মাইক্রোসফট স্বীকার করেছে, গাজায় চলমান যুদ্ধের সময় ইসরায়েলি সেনাবাহিনীকে উন্নত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) এবং ক্লাউড কম্পিউটিং সেবা দিয়েছে তারা। জিম্মি উদ্ধার এবং গোয়েন্দা তথ্য বিশ্লেষণে এই সহায়তা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
Advertisement
তবে মাইক্রোসফট দাবি করেছে, তাদের এজিওর ক্লাউড প্ল্যাটফর্ম বা এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে গাজায় সরাসরি হামলা বা সাধারণ নাগরিকদের ক্ষতি করার কোনো প্রমাণ তারা পায়নি।
আরও পড়ুন>>
হত্যাকারীদের এআই সরবরাহের প্রতিবাদ: মাইক্রোসফটের ২ প্রকৌশলী বরখাস্ত গাজার ৫০ শতাংশ ইসরায়েলের দখলে, নিজভূমে পরবাসী ফিলিস্তিনিরা ‘পাহাড় বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার হচ্ছে শিশুদের ওপর’মাইক্রোসফটের করপোরেট ওয়েবসাইটে একটি স্বাক্ষরবিহীন ব্লগ পোস্টে এই তথ্য জানানো হয়। এটিই সম্ভবত প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে প্রথমবারের মতো প্রকাশ্যে স্বীকারোক্তি যে, গাজা যুদ্ধের ক্ষেত্রে তারা ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করেছে।
Advertisement
এই স্বীকারোক্তির প্রায় তিন মাস আগে বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি)-এর এক অনুসন্ধান প্রতিবেদনে উঠে আসে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী বেসরকারি এআই প্রযুক্তির ব্যবহার ২০০ গুণ বাড়িয়েছে এবং এতে মাইক্রোসফটের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল।
গোয়েন্দা নজরদারির মাধ্যমে সংগৃহীত তথ্য অনুবাদ, বিশ্লেষণ ও যাচাই করার কাজে এজিওর ব্যবহার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে এপি। এসব তথ্য পরবর্তীতে ইসরায়েলের নিজস্ব এআই-চালিত টার্গেটিং সিস্টেমের সঙ্গে মিলিয়ে দেখানো হয়েছে।
মানবাধিকার সংস্থাগুলোর আশঙ্কা, এ ধরনের এআই প্রযুক্তি ভুল সিদ্ধান্ত গ্রহণের ঝুঁকি তৈরি করে এবং এতে নিরীহ মানুষের মৃত্যু ঘটছে।
মাইক্রোসফট জানিয়েছে, কর্মীদের উদ্বেগ এবং সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন সামনে আসায় তারা একটি অভ্যন্তরীণ পর্যালোচনা শুরু করেছে এবং একটি বাইরের সংস্থাকে অতিরিক্ত তথ্য অনুসন্ধানের জন্য নিয়োগ দিয়েছে। তবে তারা সেই সংস্থার নাম বা তাদের প্রতিবেদন প্রকাশ করেনি।
Advertisement
বিশেষ করে, হামাসের হাতে অপহৃত আড়াই শতাধিক ব্যক্তিকে উদ্ধারের চেষ্টায় ‘বাণিজ্যিক চুক্তির সীমার বাইরে’ কিছু প্রযুক্তি এবং ‘জরুরি সহায়তা’ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে মাইক্রোসফট।
তবে প্রতিষ্ঠানটি এখন পর্যন্ত স্পষ্ট করেনি, তাদের প্রযুক্তি ইসরায়েলি সেনাবাহিনী কীভাবে ব্যবহার করেছে, এবং মাইক্রোসফট কিংবা তাদের নিযুক্ত বাইরের তদন্তকারী সংস্থা আদৌ ইসরায়েলি বাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ করেছে কিনা।
ইসরায়েল এখন পর্যন্ত গাজা ও লেবাননে পরিচালিত অভিযানে নারী ও শিশুসহ পঞ্চাশ হাজারের বেশি মানুষকে হত্যা করেছে। শুধু ২০২৪ সালের জুনে নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরে এক জিম্মি উদ্ধার অভিযানে নিহত হন কমপক্ষে ২৭৪ ফিলিস্তিনি।
সূত্র: এপিকেএএ/