
সবার একটাই কথা, আরব আমিরাতের বিপক্ষেও এখন টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে সিরিজ হারে বাংলাদেশ? অবশ্যই এ অনুজ্জ্বল পারফরমেন্স অনেক বেশি হতাশার। এ পরাজয় অনেক লজ্জার।
তবে এমন নয় আগে কখনই বাংলাদেশ দুর্বল, কমজোরি ও ছোট দলের কাছে হারেনি। হেরেছে। ইতিহাস জানাচ্ছে, এর আগে নেপাল ও হংকংয়ের মত দলের কাছেও হেরেছে বাংলাদেশ। সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও নেপালকে হারাতে নাভিশ্বাস উঠেছে টাইগারদের।
কিন্তু এবার আরব আমিরাতের কাছে এক সিরিজে দুইবার হারের স্বাদ অনেক বেশি দৃষ্টিকটু। অনেক বেশি হতাশার। টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে বাংলাদেশ কখনোই ভাল দল ছিল না। তাই বলে আরব আমিরাতের কাছে এক ম্যাচে বিচ্ছিন্ন হার নয়, একেবারে সিরিজ পরাজয়? মেনে নেয়া যায় না।
Advertisement
কেন এই পরাজয়? এ সিরিজে কোথায় পারলো না বাংলাদেশ? জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক, দেশের অন্যতম দক্ষ ও অভিজ্ঞ প্রশিক্ষক খালেদ মাহমুদ সুজনের ধারনা, সব ডিপার্টমেন্টেই সময় মত জ্বলে উঠতে না পারা এবং প্রথম ম্যাচ জয়ের পর দ্বিতীয় ম্যাচে চার-চারটি পরিবর্তনই ছন্দপতন ঘটিয়েছে। দ্বিতীয় ম্যাচ হারের পর মনোবল হারিয়েই শেষ ম্যাচ ভাল খেলেনি বাংলাদেশ।
আজ বৃহস্পতিবার পড়ন্ত বিকেলে জাগো নিউজের সাথে আলাপে অনেক কথাই বলেছেন খালেদ মাহমুদ সুজন। দীর্ঘ সময় জাতীয় দলের ম্যানেজমেন্টের সাথে জড়িত ছিলেন তিনি। কখনও কোচিং করিয়েছেন। কোনো সময় টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজার, কোন সময় ক্রিকেট ম্যানেজার আবার কখনো বা অ্যাসিসটেন্ট কোচ পদেও ছিলেন। দীর্ঘ সময় জাতীয় দলের সাথে লতাপাতার মত জড়িয়ে থাকা খালেদ মাহমুদ দল নিয়ে এবং দলের লক্ষ্য-পরিকল্পনা নিয়ে নেতিবাচক কথা বলতে নারাজ।
তার ভাষায়, ‘টিমতো ভাল। নো ডাউট, এটাই এ সময়ে আমাদের অন্যতম সেরা দল। এ প্লেয়াররাও সবাই ভাল। আমরা আরব আমিরাতকে অনেক বেশি আন্ডার এস্টিমেট করেছি এবং বেশি পরিবর্তন করেছি। ১-১ হওয়ার পর শেষ ম্যাচে জিততেই হবে; সেই মানসিকতটাও হয়তো বুমেরাং হয়েছে।’ ‘আমার মনে হয়, প্রথম ম্যাচের পর এত পরিবর্তন বরা ঠিক হয়নি। তাতে দল আনসেটেল্ড হয়ে যায়। হয়েছেও। আর কোন রিজন না, দল হিসেবে আমরা খারাপ না। ভাল। তবে আমার মনে হয় প্রথম ম্যাচে জয়ের পর আরব আমিরাতকে খুব বেশি আন্ডার এস্টিমেট করা আর দ্বিতীয় ম্যাচে খুব বেশি পরিবর্তন করাটাই আমাদের জন্য কাল হয়েছে। দ্বিতীয় ম্যাচে চার-চারটি পরিবর্তন না করে যদি আমরা সিরিজ নিশ্চিতের পর দল নিয়ে পরীক্ষা-নীরিক্ষা চালাতাম, সেটা যুক্তিযুক্ত হতো। তাতে করে এমন নাকানি চুবানি খেতে হতো না।’ সুজন যোগ করেন, ‘এছাড়া পুরো সিরিজেই আমরা টাইমলি পারফরম করতে পারিনি। শেষ ম্যাচে টপ অর্ডার ফেইল করার পর মিডল অর্ডারে আমরা আর শামীম পাটোয়ারী ও রিশাদের কাছ থেকে কিছুই পাইনি। ওই জায়গায় তাদের পারফরম করা উচিৎ ছিল। সে পারফরমেন্সটা সময় মত পাইনি। কালকে সেটা হয়নি। পুরো সিরিজেই ডেথ ওভারের বোলিংটা ভাল হয়নি। ডেথ ওভারে আমাদের বোলারররা ভাল করে না, তা বলবো না। করে। তবে কালকে এবং এ সিরিজে সেভাবে পাইনি। হয়নি। টপ অর্ডারে পারভেজ ইমন আর তানজিদ তামিম যা খেলেছে সেটাকে খারাপ বলতে পারবো না। আমি ভালই বলবো। মাঝখানে দায়িত্ব নিয়ে কেউ ভাল খেলে লম্বা ইনিংস উপহার দিতে পারলে ভাল হতো।’
‘তাওহিদ হৃদয় এক ম্যাচে ভাল খেলেছে। কালকে তার আউটটা আমার ভাল লাগেনি। আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত নিয়ে কোন কথা বলা ঠিক নয়। তারপরও বলছি, আমার মনে হয় হৃদয়ের আউট নিয়ে সংশয় আছে। ডিসিশনটা ঠিক ছিল কি না, আই অ্যাম ইন ডাউট। না দিলেও পারতো। আম্পায়ারিং নিয়ে মন্তব্য না করাই ভাল।’ ‘মিডল অর্ডার ব্যাটিং ভাল হয়নি। ২টা ম্যাচে ২০০ করেছি। বাট তাতে ২ ওপেনার পারভেজ ইমন (প্রথম ম্যাচে সেঞ্চুরি) আর তানজিদ তামিম ফিফটি) ছাড়া টপ ও মিডল অর্ডারে কারো তেমন ভূমিকা নেই। কারো দীর্ঘ ইনিংস নেই। যদিও আপনি টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে খুব লম্বা চওড়া ইনিংসের আশা করতে পারেন না। তারপরও মাঝখানে বাড়তি দায়িত্ব নিয়ে কেউ একজন লম্বা ইনিংস খেলতে পারলে ভাল হতো। এর বাইরে ছেলেরা পজিটিভ ছিল। সবাই অ্যাগ্রেসিভ থেকে হাত খুলে খেলার চেষ্টা করেছে। সেটা আমার ভাল লেগেছে। বাট ক্যালকুলেটিভ রিস্ক নেয়ার ক্ষেত্রে মনে হয় ততটা দক্ষতার ছাপ রাখতে পারেনি। এই ক্যালকুলেটিভ রিস্কটা যত ভালমত নিতে পারবে, ততই মঙ্গল। সময় নিয়ে সেট ব্যাটাররা যদি আরও ক্লিক করতে পারে তাহলে লাভ হবে।’
Advertisement
এআরবি/আইএইচএস/