দেশজুড়ে

কর্মকর্তাদের লাগাতার কর্মবিরতিতে স্থবির বেনাপোল কাস্টম

কর্মকর্তাদের লাগাতার কর্মবিরতিতে স্থবির বেনাপোল কাস্টম

কাস্টমস কর্মকর্তাদের লাগাতার কর্মবিরতির কারণে বেনাপোলে আমদানি করা পণ্য শুল্কায়নের কাজসহ বন্দর থেকে খালাস প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে গেছে। শুল্কায়নের কাজ বন্ধ থাকায় স্থবির হয়ে পড়েছে বেনাপোল কাস্টম হাউস। কর্মবিরতিতে বন্দর থেকে পণ্য খালাস নিতে না পারায় প্রতিদিন বন্দরের ভাড়া গুনতে হচ্ছে আমদানিকারকদের। এতে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন তারা। তবে যাত্রী চলাচল ও বন্দরে ভারতীয় ট্রাক থেকে পণ্য আনলোড স্বাভাবিক আছে।

Advertisement

বন্দর সূত্র বলছে, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) জারিকৃত অধ্যাদেশ বাতিল ও প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যানকে অপসারণসহ চার দফা দাবিতে অসহযোগ আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ। বুধবার (২১ মে) দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের জাতীয় রাজস্ব ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, আগামী শনি ও রবিবার কাস্টম হাউস এবং এলসি স্টেশন বাদে ট্যাক্স, কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগের সব দপ্তরে পূর্ণাঙ্গ কর্মবিরতি চলবে। এই দুদিন কাস্টম হাউস এবং এলসি স্টেশনগুলোতে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত কর্মবিরতি চলবে। তবে, রপ্তানি ও আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবা কর্মবিরতির আওতামুক্ত থাকবে। ২৬ মে থেকে আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবা বাদে ট্যাক্স, কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগের সব দপ্তরে পূর্ণাঙ্গ কর্মবিরতি চলবে।

আজ দুপুরের পর থেকে বেনাপোল কাস্টম হাউসে শুল্কায়নের কাজ শুরু হওয়ার কথা ছিল। তবে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ কর্মসূচি ঘোষণা দেওয়ার পর থেকেই বেনাপোল কাস্টম হাউসে শুল্কায়নের সব ধরনের কাজকর্ম বন্ধ হয়ে যায়। এরআগে ১৪ মে থেকে ১৯ মে পর্যন্ত এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের ডাকা কলম বিরতির কারণে অন্যান্য শুল্ক হাউজের মতো বেনাপোল কাস্টম হাউসের কর্মকর্তারাও কলম বিরতি পালন করে আসছিলেন।

Advertisement

বুধবার সকাল থেকে দেখা গেছে, কাস্টম হাউজ খোলা আছে তবে বেশিরভাগ টেবিলই খালি। কর্মকর্তারা বাইরে ঘোরাঘুরি করছেন। কিছু কর্মকর্তা আসনে থাকলেও দরজা বন্ধ করে কোনো কাজ করছেন না। বেনাপোল-পেট্রাপোল বন্দরের মধ্যে দুপুর ২টা পর্যন্ত আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য স্বাভাবিক থাকলেও ২টার পর থেকে বন্ধ রয়েছে। তবে যাত্রী পারাপার স্বাভাবিক আছে।

বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর রহমান বলেন, কাস্টমস কর্মকর্তাদের লাগাতার কর্মবিরতির কারণে বেনাপোল কাস্টম হাউসে শুল্কায়ন কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে। শুল্কায়ন কার্যক্রম বন্ধ থাকার কারণে বন্দর থেকে পণ্য খালাস হচ্ছে না। পণ্য খালাস না হওয়ায় আমদানিকারকদের প্রতিদিন বন্দরের ভাড়া গুনতে হচ্ছে। এতে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন তারা। প্রতিদিন কোটি কোটি টাকার রাজস্ব আদায় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার।

এ বিষয়ে বেনাপোল স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের উপপরিচালক (ট্রাফিক) মামুন কবির তরফদার বলেন, কাস্টম হাউজের কর্মকর্তাদের কর্মবিরতি সত্ত্বেও বেনাপোল বন্দর দিয়ে দুপুর ২টা পর্যন্ত দুদেশের আমদানি-রপ্তানি স্বাভাবিক ছিল। তবে ২টার পর থেকে ভারতীয় বন্দর ব্যবহারকারীরা আমদানি পণ্য না নিলে রপ্তানি পণ্য নেবেন না বলে রপ্তানি বন্ধ করে দেন।

বেনাপোল কাস্টম হাউজের অতিরিক্ত কমিশনার এইচ এম শরিফুল হাসান বলেন, আমরা এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের সিদ্ধান্তের সঙ্গে সহমত পোষণ করে কর্মবিরতি পালন করছি।

Advertisement

মো. জামাল হোসেন/এসআর/জিকেএস