অর্থনীতি

শেয়ারবাজারে বিমা-মিউচুয়াল ফান্ডের দাপট

শেয়ারবাজারে বিমা-মিউচুয়াল ফান্ডের দাপট

দেশের শেয়ারবাজারে দাম বাড়ার ক্ষেত্রে দাপট দেখিয়েছে মিউচুয়াল ফান্ড ও বিমা কোম্পানিগুলো। প্রায় সবকটি মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট ও বিমা কোম্পানির শেয়ার দাম বাড়ায় সোমবার (১২ মে) ডিএসইতে প্রধান মূল্যসূচক বেড়েছে। তবে বড় মূলধনের বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম কমায় বাছাই করা মূল্যসূচক কমেছে।

Advertisement

অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ মিউচুয়াল ফান্ড ও বিমা কোম্পানির শেয়ার দাম বেড়েছে। ফলে এ বাজারেও দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে বেশি প্রতিষ্ঠান। ফলে বেড়েছে মূল্যসূচক। তবে ডিএসই ও সিএসই দুই বাজারেই কমেছে লেনদেনের পরিমাণ।

এদিন ডিএসইতে লেনদেন শুরু হয় অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেনের শুরুতেই সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার দেখা মেলে। তবে লেনদেনের আধা ঘণ্টার মধ্যে দাম কমার তালিকায় চলে আসে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান। এতে এক পর্যায়ে প্রধান মূল্যসূচক ঋণাত্মকও হয়ে পড়ে।

এমন পরিস্থিতিতে প্রথম ঘণ্টার লেনদেন শেষ হতেই দাম বাড়ার ক্ষেত্রে দাপট দেখাতে থাকে একের পর এক মিউচুয়াল ফান্ড ও বিমা কোম্পানি। লেনদেনের সময় গড়ানোর সঙ্গে মিউচুয়াল ফান্ড ও বিমা কোম্পানির শেয়ার দাম বাড়ার প্রবণতাও বাড়তে থাকে। ফলে প্রায় সবকটি মিউচুয়াল ফান্ড ও বিমা কোম্পানির শেয়ার দাম বেড়েই দিনের লেনদেন শেষ হয়।

Advertisement

দিনের লেনদেন শেষে সব খাত মিলে ডিএসইতে ১৮৯টি কোম্পানির শেয়ার দাম বাড়ার তালিকায় নাম লেখাতে পেরেছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৬০টির। আর ৪৬টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। ভালো কোম্পানি বা ১০ শতাংশ অথবা তার বেশি লভ্যাংশ দেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ১২২টির শেয়ার দাম বেড়েছে এবং ৮০টির দাম কমেছে। আর ১৪টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

মাঝারি মানের বা ১০ শতাংশের কম লভ্যাংশ দেওয়া ২৬টি কোম্পানির শেয়ার দাম বাড়ার বিপরীতে ৪৮টির দাম কমেছে এবং ৯টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ না দেওয়ার কারণে পঁচা ‘জেড’ গ্রুপে স্থান হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে ৪১টির শেয়ার দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৩২টির এবং ২৩টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

আর তালিকাভুক্ত ৩৬টি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ৩০টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে ৩টির দাম কমেছে এবং ৩টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। বিমা খাতের ৫৮টি কোম্পানির মধ্যে ৫০টির শেয়ার দাম বেড়েছে এবং ৮টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

অধিকাংশ মিউচুয়াল ফান্ড ও বিমা কোম্পানির শেয়ার দাম বাড়ার দিনে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ১৯ পয়েন্ট বেড়ে ৪ হাজার ৯২১ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৭৫ পয়েন্টে অবস্থান করছে।

Advertisement

আর বাছাই করা ভালো ৩০ কোম্পানির মধ্যে বেশিরভাগের শেয়ার দাম কমেছে। বাছাই করা ভালো ৩০ কোম্পানির মধ্যে ১১টির শেয়ার দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৫টির। ফলে এই কোম্পানিগুলো নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৪ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৮১৫ পয়েন্টে নেমে গেছে।

এদিকে প্রধান মূল্যসূচক বাড়লেও ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ কমেছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৩৬৪ কোটি ৯ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৩৬৬ কোটি ৬ লাখ টাকা। সে হিসাবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন কমেছে ১ কোটি ৯৭ লাখ টাকা।

এ লেনদেনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে এনআরবি ব্যাংকের শেয়ার। টাকার অঙ্কে কোম্পানিটির ১৮ কোটি ৯৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা বিচ হ্যাচারির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৬ কোটি টাকার। ১৫ কোটি ৫০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার।

এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- এবি ব্যাংক ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড, মিডল্যান্ড ব্যাংক, কেডিএস অ্যাক্সেসরিজ, সিটি ব্যাংক, বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন, খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ এবং লাভেলো আইসক্রিম।

অন্য শেয়ারবাজার সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ১৯ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৮২ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৯১টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৭১টির এবং ২০টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ৭ কোটি ২৯ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ২১ কোটি ৬১ লাখ টাকা।

এমএএস/এমআইএইচএস/এমএস