ধর্ম

হজের সফর কাটুক ইবাদত ও আল্লাহর স্মরণে

হজের সফর কাটুক ইবাদত ও আল্লাহর স্মরণে

মওলবি আশরাফ

Advertisement

হজ ইসলামের পঞ্চস্তম্ভের একটি। কোনো ব্যক্তি যদি কাবা ঘরে যাওয়া ও ফিরে আসা পরিমাণ অর্থের মালিক হয়, এছাড়াও তার মৌলিক খরচ ও পরিবারের ভরণপোষণের খরচ থাকে, তবে তার উপর হজ ফরজ। আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেন, ‘তোমরা হজ ও ওমরাহ আল্লাহর জন্য পালন কর।’ (সুরা বাকারা: ১৯৬)আরেক আয়াতে আল্লাহ বলেন, মানুষের মধ্যে যার সেখানে যাওয়ার সামর্থ্য আছে, আল্লাহর উদ্দেশ্যে ঐ ঘরের হজ করা তার জন্য অবশ্য কর্তব্য। (সুরা আলে ইমরান: ৯৭)

হজে যাওয়ার সুযোগ লাভ করা আল্লাহর অনেক বড় নেয়ামত। সবাই হজে যাওয়ার সুযোগ পায় না। তাই যারা হজে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছেন, বেশি বেশি আল্লাহর শোকর আদায় করুন এবং নিজেকে আল্লাহমুখী রাখুন। হজের সফরে নিজেকে দুনিয়াবি কাজকর্ম, চিন্তা-ভাবনা থেকে সম্পূর্ণ অবসর দিন। আল্লাহর ধ্যান ও তার ইবাদতের মগ্নতায় থাকুন।

যেভাবে হজের সফরে নিজেকে ইবাদতের মগ্নতায় রাখবেন: ১. ঝগড়া-বিবাদ এড়িয়ে চলুন

হজের সফরে কোনোভাবেই ঝগড়ায় জড়াবেন না। ঝগড়া-বিবাদ সর্বোতভাবে পরিত্যাগ করুন। কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেছেন, যে নিজের ওপর হজ আরোপ করে নিল, তার জন্য হজে অশ্লীল ও পাপ কাজ এবং ঝগড়া-বিবাদ বৈধ নয়। (সুরা বাকারা: ১৯৭)

Advertisement

নিজেকে নিজে প্রশ্ন করবেন, আমি কে? আমি কোথায়? আমি কী? আর তিনটি কাজ করবেন, শোকর বা কৃতজ্ঞতা ও সবর বা ধৈর্য ও জিম্মাদারের আনুগত্য। সার্বিকভাবে যা ভালো মনে হয় জিম্মাদার তা-ই করে থাকেন। আপনি যদি নিজেকে জিম্মাদারের অধীন বানিয়ে ফেলেন, আপনার যদি নিজস্ব কোনো সিদ্ধান্ত না থাকে, তাহলে ঝগড়ার বিষয় কমে যাবে।

২. একা একা থাকুন

জামাতের নামাজে যেমন ডানে-বায়ে মানুষ থাকে, কিন্তু কারও সাথে কারও সম্পর্ক নেই, হজেও তেমন হতে হবে। হজে কোনো সম্মিলিত আমল নেই, প্রত্যেকটা কাজ নিজের। তাই যতটুকু নিরিবিলি জায়গা পাবেন এর মধ্যেই নিঃসঙ্গ হয়ে যেতে হবে। অপ্রয়োজনীয় কথা, বিতর্ক, বচসা এড়িয়ে একেবারে কবরের বাসিন্দা হয়ে যান।

তবে নিজের দল থেকে বিচ্ছিন্ন হবেন না। নিজের অসুস্থতা ও ওষুধের ব্যাপারে সতর্ক থাকুন। অতিরিক্ত তওয়াফ করে অসুস্থ হয়ে পড়বেন না। ঠাণ্ডা পানি থেকে দূরে থাকুন।

৩. নিজের ভাষায় দোয়া করুন

হাজি সাহেবগণ দোয়া নিয়ে খুব পেরেশানিতে থাকেন। অথচ হাতে গোনা দুই-চারটা দোয়া ছাড়া হজের কোনো নির্দিষ্ট দোয়া নেই। নির্দিষ্ট কোনো দোয়া না পড়ার কারণে আপনার হজের কোনো সমস্যা হবে না। তাই আরবি ভাষা না জানলে নিজের ভাষায় দোয়া করুন। নিজের ভাষায় অন্তর খুলে আল্লাহর সাথে কথা বলুন।

Advertisement

আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন—হাজরে আসওয়াদ আল্লাহর ডান হাত। যে ব্যক্তি হজরে আসওয়াদে চুমু খায়, সে যেন আল্লাহর সাথে মুসাফাহা করল। তাই এ সময়গুলোতে আল্লাহর নৈকট্য অনুভব করুন এবং বেশি বেশি দোয়া করুন।

৪. তালবিয়া পাঠ করুন

বেশি বেশি তালবিয়া পাঠ করুন। প্রত্যেক অবস্থা ও অবস্থানের পরিবর্তনে তালবিয়া পাঠ করুন। তালবিয়ার অর্থ মনে রাখুন এবং তালবিয়া পাঠের সময় বুঝে বুঝে শব্দগুলো বলুন। তালবিয়ার অর্থ ও মর্ম অন্তরে জাগরুক রেখে তালবিয়া পাঠ করুন।

ওএফএফ/এমএস