আইন-আদালত

রিট খারিজের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে: রিটকারী আইনজীবী

রিট খারিজের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে: রিটকারী আইনজীবী

বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে শপথ না পড়ানোর নির্দেশনা চেয়ে দায়ের করা রিট সরাসরি খারিজ করে আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

Advertisement

এই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে বলে জানিয়েছেন রিটকারী আইনজীবী জহিরুল ইসলাম মুসা। বৃহস্পতিবার (২২ মে) হাইকোর্টের আদেশের পর সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।

আইনজীবী জহিরুল ইসলাম মুসা বলেন, আপিল আবেদনটি আজই করা হতে পারে অথবা আগামী রোববার করা হতে পারে। আমরা এ বিষয়ে প্রস্তুত (অ্যাডভোকেট অন রেকর্ড) রেখেছি রিট খারিজের বিরুদ্ধে আপিল আবেদন করার জন্যে।

এর আগে ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশনের গেজেট স্থগিত ও শপথ না পড়ানোর নির্দেশনা চেয়ে করা রিট সরাসরি (সামারিলি রিজেক্ট) খারিজ করে আদেশ দেন হাইকোর্ট। বিচারপতি মো. আকরাম হোসেন চৌধুরী ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

Advertisement

এরপর ইশরাকের আইনজীবী ব্যারিস্টার এএম মাহবুব উদ্দিন খোকন ও ব্যারিস্টার কায়সার কামলা সাংবাদিকদের বলেন, ইশরাককে মেয়র হিসেবে শপথ পড়াতে বাধা নেই। এছাড়া শপথ না পড়ালে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগে মামলা করা হবে।

আদালতে এদিন ইশরাকের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন ব্যারিস্টার এএম মাহবুব উদ্দিন খোকন ও ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। রিটের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মোহাম্মদ হোসেন। ইশরাক হোসেনের পক্ষে সহযোগিতা করেন ব্যারিস্টার একেএম এহসানুর রহমান, অ্যাডভোকেট গাজী তৌহিদুল ইসলাম ও মো. মাকসুদ উল্লাহসহ অন্য আইনজীবীরা। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার মো. মাহফুজুর রহমান মিলন ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল খান জিয়াউর রহমান।

এর আগে এ রিটের ওপর মঙ্গলবার দুপুর ১টায় শুনানি শুরু হয়। চলে প্রায় ২টা পর্যন্ত। এরপর মুলতবি করা হয়। বিকেল ৪টা ১০ মিনিট থেকে প্রায় সোয়া ৫টা পর্যন্ত ফের শুনানি চলে। তারপর আদেশের জন্য বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার সময় ফের শুনানি ও আদেশের জন্য নির্ধারণ করা ছিল। সেটি পিছিয়ে বৃহস্পতিবার রিটের আদেশ দেওয়া জন্য দিন ধার্য করা হয়।

আরও পড়ুন রিট খারিজ, ইশরাককে মেয়র হিসেবে শপথ পড়াতে বাধা নেই উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ ও মাহফুজ আলমের পদত্যাগ চাইলেন ইশরাক

২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্বাচন হয়। তাতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শেখ ফজলে নূর তাপস মেয়র নির্বাচিত হন। নির্বাচন কমিশন ২ ফেব্রুয়ারি ভোটের ফলাফলের গেজেট প্রকাশ করে। এরপর শপথ নিয়ে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন তাপস।

Advertisement

সেই নির্বাচনে ঢাকা দক্ষিণের মেয়র পদে তাপস পেয়েছিলেন সোয়া চার লাখ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির প্রার্থী ইশরাক পান দুই লাখ ৩৬ হাজার ভোট। নির্বাচনে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ফল বাতিল চেয়ে ২০২০ সালের ৩ মার্চ মামলা করেন ইশরাক।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত বছরের আগস্ট মাসে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশের সব সিটি করপোরেশনের মেয়রদের অপসারণ করা হয়। এরপর ঢাকা দক্ষিণ সিটির প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন অতিরিক্ত সচিব শাহজাহান মিয়া।

এর মধ্যে গত ২৭ মার্চ ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ২০২০ সালের নির্বাচনে ফজলে নূর তাপসকে বিজয়ী ঘোষণার ফল বাতিল করে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করেন ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ ও নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. নুরুল ইসলাম। আদালত ১০ দিনের মধ্যে গেজেট প্রকাশের নির্দেশ দেন। এ রায় পাওয়ার পর ২৭ এপ্রিল গেজেট প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন।

এফএইচ/বিএ/এমএস