দাপট দেখালো মিউচুয়াল ফান্ড, বাড়লো সূচক-লেনদেন

দেশের শেয়ারবাজারে দাম বাড়ার ক্ষেত্রে দাপট দেখিয়েছে মিউচুয়াল ফান্ড। সেইসঙ্গে বেশিরভাগ ভালো কোম্পানির শেয়ার দাম বেড়েছে। এতে বুধবার (২১ মে) প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) মূল্যসূচক বেড়েছে। পাশাপাশি বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ।

এদিন শেয়ারবাজারে লেনদেনের শুরু থেকেই দাম বাড়ার ক্ষেত্রে দাপট দেখাতে থাকে বেশিরভাগ মিউচুয়াল ফান্ড। লেনদেন শুরুর অল্প সময়ের মধ্যেই দাম বাড়ার সর্বোচ্চ সীমা স্পর্শ করে একাধিক মিউচুয়াল ফান্ড। লেনদেনের শেষ পর্যন্ত বেশিরভাগ মিউচুয়াল ফান্ডের দাম বাড়ার প্রবণতা অব্যাহত থাকে।

মিউচুয়াল ফান্ড দাম বাড়ার ক্ষেত্রে দাপট দেখাতে থাকলে বেশিরভাগ ভালো কোম্পানির শেয়ার দামও বাড়তে থাকে। এতে এক পর্যায়ে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ২৫ পয়েন্ট বেড়ে যায়। তবে লেনদেনের শেষদিকে কিছু কোম্পানির শেয়ার দাম কমে যায়। এতে সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতাও কমে। তবে মিউচুয়াল ফান্ড ও বেশিরভাগ ভালো কোম্পানিগুলোর কল্যাণে দাম বাড়ার তালিকা বড় হয়েই দিনের লেনদেন শেষ হয়।

দিনের লেনদেন শেষে সব খাত মিলে ডিএসইতে ২২৭টি কোম্পানির শেয়ার দাম বাড়ার তালিকায় নাম লেখাতে পেরেছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১০৫টির। আর ৬৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। ভালো কোম্পানি বা ১০ শতাংশ অথবা তার বেশি লভ্যাংশ দেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ১৪২টির শেয়ার দাম বেড়েছে। বিপরীতে ৫৬টির দাম কমেছে এবং ২৩টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

মাঝারি মানের বা ১০ শতাংশের কম লভ্যাংশ দেওয়া ৪৪টি কোম্পানির শেয়ার দাম বাড়ার বিপরীতে ২২টির দাম কমেছে এবং ১৬টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ না দেওয়ার কারণে পচা ‘জেড’ গ্রুপে স্থান হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে ৪১টির শেয়ার দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ২৭টির এবং ২৮টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। আর তালিকাভুক্ত ৩৬টি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ৩৫টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে ১টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

দাম বাড়ার তালিকায় বেশি প্রতিষ্ঠান থাকায় দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৬ পয়েন্ট বেড়ে ৪ হাজার ৮০১ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ সূচক আগের দিনের তুলনায় ২ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৫০ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০ কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৭৮১ পয়েন্টে উঠে এসেছে।

সবকটি মূল্যসূচক বাড়ার পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও বেড়েছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৩২৬ কোটি ২৯ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ২৯৭ কোটি ৭১ লাখ টাকা। সে হিসাবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন বেড়েছে ২৮ কোটি ৫৮ লাখ টাকা। এর মাধ্যমে ছয় কার্যদিবস পর ডিএসইতে ৩০০ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হলো।

এ লেনদেনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে ব্র্যাক ব্যাংকের শেয়ার। টাকার অঙ্কে কোম্পানিটির ১৮ কোটি ৭৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ওরিয়ন ইনফিউশনের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৭ কোটি ৯২ লাখ টাকার। ১২ কোটি ৯২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে বিচ হ্যাচারি।

এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন, সিটি ব্যাংক, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস, শাহিনপুকুর সিরামিক, মিডল্যান্ড ব্যাংক, বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার এবং এনআরবি ব্যাংক।

অন্য শেয়ারবাজার সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ২৯ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৯৪ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১১৩টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৫৩টির এবং ২৮টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ৭ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৬ কোটি ৬৫ লাখ টাকা।

এমএএস/এমএএইচ/এমএস