তিন বছরেরও বেশি সময় পর তুরস্কে অনুষ্ঠিত রাশিয়া-ইউক্রেনের সরাসরি শান্তি আলোচনা দুই ঘণ্টারও কম সময়ে শেষ হয়েছে। আলোচনায় কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতির লক্ষণ দেখা যায়নি।
Advertisement
ইউক্রেনীয় এক সূত্র দাবি করেছে, যুদ্ধবিরতির জন্য রাশিয়ার দাবিগুলো বাস্তবতাবিচ্ছিন্ন ও অগ্রহণযোগ্য। এদিকে, রাশিয়ার পক্ষ থেকে এ বিষয়ে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি।
তুরস্কের এক রাজপ্রাসাদে শুক্রবার (১৬ মে) এই মুখোমুখি বৈঠক হয়, যা ২০২২ সালের মার্চে রাশিয়ার ইউক্রেনে আগ্রাসনের পর প্রথম সরাসরি বৈঠক। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এই আলোচনার প্রস্তাব দিলেও নিজে উপস্থিত না হয়ে মধ্যম পর্যায়ের প্রতিনিধি পাঠান। ইউক্রেনও সমমানের প্রতিনিধির মাধ্যমে আলোচনায় অংশ নেয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একটি ইউক্রেনীয় সূত্র ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম রয়টার্সকে জানায়, রাশিয়া ইউক্রেনকে তার নিজস্ব ভূখণ্ড থেকে পিছু হটার দাবি জানিয়েছে, যাতে একটি যুদ্ধবিরতি কার্যকর করা যায়। এটি এক কথায় ‘নন-স্টার্টার’ ও ‘অসংবেদনশীল’ শর্ত।
Advertisement
২০২২ সালের ইস্তাম্বুল বৈঠকের সময় রাশিয়া ইউক্রেনের সেনাবাহিনী হ্রাস, নিরপেক্ষ রাষ্ট্রে পরিণত হওয়া ও ন্যাটোতে যোগ না দেওয়ার শর্ত দিয়েছিল। বর্তমান আলোচনায় রাশিয়া ওই আগের অবস্থানেই ফিরে গেছে, যা ইউক্রেন প্রত্যাখ্যান করেছে।
জেলেনস্কির প্রধান সহকারী আন্দ্রি ইয়ারমাক বলেন, রাশিয়া এই নতুন আলোচনাকে ২০২২ সালের ব্যর্থ আলোচনার ধারাবাহিকতা বানাতে চাচ্ছে। তাদের এই প্রচেষ্টা কখনোই সফল হবে না।
শুক্রবারের (১৬ মে) আলোচনার আগে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানান, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে সরাসরি বৈঠক না হলে এই শান্তি প্রক্রিয়ায় কোনো অগ্রগতি হবে না। ফলে আলোচনা ঘিরে সামান্য যে আশাও ছিল, তা অনেকটাই নস্যাৎ হয়ে যায়।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, আমাদের প্রথম ও প্রধান লক্ষ্য একটি পূর্ণাঙ্গ, নিঃশর্ত ও কার্যকর যুদ্ধবিরতি। যদি রাশিয়া তাতে রাজি না হয়, তাহলে তাদের জ্বালানি ও ব্যাংক খাতের ওপর কঠোর নতুন নিষেধাজ্ঞা দেওয়া উচিত।
Advertisement
এদিকে, তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান বলেন, আমাদের সামনে দুটি পথ খোল। একটি শান্তির দিকে আর অন্যটি আরও ধ্বংস ও মৃত্যুর দিকে। কোন পথ বেছে নেবে, তা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলোই নির্ধারণ করবে।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেন, আমি চাই না আমার পূর্বাভাস সঠিক হোক। আমি চাই আগামীকালের সংবাদে বলা হোক, যুদ্ধবিরতি হয়েছে। তবে বাস্তবতা হলো, আমি অগ্রগতি আশা করছি না।
রাশিয়ার সেনাবাহিনী বর্তমানে ইউক্রেনের প্রায় এক-পঞ্চমাংশ এলাকা নিয়ন্ত্রণ করছে। ইউক্রেন এই আগ্রাসনের বিরুদ্ধে শক্ত প্রতিরোধ চালিয়ে যাচ্ছে এবং বিশ্বশক্তিদের কাছ থেকে নিরাপত্তা নিশ্চয়তা চাচ্ছে। তবে আলোচনার ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত। পরবর্তী বৈঠক কবে হবে, তা নিয়ে এখনো কোনো ঘোষণা আসেনি।
সূত্র: রয়টার্স
এসএএইচ