বর্তমান নির্বাচন কমিশনের ওপর আস্থা রাখা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।
Advertisement
মঙ্গলবার (২০ মে) রাতে রাজধানীর বাংলামোটরে দলটির কার্যালয়ে আয়োজিত জরুরি সংবাদ সম্মেলনে দলের পক্ষ থেকে এ কথা জানান দলের সদস্যসচিব আখতার হোসেন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, বর্তমান নির্বাচন কমিশন অবৈধ ও ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ সরকার প্রণীত ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন ২০২২’ অনুযায়ী গঠিত। ফ্যাসিবাদ বিরোধী সব রাজনৈতিক দল ও পক্ষ যা সেসময় প্রত্যাখ্যান করেছিল। এরপরও আমরা বিস্ময়ের সঙ্গে লক্ষ্য করেছি যে, নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবনার আগেই নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে। ফলে বিদ্যমান নির্বাচন কমিশনের কার্যক্রমে সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবনার প্রতিফলন ঘটবে না বলেই প্রতীয়মান হচ্ছে।
আখতার হোসেন বলেন, পলাতক ও মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের নির্বাচনে অংশগ্রহণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ সংক্রান্ত সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব নাকচ করেছে বিদ্যমান নির্বাচন কমিশন। এর ফলে এই কমিশনের ওপর আস্থা রাখা সম্ভব নয় বলেই আমরা মনে করি।
Advertisement
আরও পড়ুন
নগর ভবনে ব্লকেড কর্মসূচি ইশরাক সমর্থকদের, নাগরিক ভোগান্তি চরমে পুলিশের চাকরি ছাড়লেন ৫ এএসপিএনসিপির সদস্যসচিব বলেন, আমরা অত্যন্ত উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি যে, ২০২০ সালে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের অবৈধ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বর্তমানে জটিল রাজনৈতিক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। উদ্ভূত পরিস্থিতির জন্য নির্বাচন কমিশনের পক্ষপাতদুষ্ট ভূমিকাই দায়ী বলে আমরা মনে করি। ‘ইশরাক হোসেন বনাম শেখ ফজলে নূর তাপস গং’ মামলার বিবাদী হওয়া সত্ত্বেও নির্বাচন কমিশন নজিরবিহীনভাবে মামলায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেনি। যার ফলে একতরফা রায় দেওয়া হয়েছে। এমনকি রায়ের পর তারা উচ্চ আদালতে প্রতিকার প্রার্থনা না করে মামলার বাদীকে বিশেষ সুবিধা দিয়েছে বলে প্রতীয়মান হয়। এর আগেও আমরা দেখেছি, নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষ আচরণ বজায় রাখার পরিবর্তে এমন সব বক্তব্য দিয়েছে- যার সঙ্গে একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দলের অবস্থানের মিল রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এ মামলার রায় ঘোষণার আগেই সংশ্লিষ্ট আইনের অধীন গত ১৯ আগস্ট ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে প্রশাসক নিয়োগ করা হয়। ফলে পুরো মামলাটিই অকার্যকর হয়ে গেছে। রায় ঘোষণার পর গেজেট প্রকাশের বিষয়ে নির্বাচন কমিশন আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত চাইলেও, মতামত দেওয়ার আগেই তড়িঘড়ি করে রাতের আঁধারে গেজেট প্রকাশ করা হয়। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের সার্বিক ভূমিকা স্পষ্টতই পক্ষপাতমূলক।
আখতার হোসেন বলেন, একই সঙ্গে আমরা লক্ষ্য করছি যে, জনপ্রতিনিধি না থাকায় নাগরিক সেবা প্রদান মারাত্মক ব্যাহত হচ্ছে এবং সামাজিক সুরক্ষা উদ্যোগগুলো বাস্তবায়নে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়েছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ‘ইশরাক হোসেন বনাম শেখ ফজলে নূর তাপস গং’ মামলা নজির হিসেবে নিয়ে সারা দেশে অবৈধ নির্বাচনের প্রার্থীরা আদালতের শরণাপন্ন হয়ে এক জটিল ও সংকটময় পরিস্থিতি তৈরি করছেন। এ সংকট নিরসনে এবং জনদুর্ভোগ লাঘবে স্থানীয় সরকার নির্বাচনই একমাত্র সমাধান। কিন্তু ফ্যাসিবাদী আইনে গঠিত বর্তমান পক্ষপাতদুষ্ট নির্বাচন কমিশন এই নির্বাচন আয়োজনে সক্ষম নয় বলেই প্রতীয়মান হচ্ছে।
Advertisement
এনএস/কেএসআর/এমএস