ময়মনসিংহে সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছে সবজি ও মাছের দাম। সবজির দাম কেজিতে প্রায় ৩০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। তবে কমেছে লেবুর দাম। এছাড়া মাছ কেজিতে দাম বেড়েছে ১০-২০ টাকা পর্যন্ত।
Advertisement
বৃহস্পতিবার (২২ মে) বিকেলে শহরের ঐতিহ্যবাহী মেছুয়া বাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা যায়।
ক্রেতা-বিক্রেতারা জানিয়েছেন, গত সপ্তাহ ভালো মানের বেগুন সর্বোচ্চ ৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে। অথচ সপ্তাহের ব্যবধানে এখন সেই বেগুন ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া শসার দামও কেজিতে ৩০ টাকা বেড়েছে। শসা গত সপ্তাহ ৩০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
গাজরের দাম কেজিতে ২০ টাকা বেড়েছে। গত সপ্তাহ গাঁজর ৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি হলেও এখন ৬০, টমেটো ৩০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন ৫০ ও কাঁচামরিচ ৪০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
Advertisement
এছাড়া চিচিঙ্গা ৫০, বরবটি ৬০, করলা ৪০, ঢেঁড়স ৪০, পটোল ৪০, লতা ৬০, জিঙা ৫০, ধুন্দল ৫০, সজনা ৯০ ও মিষ্টি লাউ ২০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। লাউ ৬০, চাল কুমড়া ৪০, ফুলকপি ৬০ টাকা পিস ও লেবু ৪ টাকা হালিতে বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে উত্তাপ ছড়াচ্ছে মাছের বাজারও। কেজিতে মাছের দাম বেড়েছে ১০-২০ টাকা পর্যন্ত। গত সপ্তাহ মৃগেল ১৫০-২০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হলেও এখন ২২০-২৭০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া রুই ও কাতল ২৩০-৩০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হলেও এখন ২৪০-৩১০ টাকা।
এছাড়া সিলভার কার্প ১৫০-২২০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন ১৬০-২৩০ ও বাউশ (ক্রস, কালো রঙের) ১৮০-৩৪০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন ১৯০-২৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। শিং ২৪০-৫৬০, পাবদা ২৯০-৩৫০, শোল ৫০০-৭৯০, ট্যাংরা ৪৭০-৭৭০, গুলশা ৩৩০-৯৪০, টাকি ৩০০-৪৮০, তেলাপিয়া ১৮০-২৪০, পাঙ্গাশ ১৬০-১৯০ ও কৈ ২২০-৩৪০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে গরু-খাসির মাংস, মুরগি ও ডিম স্থিতিশীল অবস্থায় আছে। গত সপ্তাহের মতো গরুর মাংস ৭৫০ ও খাসির মাংস ১১০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। ব্রয়লার মুরগি ১৭০, সাদা কক ২৫০, লাল কক ২৫০ টাকা কেজি, মুরগির ডিম ৪০ টাকা হালি ও হাঁসের ডিম ৭০ টাকা হালি বিক্রি হচ্ছে।
Advertisement
বাজারে কথা হয় আব্দুল হাশেম নামের এক ক্রেতার সঙ্গে। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, সবজির প্রচুর সরবরাহ রয়েছে। তবুও শুধু শুধু বাজারে সরবরাহ কমের অজুহাত দেখাচ্ছেন বিক্রেতারা। তারা নিজেদের পকেট ভারী করতে হঠাৎ করে দাম বাড়িয়ে ক্রেতাদের ঠকাচ্ছেন।
মাছ কেনার সময় দামাদামি করছিলেন ক্রেতা মোবারক মিয়া। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, তিন কেজি মৃগেল কিনতে এসেছিলাম। এসে দেখি কেজিতে ২০ টাকা বাড়িয়ে বিক্রি করা হচ্ছে। বিক্রেতাকে বললেও দাম কমাতে নারাজ। এখন কিছুটা কম দামের মধ্যে সিলভার কার্প কেনার পরিকল্পনা করছি।
সবজির দাম বাড়ানোর কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে বিক্রেতা কালাম মিয়া বলেন, কয়েকদিন থেমে থেমে বৃষ্টি হওয়ায় অনেক কৃষকের উৎপাদিত সবজি বাজারে আসেনি। জমিতে পানি জমার কারণেও বাজারে সবজির সরবরাহ কম। তবে কয়েকদিনের মধ্যে দাম কিছুটা কমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
মাছ বিক্রেতা সাইদুল ইসলাম বলেন, আমি একা দাম বাড়াইনি। অন্য বিক্রেতারা যে দামে বিক্রি করছে, আমিও একই দামে বিক্রি করছি। সরবরাহ কম থাকায় বিক্রেতারা দাম বাড়াতে বাধ্য হয়েছে।
এ বিষয়ে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের ময়মনসিংহের সহকারী পরিচালক মো. আব্দুস ছালাম বলেন, কোনো বিক্রেতা মন মতো দামে বিক্রি করতে পারবে না। দাম বেশি রাখার যুক্তিসঙ্গত কারণ থাকতে হবে। বর্তমানে বাজারে আমাদের অভিযান বন্ধ। তবে কোনো ক্রেতা ঠকেছে, এমন অভিযোগ পেলে অভিযান চালিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কামরুজ্জামান মিন্টু/জেডএইচ/জেআইএম