আইন-আদালত

ভারত-মিয়ানমারের চোরাই পণ্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে নোটিশ

ভারত-মিয়ানমারের চোরাই পণ্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে নোটিশ

দেশের প্রধান পর্যটন অঞ্চলসমূহ বিশেষত কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত, বার্মিজ মার্কেট এবং সিলেটের জাফলংয়ে ভারত ও মিয়ানমার থেকে চোরাই পথে আনা ভেজাল ও অনুমোদনবিহীন পণ্যের অবাধ বিক্রির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের দুই আইনজীবী।

Advertisement

বুধবার (২১ মে) সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এ নোটিশ পাঠান ব্যারিস্টার নাজমুল হাসান রাকিব ও ব্যারিস্টার ইন্তেখাব উল আলম। নোটিশ পাঠানোর বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেছেন ব্যারিস্টার নাজমুল হাসান রাকিব।

নোটিশে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ পুলিশ, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি), জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর (ডিজি), বাংলাদেশ মান ও পরিমাপ সংস্থা (বিএসটিআই), কক্সবাজার ও সিলেটের জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে বিবাদী করা হয়েছে।

নোটিশে উল্লেখ করা হয়, চোরাই পথে আনা বিদেশি পণ্যের মধ্যে রয়েছে চকলেট, বিস্কুট, প্রসাধনী, সাবান, মসলা, ওষুধ, জামা-কাপড়, জেলি, মিষ্টান্ন জাতীয় পণ্য এবং বার্মিজ আচার। এসব পণ্য সাধারণত কোনো সরকারি অনুমোদন, স্বাস্থ্য পরীক্ষা বা মান নিয়ন্ত্রণ ছাড়াই খোলামেলাভাবে পর্যটন এলাকাসমূহে বিক্রি হচ্ছে। এতে করে শুধু দেশের রাজস্বহানি হচ্ছে না, জনস্বাস্থ্যও মারাত্মক হুমকির মুখে পড়ছে।

Advertisement

নোটিশে বলা হয়, এসব খাদ্যপণ্য ও প্রসাধনীতে অতিরিক্ত প্রিজারভেটিভ, ব্যাকটেরিয়া (যেমন সালমোনেলা ও ই-কলাই), স্যাকারিন, পারদ, সীসা এবং স্টেরয়েডের মতো ক্ষতিকর উপাদান রয়েছে যা দীর্ঘমেয়াদে ক্যানসার, চর্মরোগ ও অন্ত্রজনিত সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।

আইনজীবীরা জানান, এসব চোরাই পণ্য রাতের বেলা দেশের বিভিন্ন জেলায় ছড়িয়ে পড়ছে। তদুপরি, পণ্যগুলোতে সঠিক লেবেল, মেয়াদ, প্রস্তুতকারকের নাম এবং উৎপত্তি দেশ উল্লেখ নেই; অনেক সময় ভুয়া স্টিকার বা হোলোগ্রাম লাগিয়ে সাধারণ ক্রেতাদের বিভ্রান্ত করা হয়। এছাড়া এসব অবৈধ পণ্যের ক্রয়-বিক্রয়ের অর্থ লেনদেনও হয় হুন্ডি বা অন্যান্য অবৈধ চ্যানেলের মাধ্যমে, পাশাপাশি রাষ্ট্র আমদানি শুল্ক আদায় হতে বঞ্চিত হচ্ছে।

আইনজীবীরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অনতিবিলম্বে নিচের পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।

১. কক্সবাজার ও সিলেটের পর্যটন এলাকায় অবৈধভাবে আনা এবং বিক্রি হওয়া চোরাই ও ভেজাল পণ্যের বিপণন বন্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ;

Advertisement

২. অবৈধ দোকান উচ্ছেদ ও চোরাই ও ভেজাল পণ্য জব্দ;

৩. সংশ্লিষ্ট আমদানিকারক ও বিক্রেতাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ।

লিগ্যাল নোটিশ পাওয়ার বিষয়ে সাত কার্যদিবসের মধ্যে ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে, আইনজীবীরা প্রয়োজনীয় আইনগত পদক্ষেপ নেবেন বলেও নোটিশে উল্লেখ করা হয়।

ব্যারিস্টার নাজমুল হাসান রাকিব বলেন, এটি শুধু ভোক্তা অধিকার রক্ষার বিষয় নয়, বরং এটি বাংলাদেশের জনস্বাস্থ্য, বৈধ ব্যবসা, পর্যটন খাত এবং সরকারের রাজস্ব ব্যবস্থার ওপর সরাসরি আঘাত।

ব্যারিস্টার ইন্তেখাব উল আলম বলেন, আমারা প্রত্যাশা করি যে এ বিষয়ে রাষ্ট্রের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে এই অবৈধ ব্যবসা বন্ধে দৃশ্যমান অগ্রগতি দেখাবে।

এফএইচ/বিএ/জিকেএস