বিনোদন

আব্দুল আলীমের বাসায় চুরি, নিয়ে গেছে স্বাধীনতা ও একুশে পদক

আব্দুল আলীমের বাসায় চুরি, নিয়ে গেছে স্বাধীনতা ও একুশে পদক

বাংলা লোকসংগীতের কিংবদন্তি শিল্পী আব্দুল আলীম। মরমী এই শিল্পী বহু গান যেমন উপহার দিয়েছেন তেমনি অর্জন করেছেন অনেক সম্মাননা ও স্বীকৃতি। সে তালিকায় আছেন স্বাধীনতা পুরস্কার, একুশে পদকের মতো রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতিও।

Advertisement

মন খারাপের খবর হলো, এই দুটি পদকসহ গুরুত্বপূর্ণ সাতটি পুরস্কার ও স্মারক চুরি হয়ে গেছে। ৮ মে রাজধানীর খিলগাঁও এলাকার একটি বাসা থেকে এই চুরির ঘটনা ঘটে। দুই সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও এখনো এসব মূল্যবান পদক উদ্ধার হয়নি।

আব্দুল আলীমের কন্যা নুরজাহান আলীম জানান, চুরি যাওয়া জিনিসগুলোর মধ্যে রয়েছে ১৯৭৭ সালের একুশে পদক, ১৯৯৭ সালের স্বাধীনতা পুরস্কার, ১৯৬০ সালে পাকিস্তানি প্রেসিডেন্টের দেওয়া তমঘা-ই-হুসন এবং লাহোরে নিখিল পাকিস্তান সংগীত সম্মেলনে প্রাপ্ত দুটি সম্মাননা স্মারক।

সঙ্গে চুরি হয়েছে ৫০ হাজার টাকা, একটি স্বর্ণের কানের দুল ও একটি গলার হার।

Advertisement

খিলগাঁও সি ব্লকের পুনর্বাসন আবাসিক এলাকার তিনতলা বাড়ির নিচতলায় থাকেন আব্দুল আলীমের মেজো মেয়ে আসিয়া আলীম। ঘটনার দিন সন্ধ্যা ৭টার দিকে তিনি হাঁটতে বের হন, আর ফিরে এসে দেখতে পান দরজার তালা ভাঙা, ঘরে তছনছ অবস্থা।

বাড়ির ছয় ইউনিটের মধ্যে পাঁচটিতে শিল্পীর সন্তানরা থাকেন এবং একটি ইউনিট ভাড়া দেওয়া হয়েছে। নিচতলায় অপর ইউনিটে থাকেন আব্দুল আলীমের মেজো ছেলে সংগীতশিল্পী আজগর আলীম। দোতলায় থাকেন বড় ছেলে জহির আলীম।

জহির আলীম জানান, বাসায় গ্যাস-পানির বিল হিসেবে রাখা ১০ হাজার টাকা চোররা নেয়নি। তাদের টার্গেট ছিল মূল্যবান পদক ও স্বর্ণালঙ্কার। বাবার পদক উদ্ধারে তিনি স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর সঙ্গে দেখা করেন। উপদেষ্টা দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।

চুরির পেছনে পরিবারের ভেতরের কেউ জড়িত থাকতে পারে বলে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন আসিয়া আলীম। তার মতে, ‘ভেতরের কেউ তথ্য না দিলে বাইরের লোক এসবের অবস্থান জানার কথা না।’

Advertisement

তদন্তে থাকা খিলগাঁও থানার এসআই নজরুল ইসলাম বলেন, বাড়ির আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে পাঁচজনকে সন্দেহভাজন হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে। তবে তাদের মুখ স্পষ্ট নয়। ওসি দাউদ হোসেন জানান, ‘পদক চুরির ঘটনাটি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করা হচ্ছে। তিন সদস্যের একটি তদন্ত দল কাজ করছে এবং চোর শনাক্তে নিবিড়ভাবে অনুসন্ধান চালানো হচ্ছে।’

আব্দুল আলীমের পরিবার জানিয়েছে, স্বর্ণালঙ্কার কিংবা টাকাপয়সা হারানোতে তাদের কষ্ট নেই। কিন্তু জাতির শ্রদ্ধেয় এই সংগীতশিল্পীর রাষ্ট্রীয় সম্মাননাগুলো না পাওয়া গেলে সেটি হবে অপূরণীয় ক্ষতি।

এলআইএ/জিকেএস