ভ্রমণ

ভ্রমণ যেভাবে পরিবারের বন্ধন মজবুত করে

ভ্রমণ যেভাবে পরিবারের বন্ধন মজবুত করে

পরিবারগুলো হয়ে যাচ্ছে যান্ত্রিক। ব্যস্ততা, টানাপোড়েন আর ক্লান্তির কারণে পরিবারের সদস্যরা এক ছাদের নিচে থেকেও হয়ে যান দূরের মানুষ। তাই এ দূরত্ব কমানোর সহজ, আনন্দময় এবং কার্যকর উপায় হতে পারে ভ্রমণ। একসঙ্গে ঘুরতে যাওয়ার অভিজ্ঞতা শুধু মনের খোরাকই জোগায় না বরং সম্পর্কের ভিতটাকে করে আরও দৃঢ়।

Advertisement

দ্রুতগতির জীবনে বাবা-মা, ভাই-বোন, এমনকি স্বামী-স্ত্রীর মাঝেও সময়ের দেওয়াল তৈরি হয়। অফিস, পড়াশোনা, মোবাইল কিংবা সোশ্যাল মিডিয়া এমনভাবে গ্রাস করেছে, যেখানে একই বাড়িতে থেকেও কেউ কারও খবর রাখেন না। এ দেওয়াল ভাঙার চমৎকার উপায় হলো একসঙ্গে কোথাও ঘুরতে যাওয়া। ভ্রমণের সময় পরিবারের সদস্যরা একে অন্যের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সময় কাটাতে পারেন।

ঘুরতে গেলে পরিবারের সদস্যরা যে অভিজ্ঞতা সঞ্চার করেন, যেমন- একটা নতুন শহরের রাস্তা, নতুন কোনো খাবারের স্বাদ অথবা প্রকৃতির অদেখা রূপ—অভিজ্ঞতাগুলো পরবর্তীতে হয়ে ওঠে পরিবারের গল্প। অবসর সময় পেলেই পরিবারের সদস্যরা এ গল্প করেন, সেই মুহূর্ত নিয়ে হাসাহাসি করেন। পুরোনো ছবি দেখেন, ভিডিও দেখেন। স্মৃতিগুলো পরিবারের বন্ধনকে শক্তিশালী করে তোলে। শিশুদের মানসিক বিকাশেও এ ধরনের স্মৃতি দারুণ ভূমিকা রাখে। সদস্যদের মাঝে সৃষ্টি হয় নতুন এক বন্ধন। যেগুলো স্মৃতির অ্যালবামে সোনালি পাতায় জড়িয়ে থাকে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, পরিবারে মানসিক দূরত্ব কমানোর অন্যতম কার্যকর উপায় হলো একসঙ্গে সময় কাটানো। সময়টা যদি হয় ভ্রমণের মতো আনন্দময় অভিজ্ঞতা, তাহলে তার ইতিবাচক প্রভাব দ্বিগুণ হয়। ঘুরতে যাওয়ার সময় দৈনন্দিন জীবনের চাপ থেকে মুক্ত হয়ে পরিবার একে অন্যের প্রতি মনোযোগী হয়। এতে ভুল বোঝাবুঝির অবসান ঘটে। বাড়ে বোঝাপড়া, ভালোবাসা আর সহানুভূতি।

Advertisement

ভ্রমণ যান্ত্রিক জীবনের গণ্ডি ভেঙে কিছুটা মুক্ত হাওয়ায় নিঃশ্বাস নেওয়ার সুযোগ করে দেয়। প্রকৃতির মাঝে গিয়ে নতুন করে আবিষ্কার করার সুযোগ সৃষ্টি হয়। এতে পরিবারের সদস্যদের মাঝে তৈরি হয় নতুন উপলব্ধি। তাই পরিবার নিয়ে কোনো এক ছুটিতে বেরিয়ে পড়ুন ভ্রমণে। এর জন্য বড় আয়োজনের প্রয়োজন নেই। হতে পারে কাছের কোনো পার্ক, নদীর ধারে কিংবা গ্রামের বাড়ি। প্রয়োজন শুধু একসঙ্গে সময় কাটানোর ইচ্ছা।

আরও পড়ুন গরমে ভ্রমণের প্রস্তুতি ও সতর্কতা কেমন হবে?  রবীন্দ্র কাছারিবাড়িতে যা দেখবেন  চলুন যেনে নেওয়া যাক, ভ্রমণ কীভাবে পারিবারিক বন্ধন মজবুত করে—

একসঙ্গে সময় কাটানোর সুযোগদৈনন্দিন জীবনের ব্যস্ততায় পরিবারের সদস্যরা একে অন্যের সঙ্গে নিরবচ্ছিন্ন সময় কাটানোর সুযোগ পান না। ভ্রমণ সেই সুযোগ তৈরি করে দেয়।

নতুন অভিজ্ঞতা নতুন গল্পঅজানা জায়গায় ঘোরাঘুরি, নতুন খাবারের স্বাদ কিংবা ভিন্ন সংস্কৃতি অবলোকনের মধ্য দিয়ে পরিবারের মধ্যে নতুন গল্প তৈরি হয়।

ভুল বোঝাবুঝি ও দূরত্ব কমেপরিবারের সদস্যরা যখন একসঙ্গে ভ্রমণ করেন; তখন ছোটখাটো ভুল বোঝাবুঝি দূর হয়। মনের ভেতরের অনুযোগগুলো সহজেই ঝরে যায়। ফলে পরস্পরের মানসিক দূরত্ব কমে আসে।

Advertisement

আনন্দময় স্মৃতির সঞ্চারভ্রমণ শেষে পরিবারে আনন্দময় স্মৃতির সঞ্চার হয়। যেমন- ভ্রমণকালীন ছবি, ভিডিও আর গল্প জমা হয়। যে স্মৃতিগুলো পরিবারকে আরও শক্তভাবে বেঁধে রাখে।

শিশুর মানসিক বিকাশভ্রমণের অভিজ্ঞতা শিশুদের ওপর সবচেয়ে বেশি মানসিক প্রভাব ফেলে। শুধু তাই নয়, শিশুর মানসিক বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তারা পরিবার থেকে ভালোবাসা, ঐক্য আর সহযোগিতা শিক্ষা পায়।

এসইউ/জিকেএস